জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইংরেজী বিভাগের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ (২৪) হত্যা মামলায় ছাত্রলীগের ১৩ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিাযোগ গঠন করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
রোববার ৪ নং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবিএম নিজামুল হক শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর আগে ছয়বার তারিখ দিয়েও আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করতে পারেনি ট্রাইব্যুনাল।
এদিন আসামিদের আইনজীবীরা মামলার দায় হতে আসামিদের অব্যাহতি প্রার্থনা করে আবেদন করেন।
শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনালের জিজ্ঞাসার জবাবে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করলে বিচারক তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনন্দ চন্দ্র বিশ্বাস ও শাকিলা জিয়াসমিন মিতু শুনানিতে বলেন, ‘চাঞ্চ্যলকর এ হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্যে ছয়টি তারিখ অতিবাহিত হয়েছে। ছয়টি তারিখ পার হবার পরও তা গঠন করা হচ্ছে না। এতে মামলা বিলম্বিত হচ্ছে। আজ অভিযোগ গঠন করা হোক।’
এদিন এ মামলার ১৩ আসামির সবাই ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন।
গত ১২ মার্চ ছাত্রলীগের ১৩ আসামির বিরুদ্ধে পুলিশের দাখিলকৃত অভিযোগপত্র আমলে নেন ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালত।
গত বছরের ৮ এপ্রিল আলোচিত এ হত্যা মামলায় ছাত্রলীগের ১৩ কর্মীর বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন, জাবির পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র শফিউল আলম সেতু এবং অভিনন্দন কুণ্ডু অফি, প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের আশিকুল ইসলাম আশিক, খান মোহাম্মদ রিয়াজ ও জাহিদ হাসান, দর্শন বিভাগের কামরুজ্জামান সোহাগ, ইশতিয়াক মেহবুব অরুপ এবং রাশেদুল ইসলাম রাজু, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের মাহবুব আকরাম, ইতিহাস বিভাগের মাহমুদুল হাসান এবং মাজহারুল ইসলাম, অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের নাজমুস সাকিব তপু এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের নাজমুল হাসান প্লাবন।
আসামিরা সবাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৩৭তম ব্যাচের ছাত্র।
অভিযোগপত্রের ১৩ আসামির সবাই হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন।
এছাড়া অভিযোগপত্রের ১৩ আসামির মধ্যে মাহবুব আকরাম ও নাজমুস সাকিব ওরফে তপু ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম ইসমাইল হোসেনের কাছে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি বিকেলে জুবায়ের আহমেদকে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে সন্ত্রাসীরা। পরদিন ভোরে রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নিহত জুবায়ের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৩৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার হামিদুর রহমান বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মীর শাহীন শাহ পারভেজ তদন্ত শেষে ওই বছরেরই ৮ এপ্রিল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।