পেকুয়া ৪ নং ওয়ার্ড় থেকে ১৩ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল

0
55

 

গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা ৪ নং ওয়ার্ড় থেকে জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৩জন প্রার্থী সদস্য পদে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। জেলা পরিষদ নির্বাচনে পেকুয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয়েছে ৪নং ওয়ার্ড়। আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৪নং ওয়ার্ড় (পেকুয়া) থেকে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করতে ১৩জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। গত ১ ডিসম্বের জেলা রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসব প্রার্থীরা তাদের স্ব-স্ব মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়ন জমাদানের শেষ দিন ছিল গতকাল বৃহষ্পতিবার (১ডিসেম্বর)। ১৩জন প্রার্থীর মধ্যে সদস্য পদে ৪নং ওয়ার্ড়ের জন্য ১১জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। অপর দু’জন প্রার্থী সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য প্রার্থী হয়েছেন। উপজেলার অপর শিলখালী ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ড চকরিয়া উপজেলার সাথে সংযুক্তি হয়েছে। আগামি ৩ ও ৪ ডিসেম্বর বাছাই চলবে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১১ডিসেম্বর।

প্রতীক বরাদ্ধের দিন ধার্য্য হয়েছে ১২ডিসেম্বর। গতকাল ১ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ দিন। নির্বাচনে আগামি ২৮ডিসেম্বর ভোট গ্রহন অনুষ্টিত হবে। সরাসরি গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এ প্রথম জেলা পরিষদ নির্বাচন সারা দেশে অনুষ্টিত হচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে পেকুয়ায় অনেকটা চাঙ্গাভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিভিন্ন প্রার্থীরা জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। পেকুয়ায় ১৩জন প্রার্থীর মধ্যে ১১জন আওয়ামী লীগ সমর্থিত। অপর দু’জন প্রার্থীর মধ্যে একজন জাতীয় পার্টি সমর্থিত। অপরজন বিএনপি-জামায়াত ঘরনার লোক হিসেবে এলাকায় পরিচিতি। ক্ষমতাসীন দলের যে সব নেতা প্রার্থী হয়েছেন তারা হলেন জেলা আ’লীগ সদস্য এস.এম গিয়াস উদ্দিন, জিএম কাসেম, আবু হেনা মোস্তফা কামাল চৌধুরী, উম্মে কুলসুম মিনু, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, রাজাখালী ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি রিয়াজ খান রাজু, এড.রাশেদুল কবির, উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান ফরায়েজী, শিলখালী ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান ওয়ারেচীর সহ-ধর্মিনী ছৈয়দা নিঘাদ আমীন, মোর্শেদুল ইসলাম, মো.ইকবাল হোসেন, জাতীয় পার্টি পেকুয়ার সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রকাশ বিডিআর জাহাঙ্গীর। মো.তারেক ছিদ্দিকী।

এ বারের জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি ও তার দলগত অনুসারীরা অংশ গ্রহন না করায় বিএনপির সমর্থিত জনপ্রতিনিধিরা কোন প্রার্থীকে ভোট দিবেন তা এখনো স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছেনা। বিষয়টি নিয়ে এক প্রকার ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। পেকুয়ায় যেসব প্রার্থীরা ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হচ্ছেন তারা বেশিরভাগই পেকুয়ার জন্য অত্যন্ত পরিচিতজন হলেও কয়েকজন প্রার্থীর অখ্যাত ও বিতর্কিত।

অনেক প্রার্থী হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে এস.এম গিয়াস উদ্দিন। তিনি পেকুয়া উপজেলা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি। এক সময়ের চট্টগ্রাম আইন কলেজেরে সাবেক ভিপি ছিলেন। জেলা আ’লীগের দ্বিতীয় বারের মত সদস্য হয়েছে। পেকুয়া উপজেলা আ’লীগের সাবেক সহ-সভাপতিও ছিলেন তিনি। জিএম আবুল কাসেম জেলা আ’লীগের বর্তমান কমিটির সদস্য। জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতিও তিনি। গত ইউপি নির্বাচনে বারবাকিয়া ইউনিয়ন থেকে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। তিনি ওই ইউপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন। আবু হেনা মোস্তফা কামাল চৌধুরী মগনামা ইউনিয়নের জমিদার বাড়ির সন্তান। তিনি জেলা আ’লীগের বর্তমান কমিটির সদস্য। সাবেক কমিটিতে প্রচার সম্পাদক ছিলেন। রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি কক্সবাজার ইউনিটের সাধারন সম্পাদক। একইভাবে কমিউনিটি পুলিশিং কক্সবাজার জেলার সাধারন সম্পাদক। জাহাঙ্গীর আলম উপজেলা যুবলীগের সভাপতি। এর আগের কমিটিতে তিনি সাধারন সম্পাদক ছিলেন। সদরের সাবেক ইউপি সদস্য। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন একবার। পেকুয়ায় তারও ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। উম্মে কুলসুম মিনু জেলা আ’লীগের সদস্য। পেকুয়া উপজেলা মহিলা আ’লীগের সাবেক সভানেত্রী। ১ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছিলেন। ছৈয়দা নিঘাদ আমীন শিলখালী ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান ওয়ারেচীর স্ত্রী। শাশুর ছাদেকুর রহমান ওয়ারেচী পেকুয়াসহ জেলার অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা। এড. রাশেদুল কবির তরুন রাজনীতিবিদ। চট্টগ্রাম জজ কোর্টের আইনজীবি। তার পিতা জেলা আ’লীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। মেহেদী হাসান ফরায়েজী উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। তার পিতা আ.ক.ম শাহাব উদ্দিন ফরায়েজী উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ছিলেন। ঘাতকের হাতে নির্মমভাবে খুন হন। তিনি একজন মুক্তিযুদ্ধা ছিলেন। জাহাঙ্গীর আলম প্রকাশ বিডিআর জাহাঙ্গীর উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারন সম্পাদক। পেকুয়া-চকরিয়ার এমপি জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত হওয়ায় এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তার একটি চমক থাকতে পারে। তিনিও পেকুয়ায় পরিচিত। তারেক ছিদ্দিকীও প্রার্থী হয়েছেন। রিয়াজ খান রাজু রাজাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। অপর প্রার্থী ইকবাল হোসেন উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আবুল কাসেমের ছোট ভাই। জোট সরকারের সময় এ পরিবারের সব সদস্য ব্যাপক হয়রানি হয়েছেন। ইকবালও একাধিক মামলার আসামি করে ব্যাপক হয়রানী করা হয়েছিল।