চান্দগাঁও এ হচ্ছে এশিয়ার বৃহত্তম কসাইখানা

0
223

চট্টগ্রামে হচ্ছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় এবং সর্বাধুনিক কসাইখানা। ৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর পুরাতন চান্দগাঁও থানা এলাকায় এই কসাইখানা নির্মিত হবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৮৮ শতক জায়গায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আর্থিক সহযোগিতায় দেশের এই সর্বাধুনিক কসাইখানা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। আজ শনিবার বিকেলে টাইগারপাস সিটি মেয়রের কার্যালয়ে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সাথে প্রকল্প পরিচালক এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন এ বিষয়ে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানা যায়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দৈনিক বীর চট্টগ্রাম মঞ্চ সম্পাদক সৈয়দ উমর ফারুক, চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম, সিটি মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাসেম, জেলা প্রাণি সম্পদ অফিসার মো. রেয়াজুল হক প্রমুখ। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের লাইভস্টক অ্যান্ড ডেইরি ডেভলপমেন্ট প্রজেক্টের (এলডিডিপি) আওতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।
মতবিনিময় কালে সিটি মেয়র বলেন, চট্টগ্রামে একাধিক কসাইখানা আছে। তবে মানসম্মত কোনো কসাইখানা নেই। অথচ আইনে স্বাস্থ্যকর কসাইখানায় পশুর জবাইয়ের ব্যাপারে বাধ্যবাদকতা আছে। তারপরও নগরে নির্ধারিত চসিকের কসাইখানায় পশু জবাই না করে যত্রতত্র পশু জবাই করা হয়। পশু জবাই এর শৃংখলা আনায়ন ও পরিবেশ রক্ষায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় চট্টগ্রামে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এই কসাইখানা নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহন করেছে। এই জন্য সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি নগরীতে পশু জবাই ব্যবস্থাপনায় শৃংখলা আনায়নের লক্ষ্যে সময়ে অসময়ে প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা কামনা করেন। তারই ফলশ্রুতিতে নির্মিত হতে যাচ্ছে এশিয়ার বৃহত্তম আধুনিক কসাইখানা। এ কসাইখানার জন্য ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অক্টোবর মাসে কসাইখানা নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে মেয়র আশাবাদ ব্যক্ত করেন। দ্রুত ও যৌক্তিক সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা কামনা করেন মেয়র।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন বলেন চট্টগ্রাম মেয়র কসাইখানা নির্মাণে জায়গা দিয়েছেন। মেয়র এইটা করেছেন চট্টগ্রাম বাসীর কল্যাণের জন্য। চট্টগ্রাম এ ক্ষেত্রে পাইওনিয়ার হবে। প্রকল্পে কনসালটেন্ট নিয়োগ হয়েছে। ড্রয়িং ডিজাইনের কাজ চলছে। অক্টোবরে কার্যাদেশ হবে তিনি আশা করেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, মোট প্রকল্প ব্যয় ৪ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। চট্টগ্রামে খরচ হবে ৮৮ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে ১ ঘণ্টায় একসঙ্গে ১০০ পশু জবাই করা সম্ভব হবে। অপেক্ষায় রাখা যাবে ৩০০ পশু। যততত্র পশু জবাই করলে রোগ ছড়ায়। কসাইখানায় যোগ্য পশু জবাই করা হবে। জবাই ছাড়া সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। পশুর রক্তকে পোলট্রি ফিডে রূপান্তর করা হবে এবং অন্যান্য বর্জ্যগুলোও রিসাইক্লিং করা হবে। এটি হেলদি, হাইজিনিক ও পরিবেশবান্ধব প্রতিষ্ঠান হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আধুনিক কসাইখানাকে ঘিরে নগরীতে গবাদি পশু সংক্রান্ত একটি বড় মাপের ইনস্টিটিউশন গড়ে তোলা হবে। এতে থাকবে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা, আইসোলেশন, স্মার্ট স্টকিং স্পেস সুবিধা, প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা, রক্ত ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট শৃংখলা, এছাড়াও এ প্রকল্পের আওতায় ৫ তলা বিশিষ্ট ভবন ও জবাই এরিয়া করা হবে। পশুর নাড়িভূড়িসহ শিং ফেলে না দিয়ে বিদেশে রপ্তানির ব্যবস্থা থাকবে এই কসাইখানার আওতায়। এখানে পশু জবাই করার আগে একজন চিকিৎসক সে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখবেন। জবাই এর পর এর মাংসও পরীক্ষা করা হবে। মতবিনিময় শেষে সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রাণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন প্রস্তাবিত আধুনিক কসাইখানার স্থান পরিদর্শন করেন। চান্দগাঁওস্থ কসাইখানার এই জায়গায় পৌছলে স্বাগতিক কাউন্সিলর মো. সাইফুদ্দিন খালেদ সাইফু অতিথিদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। পরে অতিথিরা জায়গা সার্বিক অবস্থা সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করেন। জনাব ওয়াছি উদ্দিন প্রস্তাবিত কসাইখানা স্থান দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এ ব্যাপারে তিনি সিটি মেয়রের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।