উখিয়ার ফোর মার্ডারের ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি

0
130
কায়সার হামিদ মানিক,উখিয়া।
কক্সবাজারের উখিয়ার পূর্ব রত্নাপালং বড়ুয়া পাড়ায় একই পরিবারের দুই শিশুসহ চারজনকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে জেলা বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এসময় ওই পরিবারের সদস্য রোকন বড়ুয়াসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজার জেলা বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষুর লিখিত বক্তব্য সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে পাঠ করেন সংগঠনটির উখিয়া উপজেলা শাখার যুগ্ম-সম্পাদক শিশু বড়ুয়া।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বর্তমানে মামলার কার্যক্রম ধীরগতিতে চলছে। এখন পর্যন্ত মূল অপরাধীদের শনাক্ত করা যায়নি। এ মামলার দ্রুত বিচারের দাবিতে আগামী ১৫ নভেম্বর উখিয়া কোটবাজার স্টেশনে মানববন্ধন এবং ২৪ নভেম্বর কক্সবাজার আদালত প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করবে বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদ। পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেবেও তারা।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটলেও উখিয়ায় একই পরিবারে চারজনকে হত্যার মতো এমন নৃশংস ঘটনা কোথাও ঘটেছে বলে আমাদের জানা নেই। ঘটনার পর থেকে এলাকায় আতঙ্ক ও ভীতির সঞ্চার হয়েছে। দেশের প্রতিটি মানুষ, বিবেকবান সমাজ নারকীয় এ ঘটনায় অত্যন্ত ব্যথিত। ঘটনার প্রকৃত রহস্য জানতে মুখিয়ে আছে সব শ্রেণী-পেশার মানুষ। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। ঘটনায় নির্দোষ কোনো ব্যক্তিকে জড়ানো হলে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যাবে। পার পেয়ে যাবে প্রকৃত অপরাধীরা। নিরপরাধ কাউকে যেন ঘটনায় জড়ানো না হয়, সে বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তাসহ সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদের জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক বিপক বড়ুয়া, উখিয়া উপজেলা সভাপতি রনজিত বড়ুয়া, চকরিয়া উপজেলার সাধারণ সম্পাদক সুজিত বড়ুয়া, হত্যাকাণ্ডের শিকার সখি বড়ুয়ার ছেলে রোকন বড়ুয়াসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
রোকন বড়ুয়া বলেন, আমার মা সখি বড়ুয়া (৬৫), স্ত্রী মিলা বড়ুয়া (২৫), ছেলে রবিন বড়ুয়া (৫) ও ভাতিজি সনি বড়ুয়াকে (৫) কী কারণে, কারা হত্যা করেছে জানি না। ঘটনার প্রায় দেড় মাস পেরোলেও আসল রহস্য উদঘাটন হয়নি। জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। ঘটনার পর প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা রাখলেও প্রকৃত অপরাধী শনাক্ত করা নিয়ে আমরা সন্দিহান। আমরা মনে করি, ঘটনার মূল হোতা কিংবা অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে দীর্ঘ সময় লেগে গেলে স্বজনরা হতাশ হবেন, খুনিরা আত্মগোপনের সুযোগ পাবে। ঘটনায় নিরপরাধ কোনো ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয়, আবার দোষীরাও যেন পার পেয়ে না যায়, সে বিষয়ে প্রশাসনকে আরও সজাগ থাকতে হবে। আমার পরিবারে মতো আর কোনো পরিবার যেন এ ধরনের ঘটনার শিকার না হয়।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার পূর্ব রত্নাপালং বড়ুয়া পাড়ায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হাতে ওই চারজন নির্মমভাবে প্রাণ হারান। এ ঘটনায় মিলা বড়ুয়ার বাবা শশাং বড়ুয়া বাদী হয়ে পরের দিন ২৬ সেপ্টেম্বর উখিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করছে।