ইউএনএইচসিআর নিয়ন্ত্রিত কুতুপালং ও নয়াপাড়া ক্যাম্পে আশ্রয়

0
56

কক্সবাজারে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা’র (ইউএনএইচসিআর) নিয়ন্ত্রিত কুতুপালং ও নয়াপাড়া ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে মিয়ানমার থেকে নির্যাতিত হয়ে আসা রোহিঙ্গারা। এসব রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সহায়তাও দেওয়া শুরু করেছে আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটি। সংস্থাটির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, নির্যাতিত হয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্যে তাদের নতুন ভূমি প্রয়োজন এবং বিষয়টি তারা সরকারকে অবহিত করেছে।

কক্সবাজার জেলার টেকনাফের নয়াপাড়া এবং উখিয়ার কুতুপালং এ দুটি শরণার্থী শিবির পরিচালনা করছে ইউএনএইচসিআর। এসব শিবিরে শুধুমাত্র নিবন্ধিত শরণার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বসবাস করতে পারেন।
গত এক সপ্তাহে কুতুপালং ও নয়াপাড়া নিবন্ধিত ক্যাম্পের প্রতিটিতে কমপক্ষে দশ হাজার করে বিশ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। এসব রোহিঙ্গারা কমিউনিটি সেন্টার, স্কুল, মসজিদ এবং খোলা জায়গায় অবস্থান করছে। নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা তাদের খাবার ও পানি দিয়ে সহায়তা করছে। এখানে সদ্য আসা কিছু রোহিঙ্গাকে তাঁবু ও অন্যান্য সহায়তা দিচ্ছে ইউএনএইচসিআর।

কুতুপালং নিবন্ধিত ক্যাম্পের ইনচার্জ রেজাউল করিম বলেন, ‘নিবন্ধিত ক্যাম্পে নতুন করে কমপক্ষে দশ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। তারা এখানকার ১১টি স্কুল ও অন্যান্য কমিউনিটি সেন্টারগুলোতে অবস্থান নিয়েছে। নিবন্ধিত ক্যাম্পে আসা রোহিঙ্গাদের আপাতত তাঁবু ও অন্যান্য সহায়তা দিচ্ছে ইউএনএইচসিআর।’
রোহিঙ্গাদের অবস্থান প্রসঙ্গে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক আলী আহমদ বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। আসলে এত বেশি রোহিঙ্গা আসছে যে তাদেরকে ম্যানেজ করা আমাদের জন্যে কষ্টসাধ্য।’
কুতুপালং নিবন্ধিত ক্যাম্পের একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা আবুল কাশেম বলেন, ‘প্রাণভয়ে পালিয়ে এসে এখানে আশ্রয় নিয়েছি। আমাদেরতো আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।’
এদিকে ইউএনএইচসিআর এর আঞ্চলিক সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা ভিভিয়ান তান পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘বাংলাদেশে আসা শরণার্থীদের বিষয়ে সরকারের সাথে আমরা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। দুটি ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদেরকে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে খাবার, পানি ও ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।’

‘সদ্য আসা রোহিঙ্গাদের কারণে ক্যাম্পগুলো খুবই জনাকীর্ণ হয়ে উঠেছে। এখানে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত মানুষ হয়ে গেছে, তাদেরকে আশ্রয় দেওয়ার জন্যে নতুন ভূমির প্রয়োজন। এই বিষয়ে জাতিসংঘ সরকারের সাথে যোগাযোগ রাখছে’ উল্লেখ করেন তিনি।
শুক্রবারও হাজার হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। বৃষ্টি ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে চরম দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে তাদেরকে আসতে দেখা গেছে।
গত শুক্রবারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা’র) সাথে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের জের ধরে চালানো অভিযানে প্রায় ৪০০ রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর থেকে রোহিঙ্গারা দলে দলে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। বিভিন্ন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে এই সংখ্যা ৫০ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।