প্রকৌশলীকে পেটালেন এমপি বদি

0
105

প্রকৌশলীকে পেটালেন এমপি বদি। ইয়াবা পাচার, রোহিঙ্গাদের মদদসহ নানা ঘটনায় সমালোচিত কক্সবাজারের আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির বিরুদ্ধে এক প্রকৌশলীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে।বুধবার দুপুরে উখিয়া উপজেলা প্রশাসনের মাসিক উন্নয়ন সভা চলাকালে এই ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

উখিয়া উপজেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী মোস্তফা মিনহাজ অভিযোগ করেছেন, তাকে গালাগালির পাশাপাশি মারধর করেছেন সংসদ সদস্য বদি।

মারধরের কথা প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে শুনেছেন বলে জানিয়েছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হামিদুল হক চৌধুরীও।

তবে জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেছেন, প্রকৌশলী মিনহাজকে সংসদ সদস্য ‘কঠোর বকাবকি’ করেছেন বলে তিনি জেনেছেন।

এই বিষয়ে সংসদ সদস্য বদির কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা ধরেননি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সভায় প্রকৌশলী মিনহাজ অনুপস্থিত থাকার পর তাকে খবর দেওয়া হলেও তিনি দেরি করায় এই কাণ্ড ঘটান সংসদ সদস্য।
বদিবদি
সংসদ সদস্য বদির বিরুদ্ধে এর আগে শিক্ষক, আইনজীবী, সরকারি কর্মকর্তা, এনজিও কর্মকর্তাসহ অনেককে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল।বুধবার দুপুর ১২টায় উখিয়া উপজেলা প্রশাসনের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা ছিল; যাতে সাম্প্রতিক বন্যা এবং ঝড় কোমেন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলা ছিল আলোচ্য সূচিতে।

উখিয়া-টেকনাফের সংসদ সদস্য বদি সকাল ১১টায় সভাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রকৌশলী মিনহাজকে অনুপস্থিত দেখে তাকে ডাকতে ইউএনওকে বলেন বলে সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান।

কিন্তু খবর পাঠালেও মিনহাজ সভায় আসতে দেরি করায় সংসদ সদস্য ইউএনওকে নিয়ে উপজেলা কমপ্লেক্সে প্রকৌশলীর অফিসের দিকে রওনা হন বলে সভায় অংশগ্রহণকারী পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

প্রকৌশলী মিনহাজ সাংবাদিকদের বলেন, “সাংসদ অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে করতে আমার অফিসে ঢোকেন। একপর্যায়ে মারধর শুরু করেন।”

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিল্লোল বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি, এসএমএস পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

বদির দল আওয়ামী লীগের উখিয়া উপজেলা কমিটির সভাপতি হামিদুল হক বলেন, “একজন সরকারি কর্মকর্তাকে এমপি বদি কর্তৃক অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও মারধর করার ঘটনা ঘটেছে বলে আমি কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে শুনেছি।

“মূলত উপজেলা প্রশাসনের মাসিক সমন্বয় সভায় যথাসময়ে ওই সরকারি কর্মকর্তা উপস্থিত না হওয়ার কারণে ওই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা আমাকে জানিয়েছে।”

এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, লোক দিয়ে ডেকে পাঠানোর পরও সভায় অংশ নিতে দেরি করায় সংসদ সদস্য ইউএনও হিল্লোল বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে সহকারী প্রকৌশলী মিনহাজের কার্যালয়ে গিয়ে কারণ জানতে চান।

“এক পর্যায়ে সাংসদ তাকে কঠোর ভাষায় বকাবকি করেন। এরপর সহকারী প্রকৌশলী সমন্বয় সভায় অংশগ্রহণ করেন।”

তবে জেলা প্রশাসক বলেন, “সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগ থাকলে সাংসদ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তা জানাতে পারতেন।”

তবে ওই সভার গুরুত্বের বিষয়টি তুলে ধরে প্রকৌশলী মিনহাজের দায়িত্বহীনতার কথাও বলেন জেলা প্রশাসক।

“মিনহাজের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলার নানা অভিযোগ রয়েছে।”

এসব অভিযোগ তদন্ত করে ইউএনওকে আগামী সাত দিনের মধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।