তরমুজে সয়লাব চট্টগ্রামের বাজার

0
78

গ্রীষ্মের জনপ্রিয় ও রসালো ফল তরমুজ। মৌসুমি ফল তরমুজ গরমে পানির চাহিদা মেটানোর জন্য উপযোগী। এই ফল যেমন স্বাদে অতুলনীয় তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর।

গরমের এ দিনে তরমুজে ছেয়ে গেছে গোটা চট্টগ্রাম। দিন যতো যাচ্ছে চট্টগ্রামের পাইকারী ও খুচরা বাজারে তরমুজের আমদানি ততো বাড়ছে। তবে আমদানির প্রভাবে পাইকারি বাজরে দর কমলেও খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।

ব্যবসায়ীরা জানান, ১০০ পিস তরমুজ ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হয়। তারা জানান, ভেতরে গাঢ় লাল এবং খেতে সুস্বাদু হওয়ায় সারা দেশে চট্টগ্রামের তরমুজের চাহিদা বেশি। পাইকারী বাজার থেকে ব্যবসায়ীরা তরমুজ কিনে এনে বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে থাকেন। আকার ভেদে এক একটা তরমুজ ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফিরিঙ্গি বাজার চট্টগ্রামের মৌসুমি ফলের অন্যতম বড় আড়ত এখানে প্রতিদিন ব্যপক হারে তরমুজ বিকিকিনি  হচ্ছে বলে জানার আড়তদার আলীম উদ্দিন।

স্থানীয় পর্যায়ে চট্টগ্রামের সব চেয়ে বড় তরমুজ-বাঙ্গির হাট বসে রাউজানে। প্রতি বছর গ্রীষ্মের আগে আগে বিশাল আকারের পসড়া সাজিয়ে চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি সড়কের সুলতানপুর পৌর এলাকার শরতের দোকান এলাকায় বসে তরমুজ-বাঙ্গির এ হাট।

বেপারিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পাইকারি ও খুচরায় বিক্রি করেন তারা। চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ হাট থেকে তরমুজ সরবরাহ করা হয়। বিশেষ করে রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, কাপ্তাই, রাঙ্গামাটিসহ জেলা উপজেলার খুচরা বিক্রেতারা এখান থেকে বাঙ্গি-তরমুজ কিনতে আসেন।

এছাড়াও এ এলাকায় প্রথা চালু আছে, সদ্য বিবাহিত মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে বেশি করে তরমুজ-বাঙ্গি পাঠাতে হয়। তাই প্রচুর বেচাকেনার একটি অংশের ক্রেতা থাকেন সদ্য বিবাহিত মেয়েদের পরিবার।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি ফল তরমুজ-বাঙ্গি বাজারে আসতে শুরু করেছে। পুরো বাজারে বেশ কয়েকটি ট্রাকে করে বরিশাল ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আনা ফলগুলো খালাস করছেন ২০-৩০ শ্রমিক। তবে দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতা ভেড়াতে পারছেন না বেপারিরা। প্রতিটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে হচ্ছে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত।

এই বাজারের অন্যতম ফল ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, ছোট কাল থেকেই এখানে এই ব্যবসা চালাচ্ছি। এ বাজারটি পুরো চট্টগ্রামের মধ্যে একটি নামকরা বাঙ্গি-তরমুজের প্রসিদ্ধ বাজার। এখান থেকে চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ফল সরবরাহ করা হয়। বরিশাল নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রতিদিন ট্রাকে করে মাল নিয়ে আসি।

তিনি আরো বলেন, এ বছর শুরুতে শিলা বৃষ্টি হওয়ায় অনেক ক্ষতি হয়েছে তরমুজ বাকি চাষিদের। তাই দাম এবার একটু বেশি থাকবে।

বেদারুল আলম নামে আরেক তরমুজ ব্যবসায়ী বলেন, এখন শুরু হওয়া এ বাজার আগামী ২ মাস পর্যন্ত চলবে। এই মৌসুমটাতে ফল বেচা-বিক্রি করে একটি মোটা অংকের আয় হওয়ার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

দিদারুল আলম নামে পাশের মুদি ব্যবসায়ী বলেন, রাউজানের শরতের দোকান এলাকার এ ফল বাজার এখন চট্টগ্রামের মধ্যে একটি প্রসিদ্ধ বাজার। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ এসে এখান থেকে বাঙ্গি-তরমুজ কিনতে দেখা যায়।

আব্দুর রহিম নামে এক ক্রেতা বলেন, সদ্য বিবাহিত মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে বাঙ্গি-তরমুজ পাঠাতে হবে। প্রতি বছর এ মৌসুমে এখান থেকে কিনি। তাই এবারও আসছি। দেখি দর-দাম ভালো হলে কিনব।