অফিস চলাকালীন ফেসবুক ব্যবহার করা যাবে না

0
166

বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের অফিস চলাকালীন অর্থাৎ সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) উপস্থিতি কঠোরভাবে পরিহার করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে রবিবার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এসব নির্দেশনা অমান্য করলে তা অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিচারকদের সতর্ক করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান এমন নির্দেশনা জারির তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নির্দেশনায় বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর রিফর্মসের সুপারিশক্রমে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি অনুসরণীয় নির্দেশনা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

যেসব বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে : নির্দেশনায় বলা হয়, জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থী, কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কিছু, রাজনৈতিক মতাদর্শ বা আলোচনা, কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক বা হেয়প্রতিপন্ন করে এমন কোনো কিছু, কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রকে হেয়প্রতিপন্ন করে এমন কিছু, লিঙ্গ বৈষম্যমূলক, জনমনে অসন্তোষ ও অপ্রীতিকর মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো কিছু, কোনো মামলাসংক্রান্ত বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য বা ব্যক্তিগত অনুভূতি, নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো বিরূপ মন্তব্য বা ব্যক্তিগত অনুভূতি, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ছবি বা ভিডিও ক্লিপ, অপ্রাসঙ্গিক, অপ্রয়োজনীয়, মানহানিকর এবং নৈতিকতা পরিপন্থী কোনো তথ্য, মন্তব্য, স্ট্যাটাস, পোস্ট, লিংক, ছবি ইত্যাদিতে অন্যজনকে সংযুক্তরণ (ট্যাগিং), আদান-প্রদান (শেয়ারিং), প্রকাশ ও প্রচার করা যাবে না।

যেসব বিষয় সতর্ক থাকতে হবে : নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি কিছু কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে তা হলো—ক. প্রকাশিতব্য লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি নির্বাচন ও বাছাইয়ের ক্ষেত্রে। খ. প্রকাশিত তথ্য-উপাত্তের যথার্থতা ও নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। গ. ব্যক্তিগত ও পারিবারিক তথ্য আদান-প্রদান, প্রকাশ ও প্রচারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা এবং বিচারকসুলভ মনোভব অবলম্বন করতে হবে। ঘ. অপ্রয়োজনীয় বা গুরুত্বহীন বিষয়ে তথ্য, স্ট্যাটাস বা পোস্ট দেওয়া যাবে না। ঙ. বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য একটি পোর্টাল বা গ্রুপ থাকতে পারে, যেখানে বিচারাধীন মামলার বিষয় এবং ব্যক্তিগত বিষয় ব্যতীত শুধু আইনগত বিষয়ে একাডেমিক আলোচনা ও তথ্য আদান-প্রদান করা যাবে। চ. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ও বিচারকসুলভ আচরণ করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে। ছ. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো তথ্য আদান-প্রদান ও বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নিজ কর্মক্ষেত্রে মামলার স্বার্থসংশ্লিষ্ট বা মামলা পরিচালনার সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না। জ. বাস্তব ও স্বাভাবিক অবস্থায় সহকর্মীদের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া-সংক্রান্ত নিয়ম-নীতি, করণীয় ও বর্জনীয় দিকগুলোর প্রতিফলন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিশ্চিত করতে হবে।