জম্মু ও কাশ্মির: নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ৯ জন নিহত

0
75

জম্মু ও কাশ্মিরভারতের জম্মু ও কাশ্মিরে হিজবুল জঙ্গি কমান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছে। শনিবার (৯ জুলাই) সংঘর্ষের এ ঘটনায় নিহতরা সবাই বিক্ষোভকারী বলে জানা গেছে। এতে এখন পর্যন্ত পুলিশসহ শতাধিক লোক আহত হয়েছে।

কাশ্মির পুলিশের মহাপরিদর্শক এজেএম গিলানি সংবাদ সম্মেলনে সংঘর্ষে হতাহতের এ তথ্য জানিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা আইএএনএসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

শনিবার সকাল থেকেই বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ চৌকিতে হামলা চালায়। নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছুড়তে থাকে। পাল্টা জবাব দেয় পুলিশও। শ্রীনগর ও দক্ষিণ কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে স্থানীয় বাসিন্দাদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশও গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে নিহত হয় ৯ বিক্ষোভকারী। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে কুলগানের বিজেপি অফিসেও হামলা চালানো হয়।

গতকাল শুক্রবার (০৮ জুলাই) দক্ষিণ কাশ্মিরের অনন্তনাগ এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী হিজবুল মুজাহিদিনের তরুণ কমান্ডার ওয়ানি ও তার দুই সহযোগী নিহতের প্রতিবাদে পুরো কাশ্মিরজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় শ্রীনগরের অধিকাংশ এলাকা ও দক্ষিণ কাশ্মিরের বেশ কয়েকটি এলাকায় সান্ধ্য আইন জারি করে কর্তৃপক্ষ। যদিও কারফিউ জারি সত্ত্বেও হিজবুল জঙ্গি বুরহানের শবদেহ নিয়ে রাস্তায় নামেন ৫০ হাজার বাসিন্দা।এদিকে এ ঘটনার পর পুরো কাশ্মিরজুড়ে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পুলওয়ামা জেলা, তার পাশাপাশি শ্রীনগরের সাতটি থানা এলাকাসহ অনন্তনাগ, শোপিয়ান, পুলগাম ও সোপোর শহরে বন্ধ রাখা হয়েছে মোবাইল, ইন্টারনেট। জম্মু বেইস ক্যাম্প থেকে শুরু হতে যাওয়া অমরনাথ যাত্রা কয়েকদিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি চাকরির পরীক্ষা।

বুরহানের মৃত্যুর প্রতিবাদে হুরিয়ত চেয়ারম্যান সৈয়দ আলি গিলানি এবং জেকেএলএফ চেয়ারম্যান ইয়াসিন মালিক শনিবার হরতালের ডাক দেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেন ফের উত্তপ্ত পরিস্থিতি না হয়, সে কারণে হুরিয়তের একাধিক শীর্ষ নেতাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এ দিন সকালে টুইট করেন, “এটা যদি সত্যি হয়, তাহলে বড় ঘটনা। উপত্যকায় কয়েক দিন উত্তেজনা থাকবে। বুরহানই বন্দুকের শিকার প্রথম নয়, আবার শেষও নয়।”

২০১৪ সালে সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্দুক হাতে বুরহানসহ বেশ কয়েকজন কাশ্মিরী যুবককে দেখা গিয়েছিল। তারিকও তাদের মধ্যে একজন।

এদিকে বুরহান নিহতের ঘটনাকে সেনা ও জম্মু-কাশ্মির পুলিশের সাফল্য বলে দাবি করেছেন ভারতীয় সেনার এক মুখপাত্র।