‘গণতন্ত্র অভিযাত্রা’ অংশ নিতে বিচ্ছিন্নভাবে চট্টগ্রাম ছাড়ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা

0
104

bnp-flag বিএনপিবিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার ডাকা রোববারের ‘গণতন্ত্র অভিযাত্রা’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে দলবদ্ধভাবে নয় বিচ্ছিন্নভাবে চট্টগ্রাম ছাড়ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
সরকারের দমন-পীড়নের কারণে কর্মসূচিতে অংশ নিতে দলের পক্ষ থেকে এই ‘কৌশল’ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।

ঢাকা অভিমুখে যাত্রার আনুষ্ঠানিক আয়োজন না থাকলেও প্রচারণার অংশ হিসেবে বন্দর নগরীতে শুধুমাত্র লিফলেট বিতরণ চোখে পড়েছে।

বিএনপি নেতারা জানান, দলের চেয়ারপারসন কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকেই দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ব্যক্তিগতভাবে ট্রেন-বাসে করে চট্টগ্রাম ছাড়ছেন। ঢাকায় একত্রিত হয়ে গণতন্ত্রের অভিযাত্রার এ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের একাধিক নেতা বলেছেন, সরকারের দমননীতির কারণে জোটবদ্ধ হয়ে যাওয়া হচ্ছে না। দলের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদের নিজ উদ্যোগে ঢাকায় চলে যেতে বলা হয়েছে।

খালেদা জিয়ার ডাকে দলের তৃণমূলের কর্মীরা ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি‘তে অংশ নিতে চাইলেও নেতাদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা না পাওয়ার তাদের মধ্যে হতাশা দেখা গেছে।

এছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে দলের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতার গ্রেপ্তার হওয়ায় এবং অনেকেই গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে থাকায় ঢাকার কর্মসূচি নিয়ে চট্টগ্রামে জোর প্রচারণা নেই বলে মনে কর্মীরা।

দল ছাড়াও ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও শ্রমিক দলসহ অধিকাংশ সহযোগী সংগঠনের কর্মীরা স্থানীয় নেতাদের নির্দেশনা নিয়ে দলীয়ভাবে কর্মসূচিতে অংশ নিতে চাইলেও তা হচ্ছে না।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর নাসিমন ভবন ও কাজীর দেউরী এলাকায় ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসির সমর্থনে বিএনপি’র নেতারা লিফলেট বিতরণ করেছে।

মামলা মাথায় নিয়ে প্রায় এক মাস ধরে আত্মগোপনে থাকা নগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেনকেও লিফলেট বিতরণে দেখা গেছে।

চট্টগ্রামের বিএনপি নেতাদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খোন্দকার ও যুবদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আবুল হাশেম বক্করসহ আরো অনেকে।

নেতাদের আত্মগোপন ও গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রামে থেকে নিয়মিত মিছিল সমাবেশে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি চট্টগ্রাম কর্মসূচিতে যাওয়ার বিষয়টি দেখভাল করছেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে তিনি বলেন, “যে কোনো পরিস্থিতিতে যে কোনোভাবে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার গণতন্ত্র যাত্রার কর্মসূচিতে অংশ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে।

“দেশের পরিস্থিতি ও বিরোধী দলের প্রতি সরকারের দমন-পীড়ন বিবেচনায় কৌশলে চট্টগ্রাম ছাড়ার প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা। সেইভাবেই নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় নেতাদের সাথে সমন্বয় করে ঢাকা যাবার কথা বলা হয়েছে।’’

ঢাকার কর্মসূচিতে যোগ দিতে অনেকেই ইতিমধ্যে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে জানিয়ে নোমান বলেন, “হাজার হাজার লোক ঢাকায় যাবার জন্য মুখিয়ে আছে। সরকারি বাধা আছে, হয়তো সবাইকে নিয়ে যাওয়া যাবে না। বাস-ট্রেনে করে অনেকেই নিজ উদ্যোগে গেছে, যাচ্ছে এবং যাবে।’’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিএনপি নেতা বলেন, “কেউ কেউ গেলেও তা সংখ্যায় খুব কম।’’

ঢাকার কর্মসূচিতে অংশ নেয়া প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের সভাপতি গাজী সিরাজ বলেন, “ছাত্রদলের ছয় থেকে সাতশ জন নেতাকর্মী ঢাকায় যাচ্ছে।”

সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে একশ জনের একটি দল ইতিমধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছে দাবি করে তিনি বলেন, “অনেকের বিরুদ্ধে মামলা আছে এবং প্রায় দুইশ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার রয়েছেন। নানা কারণে ঢাকা যাওয়া এখন কষ্টসাধ্যও।”