জার্মানি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে টানাপড়েন

0
149

হরমুজ প্রণালীতে নৌ অভিযান পরিচালনা করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত নৌপথ হরমুজ প্রণালী। বৈশ্বিক তেল রপ্তানির ৫ ভাগের ১ ভাগ সমপাদিত হয় এই রুট ধরেই। কিন্তু এখানে ইরানি নৌবাহিনী ও আইআরজিসির দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় নৌ অভিযানের ঘোষণা দিয়েছে ওয়াশিংটন। তবে দেশটি এ অভিযানে পাশে চায় জার্মানিকে। এ লক্ষ্যে মঙ্গলবার জার্মানিকে নৌ অভিযানে অংশ নিতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ খবর দিয়েছে ডয়েচে ভেলে।
জার্মানিতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র তামারা স্টার্নবার্গ গ্রেলার জার্মানিকে প্রস্তাব দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে জার্মানিকে ফ্রান্স ও বৃটিশ নৌবাহিনীর সঙ্গে হরমুজ প্রণালীতে নৌ অভিযান পরিচালনার প্রস্তাব দিয়েছি। হরমুজ প্রণালীকে নিরাপদ ও ইরানি আগ্রাসন থেকে মুক্ত করতেই এ অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তবে জার্মানি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, হরমুজ প্রণালীতে যুক্তরাষ্ট্রের নৌ অভিযানে অংশ নিচ্ছে না তারা। বুধবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস বলেন, ইরান উপকূল থেকে নিকটবর্তী এ অঞ্চলে কোনো ধরনের অভিযান চালাবে না জার্মানি। বর্তমানে পোল্যান্ড সফরে রয়েছেন হেইকো মাস। সেখানেই তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সামপ্রতিক সময়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার উত্তেজনা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। তাই এমন কিছু করা থেকে জার্মানি বিরত থাকবে যাতে উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পায়।
এদিকে, জার্মানির এমন কঠিন জবাবের ফলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত অ্যাঙ্গেলা মার্কেল সরকারের কঠিন সমালোচনা করেছেন। বৃহসপতিবার তিনি বলেন, ইউরোপের সব থেকে বড় অর্থনীতির দেশ হিসেবে জার্মানির অনেক বৈশ্বিক দায়িত্ব রয়েছে। জার্মানির হরমুজ অভিযানে অনিচ্ছা প্রকাশের পর এ নিয়ে নিজের হতাশা প্রকাশ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড গ্রেনেল। তিনি বলেন, জার্মানির অনেক দায়িত্ব পালন করা বাকি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হরমুজ অভিযানের জন্য জার্মানির কাছ থেকে সামরিক সাহায্য চেয়ে আসছে। কিন্তু দেশটির একজন মন্ত্রী এটি প্রত্যাখ্যান করে দিলেন! মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডনাল্ড ট্রামেপর ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সমপর্কের তিক্ততা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। বাণিজ্য শুল্ক আরোপ ও প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় নির্ধারণের মতো বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে মতের ভিন্নতা দেখা দেয়। বুধবার মার্কিন সিনেটের একটি কমিটি জার্মান কয়েকটি কোমপানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বিল পাস করেছে। রাশিয়া থেকে জার্মানি পর্যন্ত ২টি গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত থাকায় এই নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ছে কোমপানিগুলো।