উদ্ধুতপূর্ণ আচরণ, নির্যাতন ও স্বেচ্ছাচারিতায় দিশেহারা কর্মচারী ও সাধারণ প্রবাসীরা

0
168

জেদ্দাস্থ কমিউনিটির সাথে প্রতিনিয়ত তিনি দুরব্যবহার করে চলেছে। সাংবাদিকদের সাথে চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ করে থাকে। এছাড়াও সাধারন সেবা প্রার্থীদের সাথে দুরব্যবহারের করাসহ অনেককেই ইতমধে কনস্যুলেট হতে ধাক্কাদিয়ে বের করে দিয়েছেন। অনেককে আঘাত করার চেষ্টা করলে কনস্যুলেটের কর্মকর্তা/কর্মচারীরা বাধা দেন। এতে কনস্যুলেটের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হচে॥ তার অত্যাচার, হুমকি এবং সর্বদা বাবা-মা তুলে গালাগালাজ করার প্রেক্ষিতে জনৈক আইন সহকারী মানসম্মান রক্ষার্তে চাকুরি ছেড়ে বাংলাদেশে চলে গেছেণ।

এই দিকে গত ১১ মাস আগে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরব পাড়ি দেন জামালপুরের সুমন আলী, পরিচিত এক লোক থেকে ভিসা ক্রয় করে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আসেন তিনি ৩ মাস পরে আকামা হাতে পেয়ে কাজের সন্ধানে পবিত্র মদিনায় আসেন। কিছু দিন কাজ করার পরে হাঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সুমন আলী, অসুস্থতার কারন দেখিয়ে চাকরি থেকে বের করে দেন প্রতিষ্ঠানের মালিক। আজকে ছয় মাস ধরে পঙ্গুত্ব জিবন জাপন করছেন মদিনায় মসজিদুল নববীর ১০ নং টয়লেটে পাশে একই বিছানায় খোলা আকাশের নিচে কখনো খেয়ে আবার না খেয়ে মানবেতর জিবন কাটাচ্ছেন তিনি।

সুমন আলীও জেদ্দাস্থ শ্রম কাউন্সিলর আমিনুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান কফিল ছাড়া তাকে দেশে পাঠানো যাবেনা এখানে আমাদের কিছুই করার নেই তাদের। সুমন আলীর কফিলের সাথে যোগাযোগ করলে, তিনি তিন হাজার রিয়াল দাবী করেন। যে লোক না খেয়ে আছেন দিনের পর দিন মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন তিনি তিন হাজার রিয়াল কোথায় পাবে । প্রবাসীদের সাথে এইভাবে আচরণ করে চলছেন তিনি।

জেদ্দায় সফররত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিশেষ অতিথি ব্যক্তি (ভিআপি) এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের যথাযথ প্রটৌকল প্রদান করে বরং তাদেরকে বিভিন্ন তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা, অসম্মান করা তার নিত্য নৈমিত্তিক কাজ হয়ে দাড়িয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সহধর্মীনি ও তার পরিবারবর্গ পবিত্র হজ্জ পালনের জন্য জেদ্দায় আসলে কাউন্সেলর আমিনুল মাননীয় মন্ত্রীর পরিবারের ভিসা নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করেন, তার ভাষ্য ছিল লেবার ভিসায় আসছে তার আবার কিসের প্রটোকল কোন গাড়ী, কোন লোক কিছুই দেয়া হবে না এমনকি তিনি মন্ত্রীর পরিবারের সাথে একবার দেখা পর্যন্ত করে নাই। এছাড়া মন্ত্রণালয়/বিএমইটি কর্মকর্তঅরা সফরে গেলে তিনি সৌজন্যমূলক স্বাক্ষাৎও করতে চান না, বরং তাদের বিষয়ে নানা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য মন্তব্য করে থাকে। কনস্যুলেটের গাড়ি থাকা স্বত্ত্বেও তিনি তা সরবরাহ করেন না।

জনাব আমিনুল ইসলাম জেদ্দা কনস্যুলেট কর্মচারী, কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক এবং সাধারণ প্রবাসীদের সাথে চরম দুরব্যবহার করে আসছেন। কনস্যুলেটের কর্মচারীদের যখন তখন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন, বাবা-মা তুলে গালি দেন, চাকুরিচ্যুত করার ভয় দেখান এমনকি তোর বাব কয়টা বলে প্রায়শই কর্মচারীদের গালিমন্দ করে। চেয়ারতুলে মারতে যায়। অসহায় কর্মচারীরা চাকুরী হারানোর ভয়ে নিরবে কস্ট যাতনা সহ্য করে যাচ্ছে।

