দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের আসর হবে চট্টগ্রামে

0
66

পর্দার অন্তরালে থেকে (বিহাইন্ড দ্যা স্ক্রিন) উন্নত ও পরিকল্পিত চট্টগ্রামের জন্যে কাজ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।

শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম ক্লাব মিলনায়তনে ‘নান্দনিক চট্টগ্রাম সম্মেলন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘বাসযোগ্য থাকুক প্রিয় চট্টগ্রাম’ স্লোগানের দুদিনের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছি। হয়তো পাঁচ বছর পর এসব কাজ দেখা যাবে। আমি বিশ্বাস করি আগামী দিনে চট্টগ্রামে অনেক বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প যেমন বাস্তবায়ন হবে তেমনি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগও আসবে।’

চট্টগ্রামকে প্রাচীনতম শহর উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‌আমার মনে হয় চট্টগ্রামের বয়স ২ হাজার ১০০ থেকে ২ হাজার ২০০ বছর হবে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের অনেক উত্থান পতন দেখেছি। এখানে যে বন্দর তা প্রাকৃতিক, মানুষের তৈরি নয়। কিন্তু নানা কারণে ৮০-৯০ এর দশকে চট্টগ্রামের গুরুত্ব হ্রাস পেয়েছে।

অবকাঠামোই ছিল মূল সমস্যা। অনেক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি মাইগ্রেট করে ঢাকায় চলে গেছে। গার্মেন্টস কারখানার শুরুর দিকে বিশ্বব্যাংক ও ব্যাংকারদের অনুমান ছিল দেশের ৭০ ভাগ পোশাক কারখানা হবে চট্টগ্রামে। কিন্তু হয়েছে উল্টো। এখন চট্টগ্রামে ৩০ ভাগ, ঢাকায় ৭০ ভাগ কারখানা। অথচ রপ্তানিপণ্য হিসেবে এটি বন্দর শহরেই বেশি প্রসার লাভ করার কথা ছিল।

বিগত সরকারগুলোর ষড়যন্ত্রের কারণেই চট্টগ্রাম পিছিয়ে পড়েছে উল্লেখ করে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, একজন বিদেশি বিনিয়োগকারী বা ক্রেতা আসার জন্য দরকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও পাঁচতারা হোটেল। আওয়ামী লীগ সরকারই এ দুটি চট্টগ্রামবাসীকে দিয়েছে। আমাদের বিমানবন্দরের ফ্রিকোয়েন্সি আরও বাড়াতে হবে। এখন চট্টগ্রামের জন্য ‘টেক অফ উইল বি সুন’। আমাদের বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিশেষ করে কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানের পর্যটন শিল্পের ওপর ফোকাস করতে হবে।

ফ্লাইওভার নিয়ে ‘সব বিষয়ে জ্ঞানী’ এমন কিছু মানুষ অযথা সমালোচনা করছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিজেকে জ্ঞানী বলতে পারবো না। কিন্তু এটুকু বলতে পারবো, ইদানীং চট্টগ্রাম শুধু নয় সারা দেশেই কেউ বুঝে কমেন্ট করছে আবার কেউ না বুঝে কমেন্ট করছে। মিডিয়ার অ্যাটেনশন নিতেই এ ধরনের কমেন্ট করছে। একজন ব্যক্তি সব বিষয়ে জ্ঞানী হবেন তা আমি বিশ্বাস করি না।’

তরুণদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কর্মসংস্থানের লক্ষ্য ঠিক রেখেই এসএসসির পর থেকে কারিগরি বা দক্ষতা অর্জিত হয় এমন বিষয়ে পড়াশোনা করতে হবে। নইলে যেহারে প্রতিবছর উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে ছাত্ররা বের হচ্ছে সে হারে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা কঠিন হবে। এ পরিস্থিতিতে হতাশায় ভুগতে হতে পারে।’

তিনি পরিকল্পিত ও উন্নত নগরী গড়তে সরকারের পাশাপাশি প্রত্যেক নাগরিককে কমিটমেন্ট, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দক্ষতার মধ্যদিয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার আহ্বান জানান।

নান্দনিক সভাপতি তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন, কবি বিশ্বজিত চৌধুরী, কাউন্সিলর মোরশেদুল আলম, ডিবিএল গ্রুপের মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ, উন্নয়নকর্মী জেসমিন সুলতানা পারু প্রমুখ।