‘চামড়া সন্ত্রাস’ ঠেকাতে মাঠে পুলিশ-র‌্যাব

0
98

চট্টগ্রামে এ বছর ঈদুল আজহায় ৫ লাখ পশু কোরবানি দেওয়া হচ্ছে। এবার বৃহত্তর চট্টগ্রামে কোরবানির ঈদ-পরবর্তী চামড়ার হাটে প্রায় ৮০-৯০ কোটি টাকার চামড়া বেচাকেনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে চামড়ার এ দাম পান না কোরবানিদাতারা। প্রতিবছর ট্যানারির নির্ধারণ করে দেয়া দামের চেয়ে অনেক কমদামে ক্ষেত্র বিশেষে নামেমাত্র টাকা গুঁজে দিয়ে চামড়া নিয়ে যান সন্ত্রাসীরা। তবে এবার চট্টগ্রামে ‘চামড়া সন্ত্রাস’ ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নিয়ে মাঠে রয়েছে পুলিশ ও র‌্যাব।

জানা গেছে, চট্টগ্রামের কোরবানিদাতারা প্রতিবছর চামড়ার ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। পাড়া মহল্লা ও অলিতে গলিতে সরকারদলীয় প্রভাবশালী লোকজন কোরবানিদাতার কাছ থেকে কমদামে পশুর চামড়া সংগ্রহ করেন। ট্যানারির নির্ধারণ করে দেয়া দামের চেয়ে অনেক কমদামে ক্ষেত্র বিশেষে নামেমাত্র টাকা গুঁজে দিয়ে চামড়া নিয়ে আসেন তারা। কেউ দিতে না চাইলে ছিনতাই করে বা কেড়ে নিয়ে চামড়া নিয়ে আসা হয়। কমদামে চামড়া সংগ্রহ করলেও আড়তদারদের কাছে বেশি দামেই চামড়া বিক্রি করেন তারা। পশুর চামড়ার টাকা গরীবদের বন্ঠন করার ইসলামী বিধান থাকায় অনেকেই চামড়ার কম দাম নিয়ে কোন উচ্চ-বাচ্য করেন না।

এলাকাভিত্তিক প্রভাবশালীরা পরস্পরের এলাকায় বহিরাগত চামড়া ব্যবসায়ীদের প্রবেশ করতে দেন না। এর ফলে অনেকটা ‘নীরব সন্ত্রাস’ চামড়ার এ বাণিজ্যের বিষয়টি আড়ালেই থেকে যায়। তবে এবার চট্টগ্রামে চামড়া সন্ত্রাস ঠেকাতে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ, পরিবহণ ও ক্রয়-বিক্রয় কার্যক্রমে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ (সিএমপি)।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর প্রতিটি এলাকা এবং চামড়া ক্রয়-বিক্রয়ের প্রধান কেন্দ্র মুরাদপুর আতুরার ডিপো এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া কোরবানির চামড়া নিয়ে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য পুলিশের পাশাপাশি বিশেষ টহল কার্যক্রমে নিয়োজিত আছে র‌্যাব এর বিশেষ টহল দল।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, এ বছর চামড়া সন্ত্রাস ঠেকাতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোরবানির পর পাড়ায় পাড়ায় উঠতি মাস্তান, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা সন্ত্রাসী কিংবা প্রভাবশালীরা নিরীহ কোরবানিদাতাদের ওপর প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে। এই বিষয়গুলোর ওপর নজরদারী করা হচ্ছে। কোরবানিদাতাদের কাছ থেকে কেউ যাতে জোর করে চামড়া নিতে না পারে সে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করছি। এছাড়া মফস্বল এলাকা থেকে শহরে চামড়া পরিবহন করে নিয়ে আসা এবং শহরে এনে আড়তদারদের কাছে নিরাপদে তা বিক্রির বিষয়টি পুলিশ সতর্কতার সঙ্গে নিশ্চিত করছে।

র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে চামড়া সংগ্রহের পর তা নগরীর বায়েজিদ থানার আতুরার ডিপো এলাকায় আড়তে বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হয়। এই বিশেষ এলাকাকে ঘিরে র‌্যাব বিশেষ নিরাপত্তা টহলের ব্যবস্থা নিয়েছে। চট্টগ্রামে চামড়া নিয়ে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে- এ ব্যাপারে র‌্যাব-পুলিশ সমন্বিতভাবে কাজ করছে।’