জেএমবি’র হিটলিস্টে আরএসএস’র শীর্ষ নেতারা

0
66

বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদিন (জেএমবি) এর হিটলিস্টে এবার রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) এর শীর্ষ নেতারা। শুক্রবার ভারতের ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের শুরু থেকেই জঙ্গি সংগঠনের তরফে ভারত বিরোধী একাধিক লিফলেট ও প্রচারপত্র প্রকাশ্যে এনেছে জেএমবি, যেখানে পরিষ্কার করে আরএসএস’র শীর্ষ নেতাদের ওপর গেরিলা হামলা চালানোর কথা বলা হয়েছে।

বাংলাদেশে নাশকতামূলক কর্মকান্ডের বিরোধিতা করাতেই আরএসএস’র ওপর হামলা চালানো হতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি ওই জঙ্গি সংগঠনটি নিজেদের কৌশলে পরিবর্তন এনেছে। বাংলাদেশে ‘শরিয়া শাসন’ চালু করার এজেন্ডা থেকে সরে এসে ভারতের আরএসএস ও শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের টার্গেট করেছে। এক্ষেত্রে তাদের গতিবিধির ওপরও নজর রাখছে জঙ্গিরা।

গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, সোশ্যাল মিডিয়া মারফত ও বিভিন্ন প্রচারপত্র বিলি করে পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে বাংলাভাষী মুসলিম যুবকদের নিয়োগ দেয়ার কথাও জানিয়েছে ওই সংগঠনটি। সংগঠনের তরফে ভারতের নরেন্দ্র মোদির কেন্দ্রীয় সরকারকে ‘ইসলাম বিরোধী’ আখ্যা দেয়ার পাশাপাশি এই সরকারের কারণেই যুবকরা সহিংসতার পথে নামতে বাধ্য হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে।

জঙ্গি সংগঠনের বিভিন্ন নথি ও ক্লিপে আরএসএস’র ইতিহাস, এম. এস. গোলবালকর থেকে শুরু করে মোহন ভাগবতসহ দলের শীর্ষ নেতারা এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও দুর্গা বাহিনীকে তাদের প্রধান শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছে। একইসঙ্গে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ সরকার ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সমালোচনা করা হয়েছে তাদের লিফলেটের মাধ্যমে।

গোয়েন্দাদের সন্দেহ আরএসএস’র ইতিহাস এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে মুসলিম বিরোধী হিসাবে আখ্যা দিয়ে জেএমবি পশ্চিমবঙ্গ ও আসামের মতো রাজ্যগুলিতে তাদের শাখা বিস্তার করতে চায়। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের তরফে সন্ত্রাস দমনে কঠোর অবস্থান নেয়ার কারণেও সেদেশ থেকে পাশ্ববর্তী এই দুই রাজ্যে তাদের ঘাঁটি তৈরি করার কৌশল নিয়ে থাকতে পারে।

এ প্রসঙ্গে আরএসএস নেতা রাকেশ সিনহা জানান, যেদিন থেকে আরএসএস ধর্মান্তকরণের বিরোধিতা করা শুরু করেছে, সেই থেকেই এই অঞ্চলে মৌলবাদী ইসলামিক সংগঠনের কাছে চক্ষুশূল হয়ে উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় আরএসএস কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা বেড়েই চলেছে।

জঙ্গি সংগঠন জেএমবি’র এই রিপোর্ট এর সত্যতা স্বীকারে ইন্ডিয়া টুডে’কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জানান, ভারতের আরএসএস নেতাদের ওপর জেএমবি’র তরফে যে হামলা হুমকি দেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের তরফে ভারতকে যাবতীয় তথ্য প্রদান করা হবে।

তিনি আশ্বাস দেন, বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে ভারত বিরোধী কোনো কর্মকান্ড সংগঠিত হতে দেওয়া হবে না। তবে দুই দেশই যেখানে এক সীমান্ত ভাগাভাগি করে সেখানে কখনও কখনও জঙ্গিরা এক রাষ্ট্র থেকে অন্য রাষ্ট্রে গিয়ে নাশকতা সংগঠিত করে। কিন্তু দুই দেশের সরকারই এ ব্যাপারে নিয়মিত তথ্য আদান-প্রদান করছে।