চাল সংগ্রহের নামে চলছে লুটপাট, চরম দুর্নীতি

0
83

উখিয়া প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের উখিয়ায় খাদ্য বিভাগে চাল সংগ্রহের নামে লুটপাট ও দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। নিু মানের ও কম দামের চাল সংগ্রহ করে প্রায় ৫লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা। ব্যাপক অনিয়ম ও দূনীতির তদন্ত করলে নিু মানের চাল খাদ্য গুদামে সনাক্তকরা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় সুশীল সমাজ। ইতিপূর্বেও ২০১৩ সালে চাল সংগ্রহে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় খাদ্য অধিদপ্তর উখিয়ার ৬জন রাইচ মিলের মালিকদেরকে কালো তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করে ছিল বলে দায়িত্বশীল সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। জেলা খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে খাদ্য অধিদপ্তর সারা দেশে অভ্যন্তরীন বোরো চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু করে। বাজার দাম স্থীতিশীল ও কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত এবং আপতকালীন খাদ্য সংকট মোকাবেলা করার লক্ষ্যে মূলত চাল সংগ্রহ কর্মসূচী চালু করা হয়। প্রতি কেজি চাল ৩১ টাকা হারে সরকার মিলারদের কাছ থেকে এ চাল ক্রয় করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ, উখিয়ায় এবারে ১ হাজার ৬২৮ মেট্টিক টন চাল সংগ্রহ করার লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারন কার হয়েছে। ৬জন রাইচ মিল মালিক বা মিলারগণ উক্ত চাল সরবারাহ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। চলতি আগষ্ট মাসে শুরু হওয়া প্রথম পর্যায়ে ৮১৪ মেট্টিক টন চাল ইতিমধ্যে খাদ্য গুদামে সরবরাহ করা হয়েছে। অবশিষ্ট চাল দ্বিতীয় পর্যায়ে সংগ্রহের কাজ চলছে। গুরুতর অভিযোগ উঠেছে উখিয়া খাদ্য পরিদর্শক (ওসিএলএসডি) সুনিল দত্তের সাথে মিলার গণ গোপন আতাঁতের মাধ্যমে নিুমানের ও কম দামের চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রতি কেজি ৫ টাকা হারে উৎকোচ গ্রহন করছে খাদ্য পরিদর্শক সুনিল দত্ত। এবারে প্রায় ৫ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকার চাল সংগ্রহের নামে খাদ্য অধিদপ্তর সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা উৎকোচ বানিজ্যে নেমে পড়েছে। বিশাল অংকের এই উৎকোচ বানিজ্যে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য অধিদপ্তরসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট ভাগ বাটোয়ারা অনুযায়ী বন্ঠন করা হয়।
অনেকেই অভিযোগ করে জানিয়েছেন, চুক্তিবদ্ধ মিলার নয় এমন ব্যক্তি ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে নিুমানের চাল খাদ্য গুদামে সরবরাহ করছে। বিতর্কিত আব্দুর রহিম নামক ওই ব্যাক্তি খাদ্য গুদামে জোর পূর্বক চাল প্রদানকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। উখিয়া আওয়ামীলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল মনছুর চৌধুরী বলেন, খাদ্য মন্ত্রনালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করে মিলারগণ ধান চালে রূপান্তর করে খাদ্য গুদামে সরবরাহ করার কথা থাকলেও এক মুঠো বা এক কেজি ধান বা চাল কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করেনি। বর্তমান সরকার যে মহৎ উদ্দেশ্যে চাল সংগ্রহ অভিযান কর্মসূচী হাতে নিয়েছিল খাদ্য বিভাগের অনিয়ম ও দুনীতির কারনে তা ভেস্তে যেতে বসেছে। মিলার গণ উত্তর বঙ্গ হতে নিু ও কম দামের চাল ক্রয় করে তা আবার খাদ্য গুদামে সরবরাহ করায় এখানকার প্রান্তিক চাষীরা তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, কক্সবাজার খাদ্য অধিদপ্তরের খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ তানভীর হোসেন বলেন, খাদ্য মন্ত্রনালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী ১৪% ভাগ আর্দ্রতা এবং গুনগত মান সম্পন্ন চাল সরবরাহ করার বিধান রয়েছে। কোন অবস্থাতে নিুমানের ও কমদামের চাল খাদ্য গুদামে মজুদ রাখার কোন সুযোগ নেই। সচেতন মহলের অভিযোগ উখিয়ায় চাল সংগ্রহের নামে নিুমানের চাল দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার ভাগ বাটোয়ারা করে আসছে। এদিকে লুটপাট ও ভাগ বাটোয়ারার কথা অস্বীকার করে উখিয়া খাদ্য পরিদর্শক সুনিল দত্ত বলেন, গুনগত মান সম্পন্ন চাল সংগ্রহ করে গুদামে মজুদ করা হয়েছে। তবে সচেতন মহল খাদ্য গুদামে মজুদকৃত নিুমানের চাল তদন্ত করে জব্দ করার জন্য খাদ্য মন্ত্রীর নিকট দাবী জানিয়েছেন।