নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৫৫ রানে হেরেছে

0
135

পাকিস্তানকে এর আগে টানা পাঁচটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে হারানোর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে আর পারল না বাংলাদেশ। সুপার টেনের নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৫৫ রানে হেরেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।

বিশ্বকাপের সুপার টেন তথা মূলপর্ব হার দিয়ে শুরু করেছে বাংলাদেশ। বুধবার ইডেন গার্ডেনে বাংলাদেশকে ২০২ রানের বড় টার্গেট দেয় পাকিস্তান।

সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলে ৫৫ রানের হার দিয়ে বিশ্বকাপের মূলপর্বের মিশন শুরু হয় বাংলাদেশের।

২০২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ আমিরের করা তৃতীয় বলে বোল্ড হয়ে যান সৌম্য সরকার (০)। দলীয় ৪৪ রানের মাথায় আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে যান সাব্বির রহমান (২৫)। দলীয় ৫৮ রানে আফ্রিদির দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তামিম ইকবাল (২৪)।

দলীয় ৭১ রানের মাথায় ইমাদ ওয়াসিমের বলে সারজিল খানের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৪)। ১৭তম ওভারের চতুর্থ বলে মোহাম্মদ আমিরের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন মুশফিকুর রহিম (১৭)। এরপর দলীয় ১১৭ রানের মাথায় মোহাম্মদ ইরফানের বলে আমিরের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন মিথুন (২)।

সাকিব আল হাসান ৫০ রানে ও মাশরাফি মুর্তজা ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন। সাকিবের ৫০ রানের ইনিংসে ৫টি চার ও ১টি ছক্কার মার ছিল। মাশরাফির ৯ বলে ১৫ রানের ইনিংসে ২টি চার ও ১টি ছক্কার মার ছিল।

বল হাতে পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমির ও শহিদ আফ্রিদি ২টি করে উইকেট নেন। ১টি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ ইরফান ও ইমাদ ওয়াসিম।

ব্যাট হাতে ৪৯ ও বল হাতে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন শহিদ আফ্রিদি।

এর আগে, পাকিস্তানের ২০১ রানের ইনিংসে শহীদ আফ্রিদি (৪৯), শেয়েব মালিক (১৫*), উমর আকমল (০), মোহাম্মদ হাফিজ (৬৪), আহমেদ শেহজাদ (৫২) ও শারজিল খান (১৮) রান করেন।

২৫ বছর পর বাংলাদেশের ইডেন গার্ডেনে ফেরার ম্যাচে শুরুতেই টস হারেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। এ নিয়ে টানা ষষ্ঠ ম্যাচে টস হারলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তানকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান শারজিল খান ও আহমেদ শেহজাদ।

প্রথম ২ ওভারে দুজন মিলে তোলেন ১৮ রান। এর মাঝে দ্বিতীয় ওভারে আল-আমিনকে দুটি ছক্কা ও একটি চার মারেন শারজিল। তবে তৃতীয় ওভারে আরাফাত সানী এসেই ফিরিয়ে দেন আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠা শারজিলকে। বাঁহাতি স্পিনার আরাফাতের বলে বোল্ড শারজিল (১৮)।

দ্বিতীয় উইকেটে শেহজাদ ও মোহাম্মদ হাফিজ বড় জুটি গড়ে ১১.২ ওভারে দলের স্কোর ১০০ পার করেন। শেহজাদ তুলে নেন ফিফটি। দলীয় ১২১ রানে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন পার্টটাইম স্পিনার সাব্বির রহমান। এই লেগ স্পিনারের বলে মিড উইকেটে মাহমুদউল্লাহকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান শেহজাদ (৫২)। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৬৮ বলে ৯৫ রান তোলেন শেহজাদ-হাফিজ।

এরপর দলীয় ১৬৩ রানে সৌম্য সরকারের দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরেন হাফিজ (৬৪)। সানীর বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে উড়িয়ে মেরেছিলেন হাফিজ। অনেকটা দৌড়ে গিয়ে সৌম্য যখন বলটা হাতে নিলেন, শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে বাউন্ডারির বাইরে চলে যাচ্ছিলেন প্রায়। তবে বল বাতাসে উড়িয়ে দিয়ে নিজে সীমানা দড়ির ওপারে পা দিয়ে ভারসাম্য ঠিক করলেন, আবার ফিরে এসে বলটি তালুবন্দি করলেন। দেখার মতো ক্যাচ!

পরের ওভারে তাসকিন আহমেদ এসে ফিরিয়ে দেন উমর আকমলকে। সাকিব আল হাসানকে ক্যাচ দেওয়া আকমল ডাক মারেন। তবে শহীদ আফ্রিদির ১৯ বলে ঝোড়ো ৪৯ রানের সুবাদে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২০১ রান তোলে পাকিস্তান। শেষ ওভারে তাসকিনের বলে আউট হওয়া আফ্রিদির ইনিংসে ছিল ৪টি করে চার ও ছক্কা।

সাইড স্ট্রেইন পুরোপুরি না সারায় এই ম্যাচেও একাদশে নেই বাংলাদেশের পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। আগের ম্যাচের একাদশ থেকে একটি পরিবর্তন এসেছে। একাদশে ঢুকেছেন স্পিনার আরাফাত সানী। বাদ পড়েছেন পেসার আবু হায়দার রনি।

১৯৯০ সালের পর এই প্রথম ইডেন গার্ডেনে খেলছে বাংলাদেশ দল।