জোয়ার: লোকালয় প্লাবিত, আমান চাষ অনিশ্চিত

0
102

জোয়ারের পানি

মো: ফারুক,পেকুয়া
অবিরাম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে পেকুয়ায় আবারো অশনি সংকেতের আশংকা দেখা দিয়েছে। উপজেলার মগনামা-উজানটিয়া ইউনিয়নে নতুনভাবে ১৬ পয়েন্টে বঙ্গোপসাগরের জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে ব্যাপক প্লাবিত হয়েছে। অন্যদিকে পেকুয়া সদরের সিরাদিয়া পয়েন্টে ভেঙ্গে যাওয়া অংশ মেরামত না করায় পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম বৃষ্টির পানি ডুকে জোয়ার ভাটায় পরিনত হয়েছে এলাকা। এমনকি মেরামতকৃত বেড়িবাঁধ গুলো এখনো শংকামুক্ত নয় বলে এলাকাবাসী আরো বেশি আতংক হয়ে পড়েছে। যে কোন মূহর্তে অতিতের মত করুন পরিনতির আশংকায় সাধারণ জনগণ নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার প্রস্ততি শুরু করেছে। জানা যায়, উজানটিয়ার পূর্ব অংশে ঠেকপাড়ায় ১শ ফুটের ভিতর নতুনভাবে ৫টি, পূর্ব উজানটিয়া প্যারাবনের পার্শ্বে ২টি, প্যারাসিঙ্গা পাড়ায় ৩টি অংশে বেড়িবাধ ভেঙ্গে গেলে উজানটিয়া সাগরে পরিনত হয়েছে। এদিকে মগনামা লঞ্চঘাটের উত্তর পাশে শরৎঘোনা এলাকায় নতুন করে ৫০ফুটের মতো বেড়িবাধ ভেঙ্গে গিয়ে নতুনভাবে ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, এছাড়া মগানামা খালারপাড়া, কাকপাড়া, কাজীরপাড়া হয়ে মাগনামার পূর্ব পাশ পর্যন্ত সমুদয় চিংড়িঘের একাকার হয়ে গেছে।
এদিকে সদর ইউনিয়নে গত ৪দিন ধরে পেকুয়া সদরের ২০টিন গ্রাম জোয়ারভাটার শিকার হওয়ায় চলতি মৌসুমে আমন চাষাবাদে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সিরাদিয়ায় গত বন্যায় ও ঘুর্ণিঝড় কোমনের আঘাতে ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধের অংশ দিয়ে অস্বাভাবিক ভাবে জোয়ারের পানি ঢুকে পেকুয়া সদরের সিরাদিয়া নন্দীর পাড়া, গোয়াখালী বাইম্যাখালী, সিকদার পাড়া, হরিণাফাড়ি, সরকারীঘোনা, তৈল্যাকাটা, মৌলভী পাড়া, সুতাবেপারী পাড়া, ছৈরভাঙ্গা, নাপিতার ঘোনা, মুড়ারপাড়া, মগঘোনা, উজিরার ঘোনা, চৌধুরীর ঘোনা, গুইন্যাঠেয়ারা. মাতবরপাড়া সহ ২০টি গ্রামে স্বাভাবিক চলাচল অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
উজানটিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা সমাজ সেবক সুজন জানিয়েছে, চলতি পূর্ণিমার জোয়ারের পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৪ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। দীর্ঘদিনের ঝরাজীর্ণ বেড়িবাধ কয়েকদফা বন্যা ও ঘুর্ণিঝড় কোমেনের আঘাতে মগনামার কাকপাড়া, শরৎঘোনা উজানটিয়ার ঠেকপাড়া, মালেকপাড়া, রুপালী বাাজার,মিয়াজি পাড়া, মধ্যম উজানটিয়া মৌলভী পাড়, জৈনদ্দিন পাড়া,ফেরাসিঙ্গাপাড়া, পশ্চিম উজানটিয়া করিমদাদ মিয়ার ঘাট এলাকায় ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধ অংশে অসাধু চিংড়ি চাষীরা স্লুইচ গেইট দিয়ে পানি প্রবাহিত করায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে আরো বেশি মারাত্মক আকার ধারণ করে। যার ফলে শত চেষ্টাতেও বেড়িবাঁধ রক্ষা করা যাচ্ছেনা।
পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু বলেন, উজানটিয়া মগনামা দুর্গম এলাকা ও সাগরতীরবর্তী হওয়াতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন বেড়িবাঁধ নির্মাণের সময় যথাযথ তদারকি না করায় জরুরী বরাদ্দের কাজ সময় মতো নির্মাণ হয়নি যার ফলে পেকুয়ার লোকজনকে আবারো জোয়ার ভাটার শিকার হতে হলো। হাজার কোটি টাকার চিংড়ি ভেসে গেছে। পেকুয়া লোকজনের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম আমন চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় সাধারণ চাষীদের মাঝে হাহাকার দেখা দিয়েছে। তিনি দ্রুত বিশেষ বরাদ্ধের টাকা দিয়ে সঠিক তদারকির মাধ্যমে বেড়িবাঁধ সংস্কারের দাবী জানান।