নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আহ্বান

0
92

sheikh-hasina-naryangonj-intro_18073উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আহ্বানের মধ্যদিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আ’লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা শনিবার নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে আয়োজিত দলীয় জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দিয়েছেন।

বক্তব্যের শুরুতে তিনি নারীনেত্রী আইভী রহমানসহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের কথা স্মরণ করেন। ১৫ আগস্ট নিহতের কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

উপজেলার শহীদ মঞ্জু স্টেডিয়ামে আয়োজিত এ জনসভায় চারদলীয় জোট সরকারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কথায় নায় কাজে বিশ্বাসী। বিগত সরকার বিদ্যুৎ খাতে কোনো উন্নয়ন করেনি। আমরা এসে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করেছি। দেশের বৃহতম বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপন করেছি। এর আগে বন্দর উপজেলার হরিপুরে দেশের বৃহত্তম ৪১২ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কম্বাইড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট উদ্বোধন করেন।

এর আগে মুক্তিযোদ্ধা এস এম মাজারুল হক অডিটোরিয়াম ও কমিউনিটি সেন্টার, নারায়ণগঞ্জ সার্কিট হাউজ এবং সোনারগাঁয়ে জ্যোতি বসু স্মৃতি পাঠাগার ও সেমিনার হল উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী আড়াইহাজারে বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রধান কার্যালয়, প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষক ইনস্টিটিউট, আড়াইহাজার উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ প্রকল্পের সম্প্রসারিত প্রশাসনিক ভবন, রূপগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ প্রকল্পের সম্প্রসারিত প্রশাসনিক ভবন, মুড়াপাড়া ফেরিঘাট রাস্তায় শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর ৫৭৬ দশমিক ২১৪ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার ব্রিজ, এগ্রিকালচারাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং সিদ্ধিরগঞ্জের ৩৩৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আড়াইহাজারে নবনির্মিত বালিয়াপাড়া ব্রিজ, পাকুন্দা ব্রিজ, দুপ্তারা ব্রিজ ও দয়াকান্দার দুটি ব্রিজের ও আড়াইহাজারে ফায়ার স্টেশনেরও উদ্বোধন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেওয়ার সময় তাঁর সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিবরণ দেন।তিনি দাবি করেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর তারা সারা দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আড়াইহাজারেও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছিল। তিনি অভিযোগ করেন, সারের দাবি করায় বিএনপি কৃষকদের গুলি করে মেরেছিল, বিদ্যুৎ চাওয়ায় গুলি করেছিল। তাদের সেই চরিত্র এখনো পরিবর্তন হয়নি।

তিনি জানান, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে জনগণ কিছু পায়, দেশের উন্নয়ন হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলায় কী কী উন্নয়ন করা হয়েছে তা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, “সব উন্নয়নের কাজ হবে যদি আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন।”

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছেন দাবি করে বলেন, “বিএনপির এক মন্ত্রী মোবাইলের ব্যবসা করতেন, তখন কল করলেও দশ টাকা ধরলেও দশ টাকা দিতে হতো। আমরা মোবাইল সহজলভ্য করেছি, প্রত্যেকের হাতে হাতে মোবাইলফোন তুলে দিয়েছি। বাংলাদেশকে ডিজিটাল করেছি।”

মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সবার প্রতি আহ্বান জানান প্র্রধানমন্ত্রী।

বিরোধী দলীয় নেতার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তারা ক্ষমতায় এলে আবারো জঙ্গিবাদ আসবে, ধর্ষণ আসবে। আবার সেই মানুষ হত্যা শুরু করবে। খালেদা নতুন ধারার রাজনীতির নামে আবার সেই রাজনীতি শুরু করতে চান।”

শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, “বিরোধী দলীয় নেতা এতিমদের সম্পদ লুটে খেয়েছেন, বিদেশে টাকা পাচার করেছেন। এখন তিনি আদালতে হাজির হতে ভয় পান।”

বাংলাদেশকে উন্নয়নের মডেল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে তিনি নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চান।

জনসভায় এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।

২০১০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বর্তমান সরকারের আমলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবারের মতো নারায়ণগঞ্জে আসেন শেখ হাসিনা। ওই দিন তিনি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে দুটি ১২০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্লান্টের প্রথম ইউনিট উদ্বোধন করেন।