ইডব্লিউজির অভিযোগ ভোট গণনা দেখতে পর্যবেক্ষকদের বাধা

0
218

ভোট জালিয়াতি, ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, কেন্দ্রের ভেতরে ব্যাপক সহিংসতা এবং সবশেষে পর্যবেক্ষকদের ভোট গণনা দেখতে বাধা দেয়ার অভিযোগ করেছে নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংগঠন ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ (ইডব্লিউজি)।

সদ্য সমাপ্ত চতুর্থ দফা উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি এ অভিযোগ তুলে ধরে।

তাদের অভিযোগ, স্পর্শকাতর ২৩টি উপজেলার মধ্যে ১৬টিতে সংগঠনের পর্যবেক্ষকদের ভোট গণনা দেখতে বাধা দেয়া হয়েছে।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দৈব চয়নের (র‌্যানডম সিলেকশন) মাধ্যমে ২৩ উপজেলাকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করে তারা ৬৮০ জন পর্যবেক্ষক দিয়ে ওইসব কেন্দ্র নীবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে।

পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ওই ২৩টি উপজেলার মধ্যে ১৬টিতে ১৮৪টি ভোট জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে সাতক্ষীরার কলারোয়া ও পিরোজপুরে এর মাত্রা অনেক বেশি ছিল।

এছাড়া, ১৯টি উপজেলায় ভোটকেন্দ্রের ভেতরে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ১২২টি। ভোটারদেরকে ভয়-ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা ঘটেছে ৯২টি। আইন অমান্য করে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর ঘটনা ঘটেছে ১৭টি উপজেলায় মোট ৬৪ বার। ভোটারদের ভোট প্রদানে বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে ৯টি উপজেলায় ১৭টি। নির্ধারিত সময়ের আগেই ভোটকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণার ঘটনা ঘটেছে ১১টি উপজেলায় ২৬টি।

পোলিং এজেন্টদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে ১০টি উপজেলায় ৭০টি এবং
ভোটকেন্দ্রের ভেতরে গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে ১০টি উপজেলায় ১৪টি।

সুনির্দিষ্টভাবে সাতক্ষীরার কলারোয়া ও যশোরের দুটি কেন্দ্রের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, কলারোয়া উপজেলায় একটি কেন্দ্রে একজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বেশ কিছু ব্যালট পেপার নিয়ে পর্যবেক্ষক এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার সামনেই সিল মারেন।

আর যশোর সদরের দুটি কেন্দ্রে বেলা ২টার দিকে ভোটগ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ২টার পর ভোটাররা এলে তাদের বলা হয়, ‘আপনাদের ভোট দেয়া হয়ে গেছে’।

সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন ইডব্লিউজির পরিচালক মো. আব্দুল আলীম। তথ্য উপস্থাপন শেষে মো. আব্দুল আলীম বলেন, ‘চতুর্থ পর্যায়ের উপাজেলা নির্বাচনে সহিংসতার মাত্রা ব্যাপকতা লাভ করেছে অনেক গুন। এমনকি এই সহিংসতা থেকে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা বা পর্যবেক্ষকরাও রেহায় পাননি।’

তিনি আরো বলেন, ‘অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ কার্যক্রমের জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হলেও সহিংসতার মাত্রার ব্যাপকতার কারণে সার্বিক প্রক্রিয়া নস্যাৎ হয়।’

এরপর সংগঠনের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য জানিপপের চেয়ারম্যান ড. নাজমুল হাসান কলিমুল্লাহ বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনের প্রথম দিকের ধাপগুলো দেখে সরকারের সুষ্ঠু নির্বাচনের যথেষ্ট ইচ্ছা পরিলক্ষিত হলেও পরবর্তী ধাপের নির্বাচন দেখে তা আর মনে হচ্ছে না।’ তাছাড়া বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে পর্যবেক্ষকদের বের করে দেয়া ও ভোট গণনা না দেখতে দেয়ার ঘটনাগুলো কিন্তু সবার মনেই সন্দেহ ছড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।