চট্টগ্রামে বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়ী মুক্ত দিবস উদযাপন

0
64

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

যানজটমুক্ত নগরি প্রতিষ্ঠায় সপ্তাহে একদিন ব্যক্তিগত গাড়ী মুক্ত দিবস ঘোষনা ও গণপরিবহনে আধুনিকায়ন দাবি
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যানজট মুক্ত রাখতে সপ্তাহে একদিন ব্যক্তিগত গাড়ী মুক্ত রাখা হয়। সরকার যানজট কমানো ও সরকারী ব্যয় কমাতে সরকারী ছুটি দুই দিন ঘোষনা করলেও সমাধান আসেনি। তার মূল কারণ পুরো সড়ক জুড়ে ব্যক্তিগত গাড়ীর আধিক্য এবং গণপপরিবহনে বেহাল দশা। লক্কর-ঝক্কার বাসগুলির কারনে গণপরিবহনে যাতায়ত করা কঠিন। অন্যদিকে বাস শ্রমিক ও মালিকদের স্বেচ্ছাচারী ও অমানবিক আচরণের কারনে যাত্রী বিশেষ করে নারী যাত্রীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। প্রতিনিয়তই বাস শ্রমিক ও মালিকদের অমানবিক আচরনে সাধারন যাত্রীরা অসহায় ও জিম্মি। চলন্ত বাসে ধর্ষন ও চট্টগ্রামের একজন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দূর্ঘটনায় নিহত হলে তার পরিচয় মুছে ফেলতে মুখমন্ডল থেতলে বিকৃত করে দেবার মতো ঘটনা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। নারী যাত্রীরা প্রতিনিয়ত যৌন হয়রানি, ধর্ষন ও নানা সহিংষতার শিকার হচ্ছে। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত, কলকারখানা বিভিন্ন জায়গায় যাতায়তে ব্যক্তিগত গাড়ীর ব্যবহার বাড়ছে। যার ফলশ্রুতিতে যানজটে আকাল পুরো নগরজীবন। ঘন্টার পর ঘন্টা শ্রম ঘন্টা যেমন নষ্ঠ হচ্ছে, তেমনি নির্ধারিত সময়ে মানুষ গন্তব্যে পৌঁছতে পারছে না। এ অবস্থায় পৃথিবীর উন্নত দেশের আদলে সপ্তাহে একদিন ব্যক্তিগত গাড়ী মুক্ত রাখা, গণপরিবহনগুলির আধুনিকায়ন, যাত্রীদের প্রতি মর্যদাপূর্ন আচরন ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের উদ্ধুদ্ধকরণ করার দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত র‌্যালী ও মানববন্ধনে। ১৯ জুন ২০১৯ইং নগরীর রউফাবাদ কলোনীর চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়কে আইএসডিই বাংলাদেশ এর উদ্যোগে কার ফ্রি এলায়েন্স বাংলাদেশ ও ইনস্টিটিউট অব ওয়েল বিং এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও র‌্যালীতে ক্যাব পাঁচলাইশের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে ও ক্যাব বিভাগীয় সংগঠক জহুরুল ইসলামে সঞ্চালনায় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সমাজ সেবা কর্মকর্তা নবিউল ইসলাম, ক্যাব মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক জানে আলম, ক্যাব যুব গ্রুপের সভাপতি চৌধুরী কে এনএম রিয়াদ, আইএসডিই বাংলাদেশের রহিমা আখতার, ক্যাব চান্দগাঁওয়ের সেলিম সাজ্জাদ, ক্যাব পাঁচলাইশের সেলিম জাহাঙ্গীর, ক্যাব ডিপিও শাম্পা কে নাহার, জেড এইচ শিহাব, শাকিল আহমেদ মুন্না, জাবেদ আলম শাহীন, রেশমী আখতার, মুক্ত শেখ মুক্তি, দীপ্ত ঘোষ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন প্রতিদিন যানজটের কারণে হাজার হাজার ঘন্টা অপচয়ের ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যহত হচ্ছে, আমাদের পরিবার বা পরিচিতজনদের মধ্যে কেউ কেউ সড়ক দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। সময় অপচয়ের কারণে অনেকেই পরিবারের সদস্যদের সময় দিতে পারছে না। নেই অবসর-বিনোদনের জন্য যথেষ্ট সময়। যানজটে বসে থাকা যানবাহনগুলিতে পুড়ছে মূল্যবান জ্বালানী। যানবাহন হতে নির্গত বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ মারাত্মক দূষণ সৃষ্টি করছে। প্রচন্ড শব্দ ও বিষাক্ত ধোঁয়ায় মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন জটিল রোগে। রাজধানী ঢাকায় প্রতিদিন ৩২ লাখ কর্ম ঘন্টা নষ্ঠ হচ্ছে। যার বাৎসরিক ক্ষতির পরিমান প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এভাবে চলতে থাকলে ২০২৫ সাল নাগাদ যানবাহনের গড় গতি দাড়াবে ঘন্টায় ৪ কিঃমি। যান্ত্রিক যানের আধিক্যের কারনে বায়ু দুষণ, শব্দ দূষণ, সময় অপচয়, খোলা জায়গার সংকট এবং সড়ক দুর্ঘটনার পরিমান দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অবস্থা যদি আমাদের নগর জীবনে হয় তাহলে আগামী প্রজন্মের জন্য সুন্দর ও নিরাপদ নগরী বির্নিমান, শুধু অসম্ভব নয় কল্পনা ছাড়া কিছু হবে না। অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন শহরে বিআরটিসির বাস থাকলেও চট্টগ্রাম নগরীতে লক্কর যক্কর বাসের কারনে ব্যক্তিগত গাড়ী ব্যবহারের প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। এছাড়াও বৃহৎ শিল্প ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির নিজস্ব বাস সার্ভিস না দিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ী ব্যবহারকে উৎসাহিত করছে। ফলে যানজট প্রতিনিয়তই বাড়ছে। অন্যদিকে সকাল বেলায় অফিস ও গন্তব্যে যাত্রায় ও সন্ধ্যায় ফিরতে গণপরিবহনের বাসগুলিতে তীব্রসংকট তৈরী করে। তাই সাধারন জনগনসহ যাত্রীদের জন্য নিরাপদ চলাচল ও নগরী প্রতিষ্ঠায় গণপরিবহনের আধুনিকায়ন জরুরী। একই সাথে ব্যক্তিগত গাড়ী পরিহারে জনগনকে উদ্বুদ্ধকরণ করা প্রয়োজন।