‘ক্ষুদ্র প্রান্তিক খামারীদেরকে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা না দিলে পোল্ট্রি শিল্পে সুশাসন নিশ্চিত হবে না’

0
70

যিনি বাচ্চা উৎপাদন করেন, তিনি আবার খামার গড়ে তুলে বাচ্চা প্রতিপালন করছেন আবার যিনি মুরগীর খাবার উৎপাদন করছেন তিনিও খামার গড়ে তুলছেন। আর এরাই সময়-সুযোগ বুঝে মুরগী ও ডিমের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে ন্যায্য দামে ডিম ও মুরগী উৎপাদন ও বিপনণে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারীদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ঠি করছে। অন্যদিকে যিনি কোটি টাকা বিনিয়োগে খামার করছে তার যে রকম ট্রেড লাইসেন্স, পরিবশে ও ফায়ার ছাড়পত্র লাগছে, তেমনি ৩ লক্ষ টাকা বিনিয়োগে খামার করছে তারজন্য একই ব্যবস্থা ফলে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারীগুলি বড় উদ্যোক্তাদের সাথে উৎপাদন খরচ ও মুরগী বিক্রয় নিয়ে পেরে উঠছে না। আর গুটিকয়েক বৃহৎ পোল্টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের আগ্রাসী তৎপরতা থামাতে হলে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারীদের সরকারী প্রণোদনা দিতে হবে, না হলে পুরো দেশীয় পোল্ট্রি শিল্পের সুশাসন হুমকির মুখে পড়বে। কারন সাধারন মানুষের প্রাণীজ আমিষের সিংহভাগ পোল্ট্রি শিল্প যোগান দিচ্ছে এর মধ্যে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারীরাই মূল উৎস। এ অবস্থায় পোল্ট্রি শিল্পে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারীদের রাস্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের দাবি জানানো হয়েছে চট্টগ্রামে ক্যাব’র পোল্ট্রি সেক্টরে সুশাসন প্রকল্পের উদ্যোগে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার সাথে অনুষ্ঠিত অ্যাডভোকেসী সভায়। ইউকে এইড, বৃটিশ কাউন্সিলের সহায়তায় প্রকাশ প্রকল্পের কারিগরী সহযোগিতায় পোল্ট্রি সেক্টরে সুশাসন প্রকল্প, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম আয়োজনে ২৯ আগষ্ঠ ২০১৮ইং নগরীর খুলসীতে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রিয়াজুল হক জসিম। আলোচনায় অংশনেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, অতিরিক্ত জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সাহিদা আকতার, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব পাঁচলাইশের সেলিম জাহ্ঙ্গাীর, ক্যাব চট্টগ্রামের ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর মশিউর রহমান, পাঁচলাইশ থানা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জাকিয়া খাতুন, সিটি কর্পোরেশনের ভেটেরিনারী সার্জন ডাঃ আবুল হাশেম, ক্ষুদ্র খামারী রুখসানা আখতারুন্নবী, মোহাম্মদ জসিম, আবদুর রহিম, ক্ষুদ্র পোল্ট্রি খাদ্য বিক্রেতা মোঃ সোসলেম উদ্দীন, মোঃ রফিক প্রমুখ।

সভায় বলা হয় দেশের সাধারন মানুষের প্রাণীজ আমিষের সিংহভাগ পোল্ট্রি শিল্প যোগান দিলেও প্রাণী সম্পদ অফিসের প্রয়োজনীয় লোকবল ও লজিস্টিক সুবিধার অভাবে জনগনের কাছে এ শিল্পের বিষয়ে সঠিক তথ্য পোৗঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও কিছু মানহীন পোল্ট্রি ফিড বাজারজাত, খুচরা পোল্ট্রি বিক্রেতারা যত্রতত্র অপরিস্কারাছন্ন ভাবে পোল্ট্রি জবাই ও বিক্রি করলেও তার যথাযথ নজরদারি সম্ভব হচ্ছে না। নিরাপদ খাদ্য ও পোল্ট্রি বিষয়ে জনমনে কিছুটা বিভ্রান্তি থাকায় এখাতে উদ্যোক্তারা ন্যায্য মুনাফা হতে বঞ্চিত হচ্ছে, আবার গুটিকয়েক এ সেক্টরের যাবতীয় সুবিধা হাতিয়ে নিতে তৎপর। ফলে পোল্ট্রি শিল্পে জড়িত অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও খামারীরা খামার মাঝপথে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। আর শিল্প উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্থ হলে দেশীয় প্রাণীজ আমিষের যোগান হুমকির মুখে পড়বে। তাই দেশীয় প্রাণীজ আমিষের যোগান ঠিক রাখতে পোল্ট্রি শিল্পের সাথে জড়িত পোল্ট্রি ফিড উৎপাদক, ডিলার, খামারী ও ব্রয়লার উৎপাদকদের নিরাপদ ও মানসম্মত পোল্ট্রি খাবার, উৎপাদন, সরবরাহ এবং খুচরা পর্যায়ে লাইভ বার্ড বিক্রিতে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে মাঠ পর্যায়ে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সাধারন ভোক্তা-ক্রেতা পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কার্যক্রম জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।