‘জঙ্গিবাদ দমনের নামে ধর্মকর্ম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হিতে বিপরীত হতে পারে’

0
61

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনের নামে মসজিদ, জুমার খুৎবা ও ওয়াজ মাহফিল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হলে ফলাফল হিতে বিপরীত হতে পারে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ। সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীসহ হেফাজত নেতৃবৃন্দ এ হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

বিবৃতিতে হেফাজত নেতৃবৃন্দ বলেন, যুগযুগ ধরে ওলামা-পীর-মাশায়েখগণ মসজিদে জুমার খুৎবায় এবং ওয়াজ মাহফিলে কুরআন-হাদিসের আলোকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি, অন্যায়-অবিচার, সুদ-ঘুষ, ব্যভিচার-অনাচারসহ মানুষকে যাবতীয় সামাজিক অবক্ষয় থেকে মুক্তির পথনির্দেশনা দিয়ে আসছেন। এদেশের কোন আলিম কোনকালেই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে উস্কানি তো দূরের কথা ন্যুনতম প্রশ্রয় দেননি। বিগত দিনে জেএমবি কর্তৃক সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে দেশের হক্কানী ওলামায়ে কেরাম যে সর্বাত্মক  ও যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেছেন। তাদের বয়ান, বক্তৃতা-ওয়াজের মাধ্যমে খুনী, সন্ত্রাসী, দুর্বৃত্ত, মাস্তান ও বিপথগামী লোকেরা হেদায়েত পেয়েছে এবং তারা শান্তি, নৈতিকতা ও সৎচরিত্রে ফিরে এসেছেন। কাজেই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনের নামে মসজিদ, জুমার খুৎবা ও ওয়াজ মাহফিল নিয়ন্ত্রণের দূরবিসন্ধি দেশকে জঙ্গিবাদমুক্ত করবে না বরং সরকার ধর্মপ্রাণ ও শান্তিপ্রিয় জনগণ থেকে ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিপনার প্রকৃত কারণ এবং দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করার মতো মৌলিক কাজের দিকে মনোযোগ না দিয়ে গতানুগতিক ভাবে ইসলাম, আলিম-ওলামা ও মাদরাসা-মসজিদের দিকে আঙুল তোলা হলে হিতে বিপরীত হবার আশঙ্কা রয়েছে। হেফাজত নেতৃবৃন্দ পুলিশ প্রধানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ ব্যক্তি হিসেবে আপনাকে বলতে চাই, যারা মিডিয়ায়, টকশো’তে, রাজনৈতিক সভা-সমিতিতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে, মাদরাসা শিক্ষাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে, আলিমসমাজকে বিদ্রুপ করে উস্কানি দিয়ে দেশের পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর মতো কাজ করে চলেছেন; তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার মতো কোনো কথা আপনার মুখে শোনা যায়নি। এতে প্রমাণ হয় যে, কাউকে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে, কারো কণ্ঠরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা কখনও ন্যায্য ও সংগত নয়।
বিবৃতিদাতারা হলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির ও দারুল উলুম হাটহাজারীর মহাপরিচালক শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী, সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, নায়েবে আমির মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা শামসুল আলম, মাওলানা আবদুল মালেক হালিম, মাওলানা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জী, মুফতি মোজাফফর আহমদ, আল্লামা মুফতি আহমদুল্লাহ, মাওলানা আবদুল হামিদ পীর, মহাসচিব আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী, মাওলানা সালাহুদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা মুহাম্মদ ইদরিস, মাওলানা সাজেদুর রহমান, মাওলানা মুহিবুল হক গাছবাড়ি ও মাওলানা নুরুল হক প্রমুখ।