আমাদের দেশের বিভিন্ন জেলায় সুস্বাদু ও মজাদর গুড় ও পাটালি তৈরি করা হয়। যেমন-মাদারীপুরের মুছি পাটালি, ফরিদপুরের নলেন গুড় আর যশোর (খাজুরার) রস পাটালির সুনাম সারা বাংলাদেশে। এ দেশে আখ, তাল ও খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরি করা হয়। আগে আমাদের দেশে হাত যন্ত্রের সাহায্যে আখ থেকে রস বের করা হতো। কিন্তু বর্তমানে মেশিনের সাহায্যে আখ থেকে রস বের করে আখের গুড় তৈরি করা হয়। তবে তাল ও খেজুরের রস আহরণের জন্য এমন কোনো যন্ত্র ব্যবহৃত হয় না। আমাদের দেশে শীতকালে খেজুরগাছ বিশেষ পদ্ধতিতে কেটে রস সংগ্রহ করা হয়। যিনি খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করেন তাকে আমরা প্রচলিত ভাষায় গাছি বলে থাকি। খেজুরের রস সংগ্রহ করা হয় ছোট মাটির কলসিতে। গাছি বিকালে খেজুর গাছে রস সংগ্রহ করার জন্য কলসি বেধে রেখে আসেন এবং তা সকালে সংগ্রহ করেন। আর গরমকালে পুরুষ তালগাছের জটা কেটে রস সংগ্রহ করা হয়। এই রস জ্বাল দিয়ে ঘন করে গুড় বানানো হয়। গ্রাম অঞ্চলে রস জ্বাল দেওয়ার পাত্র হিসাবে রসের পরিমাণ অনুযায়ী তাপাল ব্যবহার করা হয়। গাছ কাটার প্রথম দিনের টাটকা রস থেকে উন্নত মানের গুড় ও পাটালি তৈরি হয়। দোকাট ও তেকাটের রস থেকে তৈরি হয় ঝোলা গুড়। সাধারণত এ গুড়ে তেমন দানা থাকে না, পাতলা ও আঠালো হয়। ঝোলা গুড় মুড়ি দিয়ে মেখে ও চিতোই পিঠা দিয়ে খেতে বেশ মজা লাগে। অন্য দিকে পাটালি হয় শক্ত, পাতের মতো ও সুঘ্রাণযুক্ত। আমাদের দেশে গুড় বেশি ব্যবহার হয় পিঠা তৈরিতে।