
ফিরে আসুন চট্টগ্রামের প্রথম ২৪ ঘন্টার অনলাইন পত্রিকা “নিউজচিটাগাং২৪” এর অকৃত্রিম বন্ধু, আমাদের প্রিয় তৌফিক ভাই। আপনার সুস্থতা কামনায় মহান আল্লাহর দরবারে আমাদের বিশেষ প্রর্থনা হে আল্লাহ আমারে তৌফিক ভাইকে সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিন।
ঢাকার এপেলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুতর অসুস্থ হোসাইন তৌফিক ইফতেখার এর জন্য শুভকামা ও দোয়া কামনা জানিয়ে লেখাগুলো ফেসবুক থেকে নেয়া
এতো কষ্ট কেন ভালোবাসায়…
———————————————
দারুন আনন্দের উত্তেজনা অথবা নিদারুন শোকের বেদনা দুটোই আমি আজ এড়িয়ে চলি। ভয় পাই হৃদয়ের দূর্বলতায়। তবু আনন্দের চাইতেও বেশি বেদনার রাশি রাশি কালো ধোঁয়া যেন আমার চোখ খুলতে দেয়না তীব্র যন্ত্রণায়। কারণ মনের মুকুরে অহরহ ঘাই মারতে থাকে তাড়াতাড়ি না ফেরার দেশে পাড়ি দেয়া সহকর্মী বন্ধু পুলক সরকারের মুখ, পৃথিবীতে রয়ে যাওয়া তার অসহায় মেয়েটির কন্ঠস্বরসহ আরো কতো শত বিদায়ের বেদনার স্মৃতি। তাই ফেসবুকজাতীয় সামাজিক জানালাগুলো আমি ইদানিং খোলা রাখলেও জানালার শিক ধরে আনমনে- একমনে বাইরে তাকিয়ে থাকার মতো দীর্ঘসময় চষে বেড়ানোর সাহস বা আগ্রহ কোনটাই আর টের পাচ্ছিনা। শুধু আলো বাতাসের জন্য যেমন জানালাগুলো খোলা রাখতে হয় তেমনি ফেসবুক বা ইত্যাকার জানালাগুলোও আমার খোলা থাকে ঠিকই। আমি জানালার এপাড়ের আবদ্ধতায় ঘুরপাক খেতে খেতে শুধু ক্বচিত চোখ ফেলি বাইরের ক্লোরোফিলে। অন্যথা নয়। খুললেই হা- হুতাশ- মেললেই দীর্ঘশ্বাস- দাঁড়ালেই হঠাৎ আঘাত। এ যেন আমার নিয়তি । চোখ রাখলেই কেন এতো শোকের মাতম- করুণ বারতা ? আর কিছু অকারন আস্ফালন, যা আমার ত্রি-সীমার বাইরে। আজও তাই হলো, টানা কিছু সময় ফেসবুকে না আসার পর রাতে আসতে না আসতেই চোখে পড়লো সুহৃদ সহকর্মী মহসীন কাজীর স্ট্যাটাসটি। টিভিতে চলছিল আর্জেন্টিনা- ক্রোয়েশিয়ার খেলা ওই সময় প্রিয় সুহৃদ হোসাইন তৌফিক ইফতেখারের অসুস্থতার সংবাদটি আশার বাণী সমেত মহসীন জানালেও খেলায় আর চোখ যাচ্ছিলোনা- চোখ যাচ্ছিল এবারই প্রথম আর্জেন্টিনার চুড়ান্ত সমর্থক হয়ে ওঠা প্রিয় দলের পরাজয়ে ভারাক্রান্ত আমার মেয়েটার মুখের দিকে। আর মন ছুটছিলো তৌফিকের সাথে আমার অসংখ্য টুকরো টুকরো হার্দিক- অতৃত্রিম আন্তরিক মুহুর্তগুলোর পিছু। আর্জেন্টিনা নিদারুন ভাবে হারলো- কষ্ট তা নিয়ে নয়। কষ্ট হলো মেয়ের কষ্ট লুকানোর প্রয়াস দেখে। তৌফিকের সুস্থ হয়ে ওঠার খবরও জানলাম, তবুও আনন্দ যেন অর্গল খুলতে