পেকুয়ার এলও অফিসে জমির ফাইল যেখানে সেখানে দালাল নাসির

0
133
পেকুয়া প্রতিনিধি

পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের সবজীবন পাড়ার মৃত আমির হামজার ছেলে নাসির উদ্দিন। ভূমি অধিগ্রহণ অফিসের (এলও) পেকুয়ার দালাল সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। ভূমি অধিগ্রহণের জন্য পেকুয়া থেকে যে সমস্ত ফাইল প্রস্তুত করতে হয় তা তার হাত দিয়ে যেতে হয়। না হলে ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে আটকিয়ে দেন তাদের ফাইল। যার কারণে বছরের পর বছর ফাইল নিয়ে ভুক্তভোগীদের দৌঁড়াতে হয় কক্সবাজার এলও অফিসে। সমস্ত কাগজপত্র ঠিক ও জমি দখল থাকার পরও হয়রানিতে পড়তে হয় এলাকাবাসীকে। তার এমন অপকর্ম দিনদিন বেড়ে যাওয়ায় ভুক্তভোগীরা প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে বারবাকিয়ার সবজীবন পাড়ায় গ্যাস পাইপ লাইনের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমি পরিমাপ করতে আসেন এলও শাখার সার্ভেয়ার সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল কর্মকর্তা। সরেজমিন দেখা গেছে, ওই এলাকায় দালাল নাসির উদ্দিনের মালিকনাধীণ কোন জমি না থাকলেও সার্ভেয়ার এর সামনে সামনে তিনি রয়েছেন। জমির প্রকৃত মালিক সনাক্তে সার্ভেয়ার দখল পরিমাপ করার সময় দালাল নাসির উদ্দিন ছাড়া আর কেউ কথা বলতে পারেনা। ওই সময় বেশ কয়েকজন জমির মালিক তার এমন কান্ডে প্রতিবাদ শুরু করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে তিনি স্থানীয় বেশ কয়েকজনকে হুমকি দিয়ে বলেন, তার কথার বাইরে কেউ এক টাকাও পাবেনা। এমন বলার সাথে সাথে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে ওঠলে তিনি সটকে পড়েন।

জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকে পেকুয়ায় যে সমস্ত জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে সেই সমস্ত জমির ফাইল প্রস্তুত করা  ও টাকা উত্তোলনের জন্য দালাল নাসিরের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। সেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কমিশন আদায় করে এলও অফিসের সার্ভেয়ার জমি পরিমাপ করে থাকেন। দালাল ছাড়া কেউ ফাইল জমা দিলে তা বছরের পর বছর পড়ে থাকে। টাকাতো তারা উত্তোলন করতে পারেনা উল্টো কক্সবাজার আসা যাওয়ায় অনেক ক্ষতির সম্মোখিন হতে হয়। সর্বশেষ কোন উপায় না পেয়ে ভুক্তভোগীরা দালাল নাসিরের হাতে ৩০ থেকে  ৪০ পার্সেন্ট টাকা দিয়ে অধিগ্রহণকৃত জমির টাকা উত্তোলন করে থাকে। তবে কক্সবাজার এলও অফিসে দালালদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকায় তিনি পেকুয়ায় বেশিরভাগ সময় অতিবাহিত করেন। সার্ভেয়ার যখন পেকুয়ায় আসেন তখন দখল বেদখল নিয়ে তিনি সরব হয়ে ওঠেন। জমি যাদের কাছে দখল নাই তাদেরকে দখলবান বানিয়ে দেওয়ার জন্য চুক্তি করে থাকেন। যার কারণে আসল দখলকারীরা দিনের পর দিন কষ্ট পেয়ে থাকেন।

বারবাকিয়া সবজীবন পাড়ার কয়েকজন একজন ভুক্তভোগী জানান, দালাল নাসির ছাড়া একটি ফাইল আমি এলও শাখায় জমা দিয়েছিলাম। গত এক বছর ধরে সেই ফাইলের টাকা ওঠানোর চেষ্টা করে চলছি তারপরও হচ্ছেনা। আর নাসিরের মাধ্যমে যারা ফাইল দিয়েছে তাদের কাগজপত্র ঠিক না থাকা ও দখল না থাকলেও তাদের টাকা অনেক আগে উত্তোলন হয়ে গেছে। ওই সময় সাকিল নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমার পৈত্রিক জমি যোগ যোগ ধরে আমাদের দখল। তারপরও আমরা এক বছর ধরে টাকা উত্তোলন করতে পারছিনা।

এবিষয়ে জানতে চাইলে নাসির উদ্দিন বলেন, সবজীবন পাড়ায় অধিগ্রহণকৃত জায়গায় আমার জমি না থাকলেও আমার আত্বীয়দের জমি রয়েছে। তাদের এবিষয়ে অভিজ্ঞতা কম থাকায় আমি তাদের সহযোগিতা করে থাকি। কোন ধরণের দালালি করিনা। যারা দালালের কথা বলে থাকেন তারা অপপ্রচার করে থাকেন।