পেকুয়ার কাটাফাঁড়ী ব্রীজের ঢালাইয়ের কাজে লবণ পানি ব্যবহারের অভিযোগ

0
112

জড়িত রয়েছে সড়কের বিভাগের কতিপয় দূর্নীতিবাজ প্রকৌশলীpakua14

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, কক্সবাজার প্রতিনিধি >>
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ সেতু মগনামা-পেকুয়া সমুদ্র সরনী ব্রীজের (কাটাফাঁড়ী ব্রীজ) ঢালাইয়ের কাজে নিয়ম বহিভর্ূূতভাবে মিঠা পানির পরিবর্তে লবণ পানি ব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ব্রীজ নির্মাণ কাজে নিুমানের লোহা, সিলেটি পাথর ও বালির পরিবর্তে নিুমানের উপকরণ ব্যবহার করে কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদার সড়ক বিভাগের চকরিয়া সার্কেল অফিষের কতিপয় প্রকৌশলীদের ম্যানেজ করে সরকারী শিডিউল বহির্ভূতভাবে কাজ শুরু করেছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) চকরিয়া সার্কেল অফিস সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সময়ে কাটা ফাঁড়ী ব্রীজটির নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করার জন্য ১কোটি ৭৫ লাখ টাকার বাজেটে সড়ক বিভাগ থেকে কার্যাদেশ পান কক্সবাজারের মেসার্স আসাদ কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্টান। এ ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের সত্বাধিকারী হচ্ছেন মো: আসাদুল ইসলাম। আর বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঠিকাদারের নিয়োগকৃত ১০/১৫ জন শ্রমিক অত্যন্ত নিুমানের উপকরণগুলো লবণ পানির সাথে মিশিয়ে ঢালাইয়ের কাজে ব্যহার করছে। এসময় শ্রমিকদের লবণ পানি মিশিয়ে ঢালাইয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা কেউ মুখ খোলেনি। ঢালাইয়ের সময় সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জিএম শরিফুল ইসলাম রনি ও উপ প্রকৌশলী আবদুল মোতালেব উপস্থিত থাকলেও এ কাজে ঠিকাদারের লোকজনকে কোন প্রকার বাধা দেননি।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানিয়েছেন, সড়ক বিভাগের ওই দুই দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে মোটা অংকে ম্যানেজ করে ঠিকাদার নানা অনিয়ম দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে শিডিউল বহির্ভূতভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা অবিলম্বে ওই কাজ তদন্তসহ অভিযুক্ত দুই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সড়ক বিভাগের উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন। জানা গেছে, গত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষ সময়ে তড়িগড়ি করে ওই ব্রীজের কাজ শুরু করেছিল সড়ক বিভাগ। আর সেসময়ে ওই ব্রীজের কার্যাদেশ পেয়েছিল সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমদের আস্থাভাজন ও বিতর্কিত ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত চকরিয়ার জনৈক গিয়াস উদ্দিন কন্ট্রাকটার। ১/১১ শুরু হলে সারাদেশে দূর্নীতিবাজ ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে সরকার অভিযান শুরু করলে গিয়াস উদ্দিন কনট্রাকটার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। এর পরে কিছু দিন ওই ব্রীজের কাজ চললেও ঠিকাদার পালিয়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। পরে সড়ক বিভাগ কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন আরো একজন ঠিকাদার নিয়োগ করেন। কিন্তু ওই ঠিকাদার ও যথাসময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় তার কার্যাদেশ ও বাতিল হয়ে যায়।
সম্প্রতি আবারো সড়ক বিভাগ দরপত্র আহবান করলে কক্সবাজারের আসাদ কনস্ট্রাকশন ব্রীজের কাজ সম্পন্ন করার জন্য কার্যাদেশ পান। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, কার্যাদেশ পেয়ে মেসার্স আসাদ কনস্ট্রাকশান নিুমানের উপকরণ ও নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ শুরু করে। ঢালাই কাজে মিঠা পানি ব্যবহারের পরিবর্তে পার্শ্ববতী ভোলা খাল থেকে লবণ দিয়ে পাথর, সিমেন্ট ও বালির সাথে মিশিয়ে ব্রীজের ঢালাই দেওয়া হচ্ছে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে মেসার্স আসাদ কনস্ট্রাকশনের সত্ত্বাধিকারী আসাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
এ ব্যাপারে জানতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-প্রকৌশলী আবদুল মোতালেব এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন, কাটাফাঁড়ী ব্রীজের ঢালাইয়ের কাজে মিঠা পানি দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। লবণ পানি মিশিয়ে কোন ধরণের ঢালাইয়ের কাজ করা হচ্ছেনা বলে তিনি দাবী করেছেন। ###

ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ইউপি চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীরা
পেকুয়ার রাজাখালীতে ৩০টি কবর খুঁড়ে আতংক সৃষ্টি!

