অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজ

0
71

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজ। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে কলেজের একাডেমিক কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা হল ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। সোমবার ফলাফল প্রকাশের পর পুনর্মুল্যায়নের দাবিতে আন্দোলনে নামে কলেজটির শিক্ষার্থীরা।

চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম বলেন,‘শিক্ষার্থীদের আলোচনায় বসতে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তারা আলোচনায় বসতে রাজী হয়নি। পরে সার্বিক দিক বিবেচনায় নিয়ে কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’

কলেজ সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকালে নার্সিং কলেজের বিভিন্ন বর্ষের ফলাফল প্রকাশ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চারটি বর্ষের শুধুমাত্র ৪৭ শতাংশ শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়। তাৎক্ষণিক ফলাফল বিপর্যয়ের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। একঘণ্টা অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এসময় তারা ফলাফল পুর্নমুল্যায়নের দাবি জানায়। মঙ্গলবার সকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষের আলোচনায় বসার কথা ছিল। কিন্তু বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়নি।

একই দাবিতে মঙ্গলবার সকাল নয়টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে মিছিল-সমাবেশ করেছে তারা। এসময় তারা অধ্যক্ষ ও তার সহযোগী আরেক শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করেন। বিকালে কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হলে বাংলানিউজকে একাধিক শিক্ষার্থী জানান, তারা হল ছাড়বেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান,‘চার বছর ধরে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজে ফলাফল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটছে। কেন এটা হচ্ছে কেউ জানে না। কলেজ কর্তৃপক্ষও এর কোন ব্যাখা দেন না। ফলে বছরের পর বছর ধরে শিক্ষার্থীদের মুল্যবান শিক্ষা জীবন নষ্ট হচ্ছে। প্রতিবারই শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে দাবি জানালে কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়ে তাদের দায় সারেন। পরের বছর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে।’

চতুর্থ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী জানান,‘শিক্ষকরা ক্লাস নেন না। সিলেবাস শেষ না করে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। কোন কোন কোর্সে ক্লাসও হয়নি। এ কারণে ফলাফল বিপর্যয় ঘটতে পারে। তাই ফলাফল পুনর্মুল্যায়নের দাবি জানিয়েছি। তাছাড়া কিছুদিন আগে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলো। ফলাফল বিপর্যয় ঘটিয়ে অধ্যক্ষ এর প্রতিশোধও নিতে পারেন। আমরা অধ্যক্ষ ও তার সহযোগিদের পদত্যাগ দাবি করছি।’

কলেজ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজের প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় ৮৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। পাশ করেছে মাত্র ৩০জন। দ্বিতীয় বর্ষের সাপ্লিমেন্ট পরীক্ষায় অংশ নেয় ৪৩জন শিক্ষার্থী। পাশ করেছে ৩২জন। এদের মধ্যে ৯ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। তৃতীয় বর্ষের ৭৯জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে মাত্র ৩৬জন। চতুর্থ বর্ষের ৫২জন শিক্ষার্থীর মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ১৯ শিক্ষার্থী।