‘জনগণের মতামত নিয়ে সংবিধান সংশোধন করতে হবে’

0
73

গণমাধ্যম ও বিচার বিভাগ হলো জনগণের সবচেয়ে আস্থার জায়গা। কিন্তু বর্তমান সরকার এই দুটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করছে। আর এতে দেশের জনগণ চিন্তিত হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিবিসি সংলাপে অংশ নেয়া বক্তারা। তারা বলেছেন, সংবিধান সংশোধন করতে হলে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। তাদের মতামত নিয়েই সংবিধান সংশোধন করতে হবে। কিন্তু সরকার সুপারসনিক গতিতে সব কিছু করছে। শনিবার বিকালে রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে আয়োজিত বিবিসি বাংলা সংলাপ অনুষ্ঠানে প্যানেল বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্যানেল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতিন খসরু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাসিম আক্তার হুসেন। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন সাংবাদিক আকবর হোসেন। বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফেরাতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বিল পাস হলে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার সুরক্ষিত থাকবে কিনা উপস্থিত দর্শকের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, সংবিধানে কোন সংশোধনী আনতে হলে আলোচনা দরকার। ৪২ বছর পর কেন এই সংশোধনী আনা হচ্ছেÑএর পক্ষে-বিপক্ষে জনগণের মতামত নেয়া দরকার। এই সংশোধনীর আশঙ্কা তৈরির বিষয়ে বিশিষ্ট এ সংবিধান প্রণেতা বলেন, ৪০-৪২ বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা দেছে, সংসদে সব কিছু দলীয় ভিত্তিতে হয়। যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন তারা নিরপেক্ষ কোন ভূমিকা পালন করতে পারেননি। সংসদ নিরপেক্ষভাবে বিচার করতে পারবেÑএরকম আস্থা অর্জন করতে পারেনি। এ জন্যই অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফেরানো নিয়ে মানুষের মনে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আবদুল মতিন খসরু বলেন, ড. কামাল হোসেন প্রণীত ’৭২ সালের সংবিধানের বিধানটি আমরা হুমহু ফিরিয়ে আনছি। শুধু প্রমাণিত অসদাচরণের জন্য বিচারকদের অপসারণ করা হবে। বিচারকরা ঘুষ খেয়েছেন কিনা, অসদাচরণ করেছেন কিনা তা প্রমাণ হলেই অভিশংসন করা হবে। এখানে সংসদ কিছু করবে না, তারা শুধু সিল মারবে। বিলটি পাসের আগে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনটি পাসের পর আমরা সমাজের সব শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে আলোচনা করবো। তবে আইনটি পাসের আগে তা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা চিরতরে বিদায় করার জন্যই অভিশংসন ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনছে সরকার। ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত একটি অবৈধ সরকার দেশ পরিচালনা করলে রাষ্ট্রের কোন প্রতিষ্ঠানই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। ইতিমধ্যে সব রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানই ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার।