ঈদগাঁওর খরস্রোতা ফুলেস্মরী নদী দখলের মহোৎসব!

0
80

সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও প্রতিনিধি: কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওর এক সময়ের স্রোতস্বিনী ফুলেস্মরী নদীর দুপাড়ে চলছে দখলের মহোৎসব। নদীর বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে জেগে উঠেছে অসংখ্য ছোট-বড় চর। চলছে নামে-বেনামে চর দখল, ধান চাষ ও তৈরি হচ্ছে বসতবাড়ি। পলিতে নদী ভরাটে ভূমিহীন সেজে তা দখল দিচ্ছে। সেই সাথে বাড়ছে মামলা-মোকদ্দমা। নাব্যতা সংকটের কারনে বন্ধ রয়েছে ঈদগাঁও-ঈদগড় নৌ যোগাযোগ। একসময় বর্ষা এলে ফুলেস্মরী নদীতে নৌ চলাচল উপভোগ করেন হাজারো মানুষ। নদীটি কক্সবাজার জেলার অন্যতম নদী ও তখনকার যাতায়াতের মাধ্যম। তাই এর তীরে গড়ে উঠেছিলো জেলার সবচে বড় বাণিজ্যিক ঈদগাঁও বাজার, পোকখালীর মুসলিম বাজারও। তখন বার্মা থেকে স্টীমার নিয়ে বনিকেরা কক্সবাজার হয়ে ঈদগাঁও বাজারে আসতেন বাণিজ্য করতে। সবই এখন কেবলই স্মৃতি।
আশির দশকে অসংখ্য লঞ্চ এবং পাল তোলা নৌকায় পণ্য আনয়ন করতেন ব্যবসায়ীরা। নাব্যতা সংকট ও কালের আবর্তে ফুলেস্মরী নদী তার রূপ যৌবন সবই হারিয়েছে। নেই সেই আগ্রাসী রূপ। এর জন্য যতটা প্রাকৃতি দায়ী তার চেয়ে মানুষেরা বেশী দায়ী। ফুলেস্মরী নদীর পালপাড়া থেকে ভোমরিয়াঘোনা-গজালিয়া পর্যন্ত প্রায় ১০ কি.মি. পায়ে চলা সরু পথে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতিকাল শীতে ফুলেস্মরী নদীর নাব্যতা অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় ঈদগাঁও-ঈদগড় নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরিবহনে চরম সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসা বাণিজ্যে নেমেছে ধস।
ঈদগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ছৈয়দ আলম জানান, নদী শাসন আইন ফুলেস্মরীর জন্য কার্যকর হয়না। প্রকাশ্যে চলছে নদী দখলের প্রতিযোগিতা।
ঈদগাঁও পালপাড়া গ্রামের রমেশ, সনজিৎ ও নেপাল জানান, এই নদীই আমাদের রুটি-রুজির উৎস ছিল। স্থানীয়রা মাছ শিকার করে জিবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু নদীতে পানি না থাকায় এখন আর জেলেরা নদীতে আসেনা। অনেকে বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছে। প্রাকৃতিক বিরুপ প্রভাবে এককালের খরস্রোতা ফুলেস্মরী শুকিয়ে এখন মরা খাল। আর জেগে উঠা চরগুলো ধান-সবজি চাষের অন্যতম আঁধারে পরিনত হয়েছে।
স্থানীয়রা ফুলেস্মরী নদী দখল আর দুষনমুক্ত এবং ড্রেজিং করে এই নদীর প্রবাহ পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে নদী কমিশনের নীতি ও দিকনির্দেশনা অনুযায়ি অপদখলমুক্ত করতে অভিযানের দাবী জানিয়েছেন।