পেকুয়ায় চলছে বনাঞ্চল উজাড়, নির্বিকার বনবিভাগ!

0
77

পেকুয়া প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের পেকুয়ায় সংশ্লিষ্টদের সুষ্ঠ তদারকির অভাবে ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে বনভূমির আয়তন। গাছ চোর, বালি দস্যু ও অবৈধ দখলকারীদের খপ্পরে পড়ে বনাঞ্চল পরিণত হচ্ছে বিরানভূমিতে। বন রক্ষায় নিয়োজিত সরকারী বাহিনী ‘বনবিভাগ’ এর নিষ্ক্রিয়তায় বেড়েছে বনখেকোদের আস্ফালন। তাই দিনদুপুরে সংরক্ষিত পাহাড়ে চলছে গাছ লুঠ, বালি লুঠ সহ বিবিধ অপরাধ-অনিয়ম। একইসাথে গহীন বনে রাতারাতি গড়ে উঠছে বসতি। বেদখল হচ্ছে সংরক্ষিত বন। বনবিভাগের কিছু অসাধু সদস্যদের আঁতাতে এমনটা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় পরিবেশবাদীদের।

পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সেভ দ্যা ন্যাচার অব বাংলাদেশ’ কর্মী মাসউদ বিন জলিল বলেন, পেকুয়া উপজেলায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন বারবাকিয়া, টইটং ও পহরচাঁদা বনবিটে প্রায় দুই হাজার একর বনভূমি রয়েছে। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে তা কেবলই কাগজেকলমে। সংশ্লিষ্টদের হেয়ালিপনায় জ্যামিতিক হারে কমছে বনাঞ্চলের এই বিশাল আয়তন।

তিনি আরো বলেন, সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে বিভিন্ন অবৈধ কর্মকান্ড চলছে এসব বনভূমিতে। বনাঞ্চলের গাছ কেটে প্রকাশ্যে করা হচ্ছে পাচার। কিন্তু এসব বিষয় দেখেও দেখেননা কেউ। তাই বনাঞ্চলে সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে পশুপাখির বিচরণ। ইতিমধ্যে বিলুপ্ত হয়েছে শতাধিক বন্যপ্রাণী।

পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু বলেন, চিহ্নিত বনখেকোদের সাথে গোপন আতাত থাকায় বন রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন না বনরক্ষীরা। তারপরেও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় জনপ্রতিনিধিরা বন রক্ষায় ভূমিকা রেখে চলেছেন।

তিনি আরো বলেন, এতকিছুর পরেও থেমে নেই গাছ লুঠ, বালি-পাথর লুঠ, বনাঞ্চল পুড়িয়ে দিয়ে বনভূমি দখল ও বন্যপ্রাণী শিকার। তাই পরিবেশের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় এসব বনভূমি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

কক্সবাজার জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, টইটং ইউনিয়নের দা বাহিনী ও বারবাকিয়া ইউনিয়নে বনরাজা বাহিনীর নেতৃত্বে নিয়মিত উজাড় করা হচ্ছে বনভূমি। এসব বিষয় আমি উপজেলা ও জেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় একাধিকবার উত্তাপন করেছি। ফলে কিছুটা সোচ্চার হয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু কিছুদিন পরেই তারা আবার নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। আর সক্রিয় হন বনখেকোরা।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল গফুর মোল্লা বলেন, আমি মাত্র দুইমাস পূর্বে এ রেঞ্জের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে গাছ লুঠ, বালি লুঠ সহ অবৈধভাবে বনভূমি দখলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি। কিন্তু জনবলের সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক সময় সংঘবদ্ধ অপরাধীদের সাথে পেরে ওঠা আমাদের সম্ভব হয় না।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক শাহ চৌধুরী বলেন, বনবিভাগের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি বন রক্ষায় অবহেলা বা কোন অনিয়মে জড়িত থাকেন, তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিন। অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।