নগরীর হালিশহরের শান্তিবাগ এলাকায় প্রেমিককে ডেকে নিয়ে বাসায় জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করেছে কথিত প্রেমিকা ও তার সহযোগিরা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন কথিত প্রেমিকাসহ তিন অপহরণকারী। এসময় শাহাদাত হোসেন নামের অপহরণের শিকার একজনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার গভীর রাতে হালিশহরের শান্তিবাগ ও তাসফিয়া কমিউনিটি সেন্টার এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে খুলশী থানা পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন- মোছাম্মৎ মণি আক্তার (২৩), মো. লিটন (২৫) ও মো. রনি (২৮)।
খুলশী থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, ‘খুলশী থানাধীন ঝাউতলা এলাকার বাসিন্দা শাহাদাত হোসেনের সাথে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে প্রতারক মণি আক্তার। একপর্যায়ে দেখা করার কথা বলে গতকাল রোববার সকালে শাহাদাতকে হালিশহরের শান্তিবাগ এলাকায় ডেকে নিয়ে যায় মণি। ওই এলাকায় যাওয়ার পর শাহাদাতকে জিম্মি করে তার পরিবারের কাছে দেড় লাখ টাকা দাবি করে কথিত প্রেমিকা মণি ও তার সহযোগিরা।’
ওসি বলেন, ‘এ ঘটনার পর রোববার বিকেলে শাহাদাতের ভাই থানায় এসে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। এরপর এ ঘটনার উপর নজর রাখছিল পুলিশ। রোববার রাতে পুলিশের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তাদেরকে ৪০হাজার টাকা বিকাশে পাঠানো হয়। এরপর অপহরণকারীরা বাকি এক লাখ টাকা দাবি করায়, তাদেরকে বলা হয়, রাতে বিকাশ বন্ধ থাকায় বাকি এক লাখ টাকা সরাসরি দেওয়া হবে।’
ওসি আরো বলেন, ‘পরিকল্পনা অনুযায়ী শাহাদাতের ভাই টাকা নিয়ে হালিশহরের তাসফিয়া কমিউনিটি সেন্টারের সামনে যায়। এসময় টাকা নিতে আসাদের ধরে ফেলেন ঘটনাস্থলের কিছুটা দূরে থাকা খুলশী থানা পুলিশের একটি দল। এরপর তাদেরকে নিয়ে শান্তিবাগের একটি ভবনে অভিযান চালিয়ে শাহাদাতকে উদ্ধার ও তিন অপহরণকারীকে আটক করে পুলিশ।’
এদিকে এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারে বলা হয়, রোববার সকাল ৮টার দিকে বাসা থেকে অফিসে যাবার প্রস্তুতি নেয়ার সময় পূর্বপরিচিত মোছাম্মৎ কাজল শাহাদাতকে ফোন দিয়ে জানান, হালিশহরের রামপুরায় কম দামে বেশকিছু জমি আছে, তিনি চাইলে কিনতে পারেন। এরপর সকালে রামপুরা এলাকায় যান শাহাদাত। এসময় কাজল কৌশলে তাকে মণি আক্তারের ফ্ল্যাটে নিয়ে মোবাইল, টাকা ও এটিএম কার্ড হাতিয়ে নেয়।
এজাহারে আরো বলা হয়, সেখানে তার পাশে কাজলের মেয়ে মণিকে ইয়াবাসহ বসিয়ে দিয়ে ছবি তোলা হয়। এ ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে ফোন করে টাকা দাবি করে কাজল। তাদের কথামত শাহাদাতের পরিবার ৪০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে অপহরণকারীদের কাছে পাঠায়।
এদিকে প্রথমে এ প্রতিবেদকের কাছে কথিত প্রেমিকা কর্তৃক শাহাদাতের অপহরণের বিষয়টি জানানোর পর পরে খুলশীর ওসি বলেন, ‘এজাহারে যেটা লেখা হয়েছে, আপাতত সেটাকেই ধরে নিয়ে তদন্ত হবে। তদন্তে সবকিছু বের হয়ে আসবে।’
অপহরণকারী দলের সদস্য কাজল ও মণির সাথে শাহাদাতের আত্নীয়তার কোন সম্পর্ক আছে কি না ও তাদের মধ্যে পরিচয়টা কিভাবে হলো প্রশ্নে ওসি বলেন, ‘সবকিছুই তদন্তে বেরিয়ে আসবে।’