কুতুবদিয়া দ্বীপের শত শত পরিবার পানি বন্দি

0
146

 এস,কে,লিটন কুতুবী
কুতুবদিয়া (কক্সবাজার)

ঘূর্নিঝড় ফণী ও বৈশাখী অমাবষ্যার জোয়ারে কুতুবদিয়া দ্বীপের ৬ ইউনিয়নে ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁেধর মধ্যে ১৪ কিলোমিটার ভাঙন বাঁধ এলাকার ২০টি পয়েন্ট দিয়ে জোয়ারের নোনা পানি ডুকে শুক্র ও শনিবার দুপরে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
এতে শত শত পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। ঐসব এলাকার নিন্মাঞ্চলের কয়েক’শ বাড়িঘর জোয়ারে তলিয়ে গেছে। পানি বন্দি ঘরবাড়ির লোকজন পাশ্ববর্তী আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কুতুবদিয়া উপজেলা প্রশাসন। বর্তমানে ২০ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।
শনিবার(০৪মে/১৯)সকালে জোয়ারের সময় সরেজমিনে গিয়ে দেখেন, বড়ঘোপ ইউনিয়নের দক্ষিণ অমজাখালী,মুরালিয়া গ্রামের এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভাঙা থাকায় ঘূর্নিঝড় ফণী‘র প্রভাবে আর অমাবষ্যার জোয়ারের নোনা পানি ডুকে ৪ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। একই ইউনিয়নের আজম কলোনী এলাকায় জোয়ারের পানিতে এক কিলোমিটার বাঁধ ভেঙ্গে ৩ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে চরধুরুং ও ফয়জনির বাপেরপাড়া,কাইছার পাড়া কুইলারটেকসহ ১৭টি গ্রাম, দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নে বাতিঘর পাড়া এলাকায় ৫টি গ্রাম , লেমশীখালী ইউনিয়নে সতর উদ্দিন পেয়ারাকাটা, নয়াকাটা, দরবার ঘাট, এলাকায় বাধঁ ভেঙ্গে ১০টি গ্রাম, কৈয়ারবিল ইউনিয়নে পরান সিকদার পাড়া, মহাজনপাড়া, মতিরবাপের পাড়া,মলনচরসহ ৮টি গ্রাম,আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নে কুমিরারছড়া জেলেপাড়া,আনিচের ডেইল,পূর্ব তাবলরচর, পশ্চিম তাবলরচর, বায়ুবিদ্যুৎ এলাকা,হায়দার বাপের পাড়া, কাহারপাড়া,কাজিরপাড়াসহ ১২ টি গ্রামে বৈশাখী অমাবষ্যার জোয়ারে পানি ডুকে প্লাবিত হয়েছে। এ জোয়ারে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। বর্তমানে এ সব এলাকার শত শত পরিবারের লোকজন গৃহহারা হয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।

কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ জাহাঙ্গির আলম চৌধূরী জানান, কয়েক দিন ধরে রৌদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলে প্রচন্ড গরম অনুভূতি হয়। গত দুই দিন ধরে ঘূর্নিঝড় ফণী’র প্রভাবে বৃষ্টিপাত আর বৈরী আবহাওয়ায় বৈশাখী অমাবষ্যার জোয়ার একত্রিত হয়ে দূর্গন্ধ ছড়াতে পারে। এ দূর্গন্ধের কারণে পানি ও বায়ু বাহিত রোগ এলাকায় ডায়েরিয়া ও চর্ম রোগ ছড়াতে পারে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেডিকেল টিম গঠন করেছে। তার সাথে প্রত্যেক কমিউনিটি ক্লিনিকে খোলা হয়েছে প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা।
পল্লী চিকিৎসক ও উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ নাজিম উদ্দিন লালা বলেন, প্লাবিত এলাকায় জোয়ারের নোনা পানি ডুকে নিত্য ব্যবহৃত পুকুরের পানির সাথে জোয়ারের নোনা পানি মিশ্রিত হলে এক ধরনের জিবানু সৃষ্টি হয়ে ভাইরাস ছড়াচ্ছে। এতে প্লাবিত এলাকার শিশু ও মানব দেহে পানি বাহিত রোগ ডায়েরিয়া দেখা দিচ্ছে।
কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপক কুমার রায় জানান,সরেজমিনে গিয়ে দেখেন যে, জোয়ারের সময় ভাঙা বাঁধ দিয়ে নোনা পানি লোকালয়ে ডুকে শত শত ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। এসব পানি সরানোর জন্য পাউবো কর্তৃপক্ষের স্লুইচ গেইট গুলো খোলে দেওয়া হয়েছে। আবার অনেক স্লুইচ গেইটে দরজা না থাকায় স্বাভাবিক জোয়ারেও এলাকায় জোয়ারের সময় নোনা জল ডুকে লোকালয় প্লাবিত হয়।
কৃষক আবু সুফিয়ান বলেন, তার ফসলের ধান আধাঁ পাকা থাকায় কেটে ঘরে উঠাতে পারেনি। হঠাৎ করে ঘূর্নিঝড় ফণী’র প্রভাবে জোয়ারে ফসলি জমিতে সয়লাব ও বাতাসের গতিবেগে পাঁকা ধান নষ্ট হয়ে গেছে। তার ফসলের চরম ক্ষতি হয়েছে।