কক্সবাজার প্রতিনিধি। কক্সবাজারের মহেশখালী থানা পুলিশের সৌকস অভিযানে ২ অপহরণকারী গ্রেপ্তার ও অপহ্নতাকে উদ্ধার করা হয়েছে। গত ৭ই মে বিকাল আড়াইটার সময় মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ প্রভাষ চন্দ্র ধর এর নেতৃত্বে সঙ্গীয় অফিসার, ফোর্স সহ অভিযান পরিচালনাকালে আসামী রুহুল কাদের রুহুইল্যা(৩০), পিতা-মোঃ আমিন, শাহঘোনা, কালারমারছড়া, আজিজ(২৮), পিতা-ওসমান, সাং-অফিস পাড়া, কালারমারছড়া, থানা-মহেশখালী, জেলা-কক্সবাজারদ্বয় এবং তাদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত ২টি দেশীয় তৈরী এলজি, ৮টি তাজা কার্তুজ, ১টি গুলি রাখার ব্যাগ, ৬টি খালি কার্তুজ সহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামী রুহুল কাদের রুহুইল্যা(৩০) আজিজ(২৮) দ্বয় বিরুদ্ধে অবৈধভাবে অস্ত্র ও কার্তুজ দখলে রাখার অপরাধের জন্য মহেশখালী থানার মামলা রুজু হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি মহেশখালী থানার এসআই মোঃ আনিস উদ্দিন তদন্ত করছেন। গ্রেফতারকৃত আসামী রুহুল কাদের রুহুইল্যা (৩০) আজিজ(২৮) দ্বয় কে উক্ত মামলায় বিজ্ঞ মহেশখালী আমলী আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গত ৬ই মে রাত দেড়টার সময় মহেশখালী থানাধীন হোয়ানক ইউনিয়নের পানিরছড়া গ্রামের মোঃ ইউসুফ, তার ছেলে আব্দুল মোনাফ ও তার মেয়ের জামাই শাহাদাত উল্লাহ সহ বদরখালী থেকে সিএনজি যোগে আসার সময় মহেশখালী থানাধীন শাপলাপুর ইউনিয়নস্থ বালুর ডেইল নামক স্থানে পৌঁছলে ৮/৯ জন অপহরণকারী তাদের সিএনজির গতিরোধ করে সিএনজি থেকে তাদেরকে নামিয়ে ফেলে। একপর্যায়ে তাদের ৩ জনকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অপহরণ করতে চাইলে তখন ইউসুফ ও তার মেয়ে জামাই বাঁচাও বাঁচাও বলিয়া দৌড়ে পালিয়ে গেলেও অপহরণকারীরা আব্দুল মোনাফকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পাশের পাহাড়ের ভিতরে নিয়া যায়। অত:পর আব্দুল মোনাফ এর মায়ের নিকট মুক্তি পণ হিসাবে ৫ লক্ষ টাকা দাবী করে এবং মুক্তি পনের টাকা নিয়া কালারমারছড়া ইউনিয়নের ফকিরজোম পাড়ার পাহাড়ের ভিতরে নিয়া যাওয়ার জন্য বলে। ঘটনাটি আব্দুল মোনাফ এর মা ও বাবা মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জকে জানালে মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ প্রভাষ চন্দ্র ধর, পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) একেএম সফিকুল আলম চৌধুরী এর নেতৃত্বে এসআই লিটন চন্দ্র সিংহ এবং এএসআই জুয়েল দে ও সঙ্গীয় ফোর্স সহ ভিকটিমের আত্মীয়স্বজন এর ছদ্মবেশে মুক্তি পণের টাকা নিয়ে কালারমারছড়া ইউনিয়নের ফকিরজোম পাড়ার পাহাড়ের ভিতরে ঢুকে পড়ে এবং সেই পাহাড়ের নিচে চারদিকে পুলিশ কৌশলে কমান্ড ষ্টাইলে ঘেরাও করে ওতপেতে থাকে এবং মাঝখানে একটি ফাঁদ পাতে। পুলিশ ছদ্মবেশে ফাঁদের মধ্যে দাঁড়িয়ে অপহরণকারীদেরকে মুক্তি পণের টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য ফোন করিলে অপহরণকারীদের মধ্যে রুহুল কাদের প্রঃ রুহুইল্যা(৩০) ও আজিজ(২৮) পার্শবর্তী পাহাড়ের জঙ্গলের ভিতর থেকে বের হয়ে আসে। একপর্যায়ে মুক্তি পণের টাকা পাহাড়ের উপরে রেখে যাওয়ার জন্য অপহরণকরীরা বলে। তখন উপরে ও নিচে এক হাজার টাকার নোট দিয়ে ও ভিতরে ভাঁজ করা কাগজ দিয়ে টাকার বান্ডেল তৈরী করে ঐ স্থানে দুই জন পুলিশ মুক্তি পণের টাকা রেখে অনুমান ৪০/৫০ হাত পিছনে অবস্থানকালে অপহরণকারী রুহুল কাদের প্রঃ রুহুইল্যা(৩০) ও আজিজ(২৮) মুক্তি পণের টাকা নেয়ার জন্য দৌঁড়ে সেখানে যাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ চারদিক থেকে ঘেরাও করে ফেললে অপহরণকারীরা অবস্থা বেগতিক দেখে তাদের কোমড় থেকে এলজি বাহির করে এলোপাতাড়ী গুলি বর্ষণ করতে করতে পালানোর চেষ্টা করে। ইতিমধ্যে অপহরণকারীদের সহযোগীরা পার্শবর্তী পাহাড় থেকে গুলি বর্ষণ করতে থাকে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে ২৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। একপর্যায়ে অপহরণকারী রুহুল কাদের রুহুইল্যা(৩০) এর হেফাজত হইতে ১টি এলজি, ৬ রাউন্ড কার্তুজ ও ১টি গুলি রাখার ব্যাগ সহ এবং অপহরণকারী আজিজ(২৮), এর হেফাজত হইতে ১টি এলজি ও ২ রাউন্ড কার্তুজ সহ হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। মহেশখালী থানা সুত্রে জানা গেছে রুহুল কাদের রুহুইল্যা এর বিরুদ্ধে ১টি ডাকাতি প্রস্তুতি সহ ২টি মামলা এবং অপর আসামী আজিজ এর বিরুদ্ধে ১টি মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামী রুহুল কাদের রুহুইল্যা এবং আজিজ দ্বয় কালারমারছড়া, হোয়ানক এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অপহরণ, ডাকাতি, ছিনতাই করে আসছে এবং এলাকায় অবৈধ অস্ত্র বিক্রয় করে বলে সাধারণ লোকজন জানায়। এলাকার নিরীহ লোকজন ভয়ে তাহাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। তাদের গ্রেফতারের সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তির ফিরে আসে।