নরবলি, মাটি ফুঁড়ে স্বর্ণের মূর্তি…

0
113

দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে মন্দিরে পূজা হচ্ছে না। এতে মা কালী রুষ্ট হয়েছেন। তাই এখন পূজার ব্যবস্থা করলে মা কালী মাটি ফুঁড়ে স্বর্ণের মূর্তিসহ অচিরেই আবির্ভূত হবেন। তার আবির্ভাবের সময় বাড়ির আশপাশে পাওয়া যাবে বিপুল স্বর্ণালংকার।

শুnorধু তাই নয়, মা কালীর সন্তুষ্টির জন্য যতো তাড়াতাড়ি নরবলি (জবাই) দেয়া যায়, ততো তাড়াতাড়ি মা কালী আবির্ভূত হবেন। পাশাপাশি এলাকাবাসীরও মঙ্গল হবে।

এসব কথা বলে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় অলৌকিক গুপ্তধনের আশায় মানুষ (নর) বলি দেয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন দুই ভণ্ড সাধক। এ লক্ষ্যে তারা উপজেলার রাজিহার গ্রামের একটি মন্দিরে এক ধরনের আস্তানা তৈরি করেছিলেন।

দীর্ঘ দিন এভাবে প্রচারণা চালানোর পর সর্বশেষ মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই এলাকাসহ উপজেলায় খবর ছড়িয়ে পড়ে মাটির নীচ থেকে স্বর্নালংকার ওঠা শুরু করেছে। বিষয়টি দেখতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত নারী-পুরুষ ভিড় জমায় রাজিহার গ্রামের বিমল বিশ্বাসের বাড়িতে। অবশ্য এসময় মাটির নিচ থেকে অলংকার উঠতেও দেখেছে এলাকাবাসী।

কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, অলংকারগুলো পরীক্ষা করে পুলিশ জানতে পারে ইমিটেশন।

বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেলে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মানুষের রোষানল থেকে রক্ষায় বুধবার বিকেলে ওই দুই সাধক গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে নেয়।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম জানান, উপজেলার রাজিহার গ্রামের মৃত নিত্যানন্দ বিশ্বাসের ছেলে বিমল বিশ্বাসের বাড়িতে রংপুর জেলা থেকে তার বোনের ছেলে সমীর দে (২৫) এবং তার বন্ধু নড়াইলের জনৈক বিমল (২৬) এসে গত ৩ মাস আগে আশ্রয় নেন।

অধিকাংশ সময় তারা ওই বাড়ির ভেতরে থেকে মাদক সেবন করে নিজেদের এক জনকে শিববের সাধক ও অন্যজনকে মা কালীর সাধক বলে পরিচয় দিয়ে বেড়াতেন।

এছাড়া মাঝে মধ্যে ওই ভণ্ড সাধকদের সুরে সুর মিলিয়ে ওই বাড়ির মালিক বিমল, ভাই কমল ও ধীরেন বিশ্বাসসহ পুরো পরিবার প্রচার করে বেড়াতেন যে, পার্শ্ববর্তী পুরনো কালী মন্দিরে ৫০ বছর ধরে পূজা হচ্ছে না। এতে মা কালী রুষ্ট হয়েছেন। এখানে পূজার ব্যবস্থা করলে মা কালী বিশ্বের অন্যতম মন্দির নিয়ে মাটি ফুঁড়ে স্বর্নের মূর্তিসহ অচিরেই আর্বিভূত হবেন। আর তার আবির্ভাবের সময় বাড়ির আশপাশ এলাকায় দেখতে পাওয়া যাবে বিপুল স্বর্ণালংকার।

ওই দুই ভণ্ড বলে বেড়াতেন, মা কালির সন্তুষ্টির জন্য যতো তাড়াতাড়ি নরবলি (জবাই) দেয়া যায় মা কালী ততো তাড়াতাড়ি আবির্ভূত হবেন। পাশাপাশি এলাকাবাসীরও মঙ্গল হবে।

এজন্য এলাকার ধর্মপ্রাণ লোকজনের কাছ থেকে চাঁদা তুলে ওই পুরনো মন্দির ভিটিতে ঘর তুলে কালী পূজা দেন ওই দুই ভণ্ড সাধক। মাঝে মধ্যে সেখানে তারা কবুতর জবাই করে রক্ত পান করতেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

সর্বশেষ মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই এলাকাসহ উপজেলায় খবর ছড়িয়ে পড়ে মাটির নীচ থেকে স্বর্নালংকার ওঠা শুরু করেছে। বিষয়টি দেখতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত নারী-পুরুষ ভিড় জমায় রাজিহার গ্রামের বিমল বিশ্বাসের বাড়িতে। অবশ্য এসময় মাটির নিচ থেকে অলংকার উঠতেও দেখেছে এলাকাবাসী।

কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, অলংকারগুলো পরীক্ষা করে পুলিশ জানতে পারে ইমিটেশন। এ ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নেয়ায় ধর্মপ্রাণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।

পুলিশ ধারণা, ওই দুই ভণ্ড সাধক নিজ জেলা রংপুরে কোনো অপরাধ করে রাজিহার গ্রামে আস্তানা তৈরি করে আত্মগোপনে ছিলেন। এছাড়া তারা মন্দিরের জমিটিও দখলের চেষ্টা চালিয়েছেন।

এ বিষয়ে আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম  জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু এর আগেই ভণ্ড সাধকরা পালিয়ে যায়।