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, কক্সবাজার প্রতিনিধি
এলাকায় কোন মানুষ মারা যাননি। জানাযা শেষে কোন মৃত ব্যক্তিকে সমাহিত করা হবেনা। তবু সারিবদ্ধ ভাবে কয়েকস্থানে খুঁড়া হয়েছে একে একে ৩০টি জ্যান্ত কবর! খবরটি শুণলে যে কারো গা চমকে উঠবে। এ ঘটনায় চাঞ্চল্যকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে দর্বৃত্তদের খুঁড়া কবরগুলোতে কাদের সমাহিত করা হবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে এলাকার কেউ কিছু বলতে পারেনি। গভীল রাতে এরকম কবর খুঁড়ে কিছু অজ্ঞাত দূর্বৃত্ত এলাকায় আতংক সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার গভীর রাতে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নে। এদিকে ঘটনার পর থেকে এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুলসহ তার অনুসারীরা এলাকা ছেড়ে ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে বিষয়টি অস্বীকার চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, তিনি ব্যক্তিগত কাজে বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন।
রাজাখালী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ফোনে এ প্রতিনিধিকে আরো জানিয়েছেন, তাকে ও তার অনুসারী লোকজনকে হত্যার ভয়ভীতি দেখাতেই স্থানীয় কিছু দৃর্বৃত্ত বিভিন্ন স্থানে ৩০টি কবর খুঁড়েছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাজাখালীর পৃথক স্থানে ৩০টি অভিনব কবরের সন্ধান মিলেছে। রাতের আঁধারে দৃর্বৃত্তরা কৌশলে এসব কবর খনন করে ইউপি চেয়ারম্যানসহ তার অনুসারীদের প্রান নাশের হুমকির আগাম বার্তা জানান দিচ্ছে। রাজাখালীর ইউনিয়নের বামুলা পাড়া এলাকায় ৬টি, মৌলভী পাড়া এলাকায় ৪টি, চরিপাড়া এলাকায় ৪টি, ইউপি ভবনের সামনে ৪টি, সুন্দরী পাড়া এলাকায় ৬টি , ভোলা খালের চরে ১০টি কবর খুঁড়েছে দুর্বৃত্তরা। কবরগুলোর মধ্যে প্রায় ২শ’ ও ৩শ’ ফুট দুরত্ব রয়েছে।
এসব কবরে ইউপি চেয়ারম্যানসহ তার অনুসারীদের উদ্দ্যেশ্য করে বেশ কয়েকটি চিরকুট লিখে খুঁটিতে টাঙ্গিঁয়ে দেওয়া হয়েছে। একটি চিরকুটে লিখা ছিল, “সম্মানিত গরীর দু:খী, মেহনতি মানুষ” আসসালামু আলাইকুম। এক দু:খের বিষয় বলতেছি, যদি বাচাঁর মত বাচঁতে চাও চেয়ারম্যান বাবুল থেকে এষ্টেটের কোন ধরনের লবণ মাঠ নিয়ে লেনদেন করবে না। যদি লেনদেন কর তোমাদের ক্ষতি হবে। তোমরা আমাদের গরীব ভাই। তাই বলছি চেয়ারম্যান থেকে কোন প্রকার লেনদেন করবে না” না হলে- নতুবা লাল কলমের লেখার মত লাল হবেন (চিরকুটের ডান পাশে লিখা ছিল)। এছাড়া চিরকুটের বাম পাশে একটি অস্ত্রের ছবি অংকিত ছিল।
স্থানীয়রা জানান, জমিদার অধ্যুষিত রাজাখালী ইউনিয়নের এরশাদ আলী ওয়াকফ্ এষ্টেটের বিপুল পরিমাণ লবণের মাঠ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জমিদার পরিবারের দুই গ্র“পে চরম দ্বন্ধ চলছিল। তাদের দু’পক্ষে স্থানীয় আ.লীগ নেতা, বিএনপি নেতা ও পেশাদার ডাকাতদল রয়েছে। এরই জের ধরে দুই গ্র“পের কোন এক পক্ষ এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারনা করছেন তারা।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেন, সামনে লবণের মৌসুমকে সামনে রেখে দু’গ্র“প আবারো সংঘর্ষে জড়িয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যে দু’গ্র“পেই লবণের মাঠ দখলের জন্য নানা প্রস্তুতি নিয়েছে। এদিকে একটি গ্র“পে আ.লীগ থাকায় তাদের উদ্দ্যেশ্য করে চিরকুট লিখায় তারা সবচেয়ে বেশি আতংকে রয়েছে।
রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়রম্যান ও আ.লীগ নেতা নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল জানিয়েছেন, ওইসব মাঠের কিছু অংশ আমি ও স্থানীয় ছৈয়দনুর ডাকাত একপক্ষের হয়ে দেখাশোনা করি। ছৈয়দনুর ডাকাত পুরো অংশ দেখাশোনা করার জন্য এ ধরনের কান্ড ঘটিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। তিনি আরো জানান, ওইসব চিরকুটে আমাকে মেরে ফেলার উদ্দ্যেশ্য করেও একটি চিরকুট লিখেছে বলে আমি খবর পেয়েছি। কোন পক্ষের হয়ে দেখাশোনা করছে জানতে চাইলে তিনি কথাটি এড়িয়ে যান।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ছৈয়দ নুর জানান, এসব ঘটনা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। বাবুল চেয়ারম্যানের সাথে আমার রাজনৈতিকভাবে মতবিরোধ আছে। চেয়ারম্যান তাই আমার উপর বিষয়টি চাপিয়ে দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পেকুয়া থানার ওসি মঈন উদ্দিন আহমেদ জানান, এসব বিষয়ে এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে এলাকার সাধারন মানুষ চরমভাবে আতংকে রয়েছে।