টেকনাফে পৃথক ‘গোলাগুলিতে’ ৪ মাদক কারবারী নিহত

0
105
কায়সার হামিদ মানিক,উখিয়া।
কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশ ও বিজিবির সাথে পৃথক গোলাগুলিতে চারজন মাদক কারবারী নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমান ইয়াবা, অস্ত্র ও কার্তুজ ।
বিজিবি তথ্য সূত্রে জানা যায়, শনিবার (২৮ মার্চ) গভীররাতে গোপন সংবাদের মাধ্যমে বিজিবি জানতে পারে মাদক পাচারের ঘাঁটি হিসাবে খ্যাত হ্নীলা ইউনিয়ন লেদা নাফনদী সংলগ্ন ছুরিখাল এলাকা দিয়ে মাদকের একটি বড় চালান বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করবে।
সেই গোপন সংবাদের তথ্য অনুযায়ী সীমান্ত প্রহরী বিজিবির একটি চৌকষ দল উক্ত এলাকায় অবস্থান নেয়।
এরপর অন্ধকারের মধ্যে ৪/৫ জন লোক একটি নৌকা নিয়ে নাফনদী পার হয়ে ছুরিখাল এলাকায় প্রবেশ করতে দেখে বিজিবি তাদের চ্যালেঞ্জ করে দাঁড়ানোর সংকেত দেয়। মাদক কারবারীরা বিজিবির উপস্থিতি বুঝতে পেরে নৌকা থেকে লাপ দিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে বিজিবি তাদের ধাওয়া করলে তারা বিজিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ী গুলি বর্ষন শুরু করে। এতে বিজিবি তিন সদস্য আহত হয়। বিজিবিও আত্মরক্ষার্থে সরকারী সম্পদ রক্ষা করার জন্য পাল্টা গুলি চালায়। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় ৫/৬ মিনিট গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসার পর ঘটনাস্থল থেকে বিজিবি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অজ্ঞাতনামা তিন যুবককে উদ্ধার করে টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রেফার করে। শনিবার ভোরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে দায়িত্বরত ডাক্তার তাদের তিনজনকে মৃত ঘোষনা করে।
এদিকে বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থল তল্লাশী করে ৫ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা মুল্যের ১লক্ষ ৮০ হাজার ইয়াবা, দেশীয় তৈরী ২টি বন্দুক, ৩ রাউন্ড কার্তুজ ও ১টি ধারালো কিরিচ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
এই অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মো. ফয়সল হাসান খাঁন (পিএসসি) জানান, বিজিবির সাথে গোলাগুলিতে নিহত হওয়া তিন ব্যাক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি।
তিনি আরো বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে যখন সারাদেশের মানুষ আতংকের মধ্যে থাকলেও মাদক পাচারে জড়িত অপরাধীরা নির্ভয়ে তাদের অপকর্ম অব্যাহত রাখার জন্য অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে তাদের সেই অপচেষ্টা প্রতিরোধ ও মাদক কারবারীদের নির্মুল করার জন্য সীমান্ত প্রহরী বিজিবি সদস্যরা সদা প্রস্তুত রয়েছে।
অপর দিকে পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মুসা আকবর নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। শনিবার (২৮ মার্চ) গভীর রাত দেড়টার দিকে টেকনাফ হোয়াইক্যং ইউনিয়ন তুলাতলি এলাকায় মাদক পাচারের গোপন সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশের একটি দল উক্ত এলাকায় অভিযানে গেলে মাদক কারবারে জড়িত অপরাধীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি বর্ষন করে এতে পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়।
এরপর পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলি থেমে যাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে।
নিহত ব্যক্তি হচ্ছে, হোয়াইক্যং ইউনিয়ন তুলাতলী এলাকার আবুল বশরের পুত্র মুসা আকবর(৩৬)। আহত পুলিশ সদস্যরা হচ্ছে, এএসআই আরিফ হোসেন, কনস্টেবল এডিসন চাকমা ও কনস্টেবল রুমন।
এদিকে ঘটনাস্থল তল্লাশী করে ৬ হাজার ইয়াবা, দেশীয় তৈরী ১টি অস্ত্র,৩ রাউন্ড কার্তুজ ও ৬ রাউন্ড কার্তুজের খালি খোসা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
এই অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ থানার (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস বলেন, মাদক কারবারে জড়িত অনেক অপরাধী তাদের অবৈধ ব্যবসা অব্যাহত রাখার জন্য সক্রিয় রয়েছে। সেই সমস্ত মাদক কারবারীদের নির্মুল করতে পুলিশের মাদক বিরোধী চলমান এই যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে।