দাঁতে ব্যথা হলে যা করণীয়

0
118

দাঁত ব্যথা একটি প্রচলিত সমস্যা। এতে দাঁত ও চোয়াল উভয় অংশেই ব্যথা করে। দাঁতের ক্ষয়, সংক্রমণ, মাড়ির রোগ, জয়েন্টে সমস্যা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে দাঁত ব্যথা হয়। আমাদের দেশে দাঁতের ক্ষয় বা গর্ত হওয়াকে অনেকেই দাঁতের পোকা বলে। দাঁতের ব্যাথাকে আমরা অনেকে আমল দেই না। প্রয়োজনমতো দাঁতের যত্ন নেই না, ডেন্টিস্টের কাছে যাই না নিয়মিত। এর পর যখন দাঁতের ব্যথায় প্রাণ ওষ্ঠাগত হয় তখনই কেবল ডেন্টিস্টের কাছে দৌড়াই।

দাঁতে ব্যথা যে কত বেশী অসহনীয় হতে পারে তা কেবল ভূক্তভুগীরাই জানেন। আর দাঁতে ব্যথা কখন হবে এটারও কোন সুনির্দিষ্ট সময় নেই। এমনকি মধ্যরাতেও শুরু হতে পারে তীব্র দাঁতের ব্যথা।

তবে দাঁতে পোকা লাগার কারণে গর্ত হয় বলে অনেকে মনে করেন। অথবা দাঁতে পোকা হয়েছে বলে মনে করেন। এ নিয়ে আমাদের চিন্তার শেষ থাকে না। একবার ভাবুন তো, দাঁতের যতটুকু অংশ দেখা যায় সেখানে যদি পোকা সাইজের কোনো কিছু থাকে তাহলে কী হতে পারে?

দাঁতে পোকা থাকার কোনো উপস্থিতি বিজ্ঞানীরা পাননি। দাঁতে পোকা হয় এ বিষয়টি আসলে ভ্রান্ত। তাহলে অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে দাঁতে যদি পোকা না থাকে তাহলে এই গর্ত হয় কেন?

আমরা প্রতিদিন যে খাবার খাই তার কিছু অংশ দাঁতের ফাঁকে বা মুখে থেকে যায়, জমা হয়ে থাকে। এই জমা খাবার মুখে বসবাসরত বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে মিশে এক প্রকার এসিড তৈরি করে; যা দাঁতের অ্যানামেলকে নষ্ট করে। সেখান থেকে ডেন্টাল ক্যারিজ শুরু হয় এবং তা থেকেই দাঁতের গর্ত হয়।

চিনি মেশানো দুধ, মিষ্টিজাতীয় খাবার দাঁতের ওপর ডেন্টাল প্লাক তৈরি করে; যা জিবাণুযুক্ত। আর এই প্লাককেই এ রোগের অন্যতম প্রভাবক বলে মনে করা হয়।

লক্ষণ
দাঁতে প্রথম এই ছোট গর্ত দেখা যায়। এটি ধীরে ধীরে বড় হয় এবং তা পরবর্তীকালে প্রদাহজনিত রোগে রূপান্তরিত হয়। এ সময় বেশ ব্যথা অনুভূত হয়।

দাঁত ব্যথা কমানোর কিছু ঘরোয়া উপায়

পেয়ারা পাতা
দাঁতের ব্যথায় আরাম পেতে পেয়ারা পাতা আরো একটি উপকারী উপাদানের নাম। দুই থেকে তিনটা কচি পেয়ারা পাতা মুখে নিয়ে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে চিবোতে থাকুন যতক্ষণ না সেটি দাঁতের ব্যথায় কাজ শুরু না করে। আবার কয়েকটা পেয়ারা পাতা নিয়ে খানিকটা পানি দিয়ে তা সিদ্ধ করুন। এরপর পানি ঠাণ্ডা করে ওই পানি দিয়ে কুলকুঁচি করুন।

গোলমরিচ ও লবণ
গোলমরিচের মধ্যে লবণ মিশিয়ে ব্যবহার করলে ব্যথা কমতে অনেকটা সাহায্য হয়। এ দুটির মধ্যেই আছে ব্যাকটেরিয়ারোধী, প্রদাহরোধী ও অ্যানালজেসিক উপাদান।

সমপরিমাণ গোলমরিচ ও লবণ নিন। এর মধ্যে কয়েক ফোঁটা পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। আক্রান্ত দাঁতে সরাসরি পেস্ট লাগান এবং কয়েক মিনিট রাখুন। কয়েক দিন নিয়মিত এটি করুন।

রসুন
দাঁতের ব্যথা কমাতে রসুন একটি ভালো উপাদান। রসুনের মধ্যে আছে অ্যান্টিবায়োটিক; আর আছে এমন উপাদান, যেটি ব্যথা কমাতে কার্যকর।

রসুনের গুঁড়া নিন অথবা কয়েকটি রসুনের কোয়া থেঁতলে নিন। এর মধ্যে সামান্য পরিমাণ লবণ মেশান।

আক্রান্ত দাঁতে সরাসরি মিশ্রণটি লাগান। এতে ব্যথা কমবে। পাশাপাশি কয়েকটি রসুনের কোয়া চিবাতে পারেন। কয়েক দিন এই পদ্ধতি পালন করুন।

লবণ ও গরম পানি
এক গ্লাস গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মেশান। এটি দিয়ে কুলি করুন, ফোলা ও প্রদাহ কমাতে কাজ করবে; ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করে ব্যথা কমাতে কাজে দেবে।

যেকোনো খাবার গ্রহণের পর ভালোভাবে কুলকুচি করবেন। ব্রাশ করার পাশাপাশি ডেন্টাল ফ্লশ ব্যবহার করতে পারেন। এতে এ ধরনের সমস্যা অনেকখানি এড়াতে পারবেন। আর বেশি সমস্যা মনে হলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। দাঁতের যত্ন নিন, ভালো থাকুন।