‘তোর বোনকে মেরেছি, কিছুই করতে পারিস নি’

0
105

অরাফাত‘তোর বোনকে মেরেছি, এবার তোকেও মারব। আরফাতকে তো ধরতে পারবিনা। তুই আমাদেরকে খুঁজিসনা। আমরা তোকেই খোঁজে নেব।’
এভাবে একজন হত্যা মামলার আসামী হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছিলেন কক্সবাজারে নিহত কলেজ ছাত্রী হাসিনা আকতার খুনের ঘটনায় দায়ের করা মামালার বাদী নিহতের বড় ভাই জাকির হোসেনকে।
তিনি বলেন, ২০ জুন দিবাগত রাত দশটার দিকে ইন্টারনেটের অজ্ঞাতনামা নাম্বার থেকে কয়েকটা কল আসে। অপরিচিত হওয়ায় প্রথমে কয়েকটি কল ধরিনি। এরপর একটি ধরামাত্রই আমাকে হুমকি দিতে থাকে।
নাম্বারবিহীন ইন্টারনেট কল থেকে দ¤েভাক্তি করে বলা হয়, ‘কোন পুলিশ তো এলাকায় আনতে পারিসনি। আর কিছুই করতে পারবিনা।
আমরা সব ঠিক করে ফেলেছি। তোর বোন হাসিনা শেষ, এবার তুইও (তুমি) শেষ হবি।’
মামলার বাদী জাকির হোসেন বলেন, হত্যাকান্ডের প্রায় তিন মাস হচ্ছে। এখনো কোন আসামী গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আসামীরা নিজ বাড়ীতেই অবস্থান করে। পুলিশের দূর্বলার সুযোগে এখন আমাদের হুমকি দিচ্ছে। আমরা জীবন নিয়ে চরম নিরাপত্ত¡াহীনতায় রয়েছি।
এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে তদন্ত কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) বখতিয়ার উদ্দিনকে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তবে, থানার ওসি মো. আসলাম হোসেন বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
সুত্র জানায়, মামলার ৩, ৪, ৫ নং আসামী হাইকোর্ট থেকে ৪ সপ্তাহের জামিন নেয়। ৫ জুন তাদের জামিনের মেয়াদ শেষ হয়। নিয়মানুযায়ী তারা এখন ‘ওয়ারেন্টি আসামী।’
এরপরও কিভাবে আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরছে? পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন এলাকাবাসীর।
বাদিপক্ষের অভিযোগ হলো, মূল আসামী ইয়াছিন আরাফাতসহ প্রায় সকলেই এখন প্রকাশ্যে। এরপরও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছেনা। এ কারণে মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া ও সঠিক বিচার প্রাপ্তি নিয়ে সন্দিহান নিহতের পরিবার।
হাসিনা আকতার কক্সবাজার সরকারী কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্রী। ২৫ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফদন্ডী মধ্যম মাইজপাড়া এলাকার মোস্তাক আহমদের ছেলে ইয়াছিন আরাফাতের সাথে হাসিনার বিয়ে হয়। ২৯ মার্চ শ্বশুরালয় থেকে হাসিনার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। মূলতঃ যৌতুকের দাবী মেটাতে ব্যর্থ হওয়ায় হাসিনাকে কৌশলে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের।
এ ঘটনায় স্বামী ইয়াছিন আরাফাতকে প্রধান আসামী করে ৫ জনের বিরুদ্ধে গত ৩০ মার্চ কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করে নিহত হাসিনার বড়ভাই জাকির হোসেন। মামলা নং জিআর-৮৩/২০১৬।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলো- দেবর জাহেদুল ইসলাম, শ্বশুর মোস্তাক আহমদ, শ্বাশুড়ী হোসনে আরা বেগম ও জা রেবেকা বেগম।