জনাব আমিনুল ইসলাম সরকারী গাড়ি ও ড্রাইভার তার ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত করেছেন। তার সন্তানদের স্কুলে আসা যাওয়া এবং পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণের জন্যই এই গাড়িটি ব্যবহৃত হয়। সরকারী কোন কাজে এ গাড়ি তিনি ব্যবহার করতে দেন না। এমনকি গাড়ি স্ট্যান্ড বাই থাকার পরও কর্মচারীরা ট্যাক্সি ভাড়া করে সরকারী কাজ সম্পাদন করে থাকে। বিষয়টি কনস্যুলেটের কর্মকর্তা কর্মচারীসহ সকলেরই জানা । কাউন্সেলর আমিনুল জেদ্দা হতে ১২০০ কিঃ মিঃ দুরবর্তী স্থানে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অবকাশ যাপনের জন্য তিনি এ গাড়ি ব্যবহার করেন। এতে সরকালি লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় হচ্ছে।

বাংলাদেশী প্রবাসীদের সাথে ও তিনি দুরব্যবহার করে এবং কাজে অসহযোাগিতা করা তার জন্য কোন ব্যাপার নয়। তাছাড়া অনেক প্রবাসী সেবাপ্রার্থীদের তিনি গালিগালাজ করে থাকেন এবং তাদের গায়ে হাত তুলতে তিনি উদ্যত হন। সম্প্রডু জেদ্দা শহরে এক দুর্ঘটনায় ৫ জন প্রবাসী মৃত্যু ঘটে। এর ভিতরে মনির হোসেন নামে মৃত্যের ভাই তার দপ্তরে গেলে তাকে ধাক্কা দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেয় এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে বলে আমাদের কাছে এসে অফিযোগ করে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন ভাই আপনারাত প্রবাসীদের সেবা করছেন আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। এমনকি ৫ জনের ভিতরে চারজনের লাশ সরকারি খরচে দেশে প্রেরণের ব্যবস্থা করেছে মনিরের লাশ দেশে প্রেরণের জন্য গড়িমসি করছে।

মহিলা গৃহকর্মীদের প্রতি চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ করে থাকেন। অসহায় ও নির্যাতিত কোন গহকর্মী কনস্যুলেটে আসলে তাদের প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রকাশ করেন তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন। জেদ্দাস্থ কনস্যুলেটে ৫ কক্ষ বিশিষ্ট সেফ হোম থাকার পরে তিনি প্রায়ই কনস্যুলেটে সাহায্যের জন্য আসা গৃহকর্মীদের রাস্তায় ফেলে আসার জন্য কর্মচারীদের নির্দেশ প্রদান করেন। এতে বিপদগ্রস্ত গৃহকর্মীরা আরো বিপদে পড়ে। বাধ্য হয়ে অনেকেই জীবনের অনিশ্চয়তা কারণে মানসিকভাবে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।

উল্লেখ্য, সৌদি আবের বাস্তব পেক্ষাপট বিবেচনা করে ২০১৬ সালে মদিনায় একটি সেফ হোম চালু করার জন্য মন্ত্রণালয় হতে অনুমোদন দেয়া হয়। বাজেট ও জনবল প্রদান করা হয়। এর প্রেক্ষিতে মান্যবর রাষ্ট্রদূত বার বার তাগাদা দেয়ার পরও কাউন্সেলর আমিনুল মদিনায় সেফ হাউজ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে অনিহা প্রকাশ করে আসছেন। মান্যবর রাষ্ট্রদূত বার বার বলার পরও যখন সেফ হোম প্রতিষ্ঠা হচ্ছিল না মান্যবর রাষ্ট্রদূত বাধ্য হয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বরাবর পত্র প্রেরণ করেন এবং সচিবের সাথে টেলিফোনে সেফ হোম স্থাপনের বিষয়ে কথা বলেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব নির্দেশনা দেয়ার পরও আমিনুল সাহেব সচিবের কথা না শুনে তিনি তার একরোখা স্বভারে উপর অটল রয়েছেন এবং এখন পর্যন্ত মদিনায় সেফ হোম স্থাপনের বিষয়ে তিনি কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি।

এমতাবস্থায়, এ ধরনের বদমেজাজী, একরোখা ও অসাধু কর্মকর্তার দ্বারা প্রবাসীদের দূর্ভোগ বাড়ানো ও বিদেশের মাটিতে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বিধায় অতি দ্রুত এ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারপূর্বক তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা খুবই প্রয়োজন।