পারেনা। ফেসবুকের পাতায় পাতায় সহকর্মী- শুভার্থীদের আকুলতা আর তৌফিকের অসুস্থতার ছবি, বাৎসল্য আর আনন্দঘন মুগুর্তের ছবি- সবই যেন আমার কাছে শোকের সাদাকালো ছবির এলবাম হয়ে উঠলো। কেন ? যদি তৌফিকের কিছু হয়ে যেতো এই ভেবে ? দুরারোগ্য এবং ব্যায়বহুল চিকিৎসায় জর্জরিত সন্তানগুলোর কি হতো এই ভেবে ? আমি জানি না। শুধু জানি, সবচেয়ে বড় যে সত্যিটি আমাকে আগামী সকল সকালের পানে টেনে নিতে উন্মুখ সেটি হলো তৌফিক শংকামুক্ত। আর যা জানি না- তা হলো কেন এই দেশে সৎ সত্য ও সুন্দরের স্পষ্টবাদী পূজারিরা ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়। জানি না কেন তাদের না পাওয়ার বেদনাগুলো ত্যাগের মহিমায় চাপা দিয়ে আত্মবলিদানের যূপকাষ্ঠের দিকে এগিয়ে দেয়। আর, জানি বলে অজানা যে আত্ম আশ্বাসের প্রতি বিশ্বাস রাখি, তা হলো, তৌফিক ফিরবে। সুস্থ হয়ে ফিরবে। ওর সন্তানের জন্য ফিরবে। প্রিয়তমা পতœী আর শুভার্থী সহকর্মীদের জন্য ফিরবে। সর্বোপরি কারো ভালোবাসাকে অবজ্ঞা করতে পারেনা বলেই অনেকের ভালোবাসাকে উপেক্ষা করতে অক্ষম তৌফিক কে শ্রষ্টা সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনবেন। আর কখনো তাকে অসুস্থ করবেন না- এটুকু আবদার বা দাবি অসীম দয়ালের কাছে করতেই পারি যদি তার আশীর্বাদে এই আমার বেঁচে থাকা- যেমন সকলেই বাঁচে শ্রষ্টার অসীম দয়াতে।

এ্যাপোলোতে Toufique Iftekher ভাইয়ের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। রাতে স্ত্রীর সাথে তার স্বাভাবিক কথা-বার্তা হয়েছে। ডাক্তার বলেছেন তার স্ট্রোক নয়, ভাইরাল ইলফেকশন হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য দরকার আরও কিছু টেস্ট। এরপর হাসপাতাল ছাড়বেন ইনশাআল্লাহ। সূত্র- Mamun Abdullah ভাই।
প্রিয় তৌফিক ভাই, আপনার জন্য মওলার কাছে ফরিয়াদ জানাই-আমাদের মাঝে দ্রুত ফিরে আসুন। আজ দুপুরে মেডিক্যাল সেন্টারে গিয়ে এনআইসিইউ-তে আপনাকে দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি, ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আপনাকে দেখতে ছুটে গেছেন অনেক সহকর্মী ও সাংবাদিক নেতা। সবার চোখে-মুখে ছিল উৎকষ্ঠা। একজন প্রাণবন্ত মানুষ হঠাৎ এভাবে নীরব হয়ে গেল কাউকে চিনতে পারছেন না। ডাক্তাররা বলছেন-তৌফিক ভাই viral encephalities নামে রোগে আক্রান্ত। আল্লাহ তুমি বান্দাকে রোগ দাও, আবার উসিলায় সারিয়ে নাও। আল্লাহ আমার মওলা হুজুরের সদকায় এই ভাল মানুষটাকে আমাদের মাঝে দ্রুত সুস্থ্য করে ফিরিয়ে দাও।