উন্নত দেশের রূপান্তরের জয়যাত্রা চালিয়ে যেতে হবে

0
72

নগর ভবন চত্বরে স্বাধীনতা উৎসবের স্মৃতিচারণানুষ্ঠানে প্রফেসর ড. আবুল কাশেম

কক্সবাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আবুল কাশেম বলেছেন, ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়। এই অর্জনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই সত্যকে যে অস্বীকার করে সে বিশ্বাসঘাতক, বেইমান ও মীর জাফর। তিনি আরো বলেন, বাঙালিরা বীরের জাতি। যাঁরা মহান ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রাণ দিয়ে ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এই জাতির প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। গতকাল ৩০ মার্চ শুক্রবার বিকেলে নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ নগর ভবন চত্বরে স্বাধীনতা উৎসব উদ্যাপন পরিষদ আয়োজিত দ্বিতীয়দিনে স্বাধীনতার মঞ্চে স্মৃতিচারণানুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রফেসর ড. আবুল কাশেম একথা বলেন। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর এখন আর পিছিয়ে থাকা নয়, এবার ভারসাম্যের দিকে যাত্রা, উন্নয়নের জয়রথে চেপে উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশের রূপান্তরের জয়যাত্রা চালিয়ে যেতে হবে। আশকরি, জাতি ৭১ এর মতো এই অভিযাত্রাতেও তাদের যোগ্য নেতাকে বেছে নিতে পারবে। অতীতে যে সব চ্যালেঞ্জ নিয়ে তাতে সফল হতে ভুল করেননি দেশবাসী। আমি নিশ্চিত এবারও ভুল হবে না। সাফল্যের বন্দরে যথাসময়ে নোঙর করবে দেশ। মুখ্য আলোচকের ভাষণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সাবেক ডীন প্রফেসর ড. জাকির হোসেন বলেন, ১৯৭১ এর ২৫ মার্চের বিভীষিকাময় রাতে পাকিস্তানী বাহিনীর অস্ত্রের মুখে স্তব্দ করে দিতে চেয়েছিল বাঙালির জাতির স্বাধীনতার আকাঙ্খাকে। কিন্তু পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে বাঙালি জাতি। তিনি আরো বলেন, ইতিহাসের নির্মম অধ্যায় হলো- স্বাধীনতা লাভের মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মাথায় পরাজিত গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করে। দেশী ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজবিুর রহমানকে হত্যা করা হয়। জেলখানায় হত্যা করা হয় জাতীয় চারনেতাকে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধগুলোর মূলে শুরু হয় কুঠারাঘাত। গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা বাঙালি জাতীয়তাবাদের শেকড় উপড়ে ফেলার নীলনকশার বাস্তবায়ন চলে কয়েক দশক ধরে। কিন্তু, স্বাধীনতার ইতিহাস নানানভাবে বিকৃত করা হয়। রাজনৈতিক পটপরির্তনে সেই ধারা থেকে বেরিয়ে এসেছে দেশ। চেষ্টা চলছে দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে নেয়ার। আশার কথা যে, আজকের তরুণরা বাংলাদেশেল শিকড়ের সন্ধান করছেন। ইতিহাসকে জেনে, ইতিহাসের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তারাই সবার আগে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। সভাপতির ভাষণে বীর মুক্তিযোদ্ধা জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আলহাজ্ব শফর আলী বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জোরালো হয়েছে। উগ্র সাম্প্রদায়িক রাজনীতি অবসানের মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনার দিকে যাত্রা করার অপেক্ষায় রয়েছে বাংলাদেশ। তিনি আরো বলেন, ইতিহাসে এমন একটি মোড়ে দাঁড়িয়ে আমাদের স্বাধীনতার মর্মবাণী পুনরুচ্চারণ করতে হবে। স্বাধীনতা মানে শুধু স্বাধীনতা থেকে মুক্তি থেকে মুক্তি নয়। স্বাধীনতা হলো স্বাধীন রাষ্ট্র-সার্বভৌমত্ব জাতি হিসেবে মাথা তুলে থাকার সব আয়োজন। স্বাধীনতা উৎসব উদ্যাপন পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী খোরশেদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত স্বাধীনতার স্মৃতিচারণানুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, সাবেক ছাত্রনেতা মুহাম্মদ লোকমানুল আলম, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মেলা পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব সুমন দেবনাথ, নগর যুবলীগ নেতা আবদুর রহমান মামুন, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল বশর, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক লায়ন দিদারুল আলম। আলোচনা সভার শুরুতে একক সংগীতানুষ্ঠান পরিবেশন করেন- বেতার টেলিভিশন ও নবপ্রজন্মের শিল্পী আকলিমা আক্তার মুক্তা, পাপড়ী ভট্টাচার্য্য। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন- চারুতা নৃত্যকলা একাডেমী, পরিবেশনায় নৃত্যশিল্পী ফজল আমিন শাওন,। যাদু প্রদর্শন করেন- খ্যাতিমান যাদুশিল্পী রাজীব বসাক। আজ ৩১ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় স্বাধীনতার মঞ্চে স্মৃতিচারণানুষ্ঠান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: সাহাবউদ্দিন, সভাপতিত্ব করবেন খ্যাতিমান চারুকলাশিল্পী দীপক কুমার দত্ত।