কারা আইএস কোথায় আইএস, হন্যে হয়ে খুঁজছি

0
67
ফাইল ছবি

ব্লগার, লেখক, প্রকাশক, অধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএসের দায় স্বীকারের খবর পাওয়া যায়।

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের নেতৃবৃন্দও বারবার বাংলাদেশে সংগঠনটি আছে বলে বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছেন। যদিও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বারবারই বলা হচ্ছে, দেশে আইএসের অস্তিত্ব নেই। সাইট ইনটেলিজেন্স পত্রিকা আইএসের বরাত দিয়ে যেসব দায় স্বীকারের তথ্য দিচ্ছে তার কোনো ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ প্রেক্ষিতে শুক্রবার (৬ মে) সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ‘দেশে আইএস আছে কি না, তা খুঁজে বের করতে সরকার ব্যাপক চেষ্টা চালাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘কারা আইএস, কোথায় আইএস তা আমরা হন্যে হয়ে খুঁজছি। কিন্তু বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আইএসের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।’

জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপির ১২তম শাহাদাত বার্ষিকীতে আয়োজিত এক স্মরণসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

‘সন্ত্রাস দমন ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপি স্মৃতি পরিষদ।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল সাম্প্রতিক লেখক-ব্লগার-অধিকারীকর্মী হত্যাকাণ্ডে উদ্বিগ্ন হয়ে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।

পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আইএস, আল-কায়েদা যে বিবৃতি দিয়েছে, তা অবিশ্বাস করার কারণ নেই।’

নিশা দেশাই আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে বাংলাদেশের জঙ্গিরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে। এটা আমরা হতে দেব না, তাদের ধ্বংস করে দেব।’

শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘কোনো হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে বলা হয় এটি আইএস ঘটিয়েছে। কিন্তু সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হন্যে হয়ে আইএস খুঁজছে। গোয়েন্দা সংস্থা এখনও তাদের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি।’

দেশে যেসব গুম-খুন, টার্গেট কিলিং হচ্ছে তার অধিকাংশের রহস্যই উদঘাটিত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। স্পষ্টভাবে তিনি বলেন, ‘এ সমস্ত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র জড়িত।’

বিএনপি-জামায়াতের দিকে ইঙ্গিত করে মন্ত্রী বলেন, ‘আজ বা কালের মধ্যে এই দেশবিরোধী সন্ত্রাসী ও ষড়যন্ত্রকারী অপশক্তি গড়ে ওঠেনি। দেশের স্বাধীনতারবিরোধী এই অপশক্তি অনেক আগে থেকেই আছে। আর এ সন্ত্রাসীরাই পেট্রোল বোমা মেরে, জ্বালাও-পোড়াও চালিয়ে প্রায় ৫০০ জন সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে।’ তবে সরকার কাউকেই ছাড় দিচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সভায় নিজামীর ফাঁসির রায় কার্যকর প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সর্বোচ্চ আদালত নিজামীর রিভিউ মামলা খারিজ করে দিয়ে ফাঁসির রায় বহাল রেখেছে। আইনের সব ধাপ সম্পন্ন করে এই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর দণ্ড কার্যকর করা হবে।’

মন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে জনগণ ঐক্যবদ্ধ। তাই কেউ যদি যুদ্ধাপরাধীর পক্ষ নেয় তবে জনগণ তাদের ছাড় দেবে না।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল বাতেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মুরাদ প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, আগামীকাল ৭ মে শ্রমিক নেতা, শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধা আহসানউল্লাহ মাস্টারের ১২তম শাহাদাতবার্ষিকী। এ উপলক্ষে ঢাকা-গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দুই দিনব্যাপী ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপি স্মৃতি পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন।