পুঁজিবাদীদের স্বার্থে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠা হচ্ছে

0
60

পুঁজিবাদ ও ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে বামপন্থীদের নেতৃত্বে কার্যকর গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বাসদের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য সুভ্রাংশু চক্রবর্তী।

রুশ বিপ্লবের ৯৮তম বার্ষিকী ও দলের ৩৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার বিকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহিদমিনারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী শাসকরা একদিকে জনগণের সব অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। ১ শতাংশ সুবিধাভোগী ও ৯৯ শতাংশ বঞ্চিত মানুষের মধ্যে পাহাড়সমান বৈষম্যের জম্ম দিয়ে চলেছে। অন্যদিকে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, মৌলবাদ, জাতিগত বিদ্বেষ, বর্ণবাদ উস্কে দিচ্ছে। আমাদের দেশেও পুঁজিপতি শ্রেণি মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত আকাঙ্ক্ষা চেতনাকে পদদলিত করে জনগণের ওপর নির্মম শোষণ-নির্যাতন চালাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে বর্তমান মহাজোট সরকার একচেটিয়া পুঁজিপতি শ্রেণির স্বার্থে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠার চক্রান্ত করছে।

বাসদ চট্টগ্রাম জেলা কমিটির আহ্বায়ক মানস নন্দীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা কমিটির সদস্যসচিব অপু দাশগুপ্ত ও সদস্য শফিউদ্দীন কবির আবিদ।

শুভ্রাংশু আরও বলেন, দেশে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটলেও কোনো ঘটনার সঠিক বিচার হচ্ছে না। মতপ্রকাশের দায়ে ব্লগারদের খুন করা হচ্ছে। জনগণের নিরাপত্তা বিধানে সবাই দায়িত্ব পালন না করে এসব হত্যাকাণ্ড থেকে সরকার ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। সরকার, বিরোধীদল ও সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী সবাই মৌলবাদীদের ব্যবহারের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এর ফলশ্রুতিতে মৌলবাদী শক্তি ক্রমাগত বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

তিনি আরও বলেন, মহাজোট সরকার বলছে গণতন্ত্র বড় কথা নয়, তারা এত করছেন যে, বাংলাদেশ ‘মধ্যম আয়ের দেশ’-এ পরিণত হয়েছে। ‘উন্নয়ন’র নামে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবন ধ্বংসের ঝুঁকি তৈরি করেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির নামে রেন্টাল-কুইক রেন্টাল প্ল্যান্ট করে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীদের পকেট ভরা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মূল্যের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি খরচ করে মহাসড়ক-সেতু-ফ্লাইওভার করা হচ্ছে। এতসব ‘উন্নয়ন’র খরচ জোগাড়ে সরকার তেলের দাম কমাচ্ছে না, বিদ্যুত-গ্যাস-পানির মূল্য ক্রমাগত বাড়াচ্ছে। গাড়ি ভাড়া-রেলভাড়া-বাড়িভাড়া ও মূল্যবৃদ্ধির চাপে মানুষ জর্জরিত।

তিনি বলেন, নারী নির্যাতন, শিশু নির্যাতন সীমা ছাড়িয়েছে। প্রতিবাদ করতে গেলেই সরকার ফ্যাসিবাদী কায়দায় দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। যারা বিরোধী রাজনৈতিক জোটে আছে, তারা যেন তেন উপায়ে ক্ষমতায় যাওয়ার রাস্তা খুঁজছে, কিন্তু জনজীবনের সংকট নিয়ে তাদের কোনো ভাবনা নেই। এ অবস্থায় দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষার জন্য সঠিক বামপন্থীদের নেতৃত্বে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

সমাবেশের পরবর্তীতে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ও লাল পতাকা সজ্জিত একটি মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে।