অভিনন্দন, তবে ‘মামার বাড়ির আবদার’ নয় :

0
228

রিয়াজ হায়দার চৌধুরী::
সম্পর্কটা আমাদের ‘মামা-ভাগ্নে’র। তবে পেশাগত কারনে অম্লমধুরও। অভিনন্দনতো বটেই।
আবারো দু’বছর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(চউক) বা সিডিএ চেয়ারম্যানের পদে দু’বছরের বাড়তি দায়িত্ব পেলেন আবদুচ ছালাম।
আবদুচ ছালাম। সিডিএ’র চেয়ারম্যান, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মহানগর শাখার অর্থ সম্পাদক শুধু নন, একজন বিনয়ী সৎ সজ্জন ব্যক্তি । সর্বোপরি নিজের ঘুমকে হারাম করে দিন রাত চরম ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন বিশ্ব মানচিত্রে ‘বাংলা’ নামের দেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সংগ্রামে ব্যস্ত, তখন তাঁর সরকারের নির্দেশনায় ৬বারের মত সিডিএ চেয়ারম্যানের মেয়াদবৃদ্ধির নিশ্চয়ই কোন দুরদর্শী তাৎপর্য আছে। তাছাড়া একের পর এক প্রকল্প ছাড় করিয়ে বরাদ্দ আদায়ের ক্ষেত্রেও আবদুচ ছালামের সক্ষমতার তারিফ না করে পারিনা।
রাজনীতিতে সিডিএ চেয়ারম্যানের তৎপরতা বা চেয়ারম্যান পদে এই রাজনীতিবিদের নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক আছে। তা থাকতেই পারে। তবে সেই বিতর্ক অনেকটা ঠুনকো হয়ে যায়, যখন বহদ্দারহাটের ফ্লাইওভারের গার্ডার দুর্ঘটনার পর ক্ষমতাসীন দলের এই নেতার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলী ছুঁড়ে রাজনীতির গোপন আততায়ীরা ! অবস্হা তখন এমন হয়ে দাড়িয়েছিল যে, বহদ্দারহাট হয়ে মোহরার বাড়িতে যেতেও দেখা যায়নি এই অমায়িক শান্তিপ্রিয় মানুষটিকে। উন্নয়ন আর রাজনীতিতে তাঁর উঠোন বৈঠকের পক্ষ বিপক্ষের লোকজন যা’ই বলেননা কেন, আবদুচ সালামকে অভিনন্দন ।
তবে, একই সাথে আশা করি, জলাবদ্ধতা নিরসনে তিনি আরো মনোযোগী হবেন। চট্টগ্রামের উন্নয়নে ১৯৯৫সালেই সিডিএ,র মাস্টার প্ল্যানটিতে যে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, তা ঠিকমত মানা হচ্ছিল কিনা সেটি নিশ্চিতের দায়িত্ব কিন্তু সিডিএ’রই। সিডিএ যদি খাল আর নালা দখল করে নির্মিত বাড়িগুলোর নকশা অনুমোদন না দিতো কিংবা এনিয়ে জনস্বার্থে ভেজাল বিরোধী অভিযানের মত সজাগ অভিযান চালাতো গেল ক’বছর, তবে অল্পবৃষ্টিতেই জলবন্দি দশা হওয়ার নেপথ্যের অন্তত: একটি কারণের যবনিকা ঘটতো। দ্রুত নালা খাল হয়ে বৃষ্টির জল গড়িয়ে যেতে পারতো কর্ণফুলী হয়ে বঙ্গোপসাগরে, চাটগাঁবাসীর কারো এতটা দুর্ভোগের ভাষা কিংবা কারো বোবাকান্নার জলও আর হতো না !
সিডিএ চেয়ারম্যানের সাথে মুঠোফোনে কথা হয়েছিল গতকাল। ‘কেন বাব বার ডোবে চট্টল শহর?’ -এমন প্রশ্নে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম অামাকে বলেন, ‘ শহর না ডোবার যা পন্থা, এর যাবতীয় গাইডলাইন মাস্টারপ্ল্যানেই দেওয়া হয়েছে। তা ফলোআপ না করার কারণে বা কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় ধীরে ধীরে এমন মহাসংকট! ‘
বি:দ্র: নি:সন্দেহে এবার উন্নয়নের মাস্টারপ্ল্যান যতার্থ বাস্তবায়নের মাধ্যমে চাটগাঁবাসী জলাবদ্ধতা মুক্তিসহ সামগ্রিক উন্নয়ন সমন্বয়ের গ্যারান্টিও পাবেন। জানি, একজন ক্ষুদ্র নাগরিকের এমন চাওয়া নিছক ‘মামার বাড়ির আবদার’ নয়।
লেখক : চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি