জিএসপি ফিরে পেতে আশাবাদ প্রধানমন্ত্রীর

0
74

প্রধানমন্ত্রীরযুক্তরাষ্ট্রের অ্যাকশন প্ল্যান বাস্তবায়নের মাধ্যমে জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রিফারেন্সেস (জিএসপি) ফিরে পাওয়া সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার জাতীয় সংসদে ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতউল্লাহর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

রহমতউল্লাহ প্রশ্ন রাখেন- ‘যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের ১২২টি দেশকে জিএসপি দিয়েছে কিন্তু বাংলাদেশ বঞ্চিত হয়েছে। তার কারণ কি, সরকার এই ব্যাপারে কি পদক্ষেপ নিয়েছে’।

এ প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কৃর্তক যুক্তরাষ্ট্রের বাজের রপ্তানিকৃত পণ্যের ৯০ শতাংশের বেশী হচ্ছে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল পণ্য।

‘এ দেশে তৈরি পোশাক ও চিংড়ী খাত এবং ইপিজেডভুক্ত শিল্প কারখানায় শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এমন অভিযোগ করে গত ২৭জুন ২০১৩ তারিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি স্থগিত করেছে।’
জিএসপি পুনর্বহাল করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারকে বিভিন্ন শর্ত সংবলিত ‘বাংলাদেশ অ্যাকশন প্ল্যান-২০১৩’ বাস্তবায়নের পরামর্শ দেয়।

প্রধানমন্ত্রী উক্ত অ্যাকশন প্ল্যানের শর্তগুলোও তুলে ধরেন। উক্ত প্ল্যানের শর্তের মধ্যে রয়েছে, পরিকল্পনায় আইনগত ও নীতিগত ব্যবস্থা, প্রাতিষ্ঠানিক পুনর্গঠন, রপ্তানিযোগ্য সব তৈরি পোশাক কারখানা ভবনের ফায়ার, ইলেকট্রিক্যাল ও স্ট্রাকচারাল বিষয়ক যাচাই, প্রশাসনিক পদক্ষেপ, শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার, দু’টি এনজিও’র কার্যক্রম পুনঃচালু করা, জনসাধারণের প্রবেশযোগ্য ডাটাবেজ প্রতিষ্ঠা, শ্রম ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন ত্বরান্বিত করা, হটলাইন প্রতিষ্ঠা করা, কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও শ্রমিক অধিকার বাস্তবায়নে বিশেষ প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন, চিংড়ি সেক্টরে শ্রম অধিকার ও নিরাপদ কর্র্মপরিবেশ রক্ষা করা।

এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত ১৫ নভেম্বর ২০১৩, ১৫ এপ্রিল ২০১৪, ১৬ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে উক্ত অ্যাকশন প্ল্যান বাস্তবায়নের অগ্রগতি ‘ইউনাইটেড স্টেটস ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ’ (ইউএসটিআর) বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার উক্ত অগ্রগতি রিভিউপূর্বক অ্যাকশন প্ল্যান বাস্তবায়নের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং চলমান কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার তাগিদ দিয়েছে।

‘এছাড়া বিভিন্ন মাধ্যমে কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি সময়ে সময়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে অবহিত করা হচ্ছে এবং অ্যাকশন প্ল্যানের অধিকাংশ বিষয় বাস্তবায়ন হয়েছে’ বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, অবশিষ্ট বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বিশেষ করে ‘চিফ ইন্সপেক্টর অব ফ্যাক্টরিজ অ্যান্ড এস্টাবলিশমেন্ট’ অফিস পুর্র্নগঠনসহ ২২৫ জন পরিদর্র্শক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। চালু রপ্তানিমুখী প্রায় ৩ হাজার ৬৮৫টি গার্মেন্টস কারখানার মধ্যে অ্যালায়েন্স, অ্যাকোর্ড ও জাতীয় টিমের মাধ্যমে প্রায় ৩ হাজার ৩৭৫টি গার্মেন্টস কারখানার অগ্নি, বৈদ্যুতিক ও স্ট্রাকচারাল বিষয় পরিদর্শন করানো হয়েছে।

তার মধ্যে ৩৪টি কারখানা ক্রটিপূর্ণ পাওয়ায় ‘রিভিউ প্যানেল’ এর সুপারিশ অনুযায়ী উক্ত কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে সব কারখানার অগ্নি, ও বৈদ্যুতিক ও ভবনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রাথমিক পরিদর্শন কার্র্যক্রম শেষ হবে।

এ লক্ষ্যে গত বছরের ৭ জুলাই ইপিজেড শ্রম আইন-২০১৪ এর খসড়া মন্ত্রিপরিষদে নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে। অভ্যন্তরীণ আইনও বিধিগত কার্র্যক্রম শেষে উক্ত খসড়া আইন বিল আকারে অবিলম্বে জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে।