চট্টগ্রাম বহু আগে থেকেই শিল্প-সাহিত্যের তীর্থ

0
210

খ্যাতিমান সমাজবিজ্ঞানী ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন বলেছেন, চট্টগ্রাম বহু আগে থেকেই শিল্প-সাহিত্যের তীর্থ হিসেবে পরিচিত। লেখকরা প্রত্যেকেই দায়বদ্ধতা থেকেই শিশুসাহিত্য চর্চা করছেন। সভ্যতা সংস্কৃতি ও মানবমনের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখছে শিশুসাহিত্য।

ছড়া ও শিশুসাহিত্যের রাজধানী হিসেবে সমাদৃত চট্টগ্রামে বাংলাদেশ শিশুসাহিত্য একাডেমি আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ছোটোদের বইমেলা ও শিশুসাহিত্য উৎসবের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টম্বর)  বিকেলে এমএম আলী সড়কের চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির মুক্তমঞ্চে বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন নয়জন শিশুসাহিত্যিক। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল  থেকে আসা নবীন-প্রবীণ কবি, গল্পকার, ছড়াকার, চিত্রশিল্পী, আবৃত্তিকার ও সংস্কৃতিকর্মীদের অংশগ্রহণে প্রাণের মেলায় পরিণত হয়  এ উৎসব।

অধ্যক্ষ ড. আনোয়ারা আলমের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিশুসাহিত্য একাডেমির পরিচালক রাশেদ রউফ।

আলোচক ছিলেন নগর পরিকল্পনাবিদ পুলক কান্তি বড়ুয়া। বিশিষ্ট বাচিকশিল্পী আয়েশা হক শিমুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বরচিত লেখা পাঠ করেন উত্তম সেন, বিপুল বড়ুয়া, দীপক বড়ুয়া, এমরান চৌধুরী, উৎপলকান্তি বড়ুয়া, সৈয়দ খালেদুল আনোয়ার, জসীম মেহবুব, মাহবুবুল হাসান ও অরুণ শীল। আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী সাবরিনা শারমিন।

ড. অনুপম সেন বলেন, শিশুমানস অসাধারণ। তারা যেমন সুন্দর, তাদের মনও সুন্দর। শিশুদের কল্পনার জগৎ অনেক বিস্ময়ের এবং আনন্দের। তারা সব বিস্ময়ে বিস্মিত হয়। শিশুদের কল্পনার রাজ্য অনেক বিস্তৃত। তারা ধারণ করে বিশালতা। যারা শিশুসাহিত্য চর্চা করেন তারা শিশুমনকে উপলব্ধি করতে পারেন। শিশুমনকে ধারণ করে তারা যে কবিতা লেখেন সেই কবিতাগুলো সব বয়সী মানুষের মনে শৈশবের স্মৃতিকে প্রচণ্ড রকম নাড়া দেয়। আমরা কবিতার পঙক্তিতে, ছন্দে-আনন্দে ফিরে যাই আনন্দের শৈশবে।

কবি রাশেদ রউফ বলেন, একসময় চট্টগ্রামকে বলা হতো ছড়ার রাজধানী। এখন ছড়ার সঙ্গে শিশুসাহিত্যের রাজধানীও বলা হয়। শিশুসাহিত্যের নানা মাধ্যমে চর্চা করে যাচ্ছেন চট্টগ্রামের শিশুসাহিত্যকরা। নানা উৎসব আয়োজনে, সংকলন প্রকাশ ও সাহিত্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের শিশুসাহিত্য চর্চা অব্যাহত রয়েছে। তবে আমাদের এ চর্চা আরও বাড়ানো দরকার।

আনোয়ারা আলম বলেন, আমাদের শিশুরা ভালো নেই। তারা নানাক্ষেত্রে নিপীড়িত। আমরা যেভাবে শৈশব কাটিয়েছি আজকে শিশুরা সে রকম শৈশব পাচ্ছে না। তারা আজ ফ্ল্যাটে বন্দী।

সন্ধ্যায়  ‘ছোটদের বইমুখী করতে অভিভাবদের দায়িত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর রীতা দত্ত। আলোচক ছিলেন প্রাবন্ধিক সেলিম সোলায়মান, আমিনুর রশীদ কাদেরী, মুহাম্মদ মুসা খান, নেছার আহমদ, ডা. কল্যাণ বড়ুয়া, রেজাউল করিম স্বপন, গল্পকার বিচিত্রা সেন ও মোহাম্মদ মাজহারুল হক।

শুক্রবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে লেখা পাঠ। এতে সভাপতিত্ব করবেন মৃণালিনী চক্রবর্তী। এরপর ‘আমার বই’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মর্জিনা আখতার। বিকেল ৪টায় থাকবে লেখা পাঠ। এতে সভাপতিত্ব করবেন দীপালী ভট্টাচার্য। পরে অনুষ্ঠিত হবে ‘ছোটোদের বইয়ের প্রকাশনা: সংকট ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার। অধ্যক্ষ তহুরীন সবুর ডালিয়ার সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি থাকবেন কবি  আবুল মোমেন। মূল প্রবন্ধ পড়বেন ড. আহমেদ মাওলা। আলোচক থাকবেন মোস্তফা হোসেইন, অভীক ওসমান, হাসনাত আমজাদ, স ম শামসুল আলম, পাশা মোস্তফা কামাল, কামরুজ্জামান কাজল।