বাড়ি আমাদের চট্টগ্রাম মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের ভুলে ওদের একটি বছর কি শেষ হয়ে যাবে?

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের ভুলে ওদের একটি বছর কি শেষ হয়ে যাবে?

0
93

হাটহাজারী উপজেলার চিকনদণ্ডী ইউনিয়নের ফতেয়াবাদ বটতলী ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার বিজ্ঞান বিভাগের ৫ দাখিল পরীক্ষার্থী এখনো প্রবেশ পত্র পায়নি। ফলে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠেয় দাখিল পরীক্ষায় তাদের অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। প্রবেশ পত্র না পাওয়া ৫ শিক্ষার্থী হলো আবদুল মাবুদ, মো. আরিফ, মো. সাইফুল্লাহ মনসুর, আবদুল্লাহ আল ফয়সল ও হাসান মোহাম্মদ ইব্রাহিম।

শিক্ষার্থীরা  জানান, নবম শ্রেণি থেকে উত্তীর্ণ হয়ে দশম শ্রেণিতে ওঠার পর দাখিল পরীক্ষার জন্য মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল রেজিস্ট্রেশন কাজ শুরু করেন। এসময় আমাদের প্রত্যেক দাখিল পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা ফি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেয়া হয়। ওই সময় আমরা ফি ও কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম। এরপর থেকে প্রিন্সিপাল হুজুরের কাছ থেকে আমরা মাদ্রাসায় এসে আমাদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড চেয়েছি। কিন্তু নানা অজুহাত দেখিয়ে তিনি সময়ক্ষেপন করতেন। দাখিল পরীক্ষার আগে রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র দিয়ে দিবে বলেছিলেন হুজুর। কিন্তু আজো দেন নি। এখন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমরা চাই পরীক্ষায় অংশ নিতে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ফয়সাল আক্ষেপ করে  ফেসবুকে বলে বাসায় সবাই ভাত খাচ্ছে, পরিবারের একজন হওয়ার পরও ক্ষুধার্ত আপনাকে খেতে দেওয়া হচ্ছে না। কেমন লাগবে আপনার?

সোমবার মাদ্রাসায় প্রবেশ পত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা খবরের সত্যতা পায়। তখন তারা নির্বাক হয়ে পড়েন। এসময় এসব শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এমনটি হয়েছে। পরে তারা হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনিশ্চিতার বিষয়টি অবহিত করেন।

আবেদনের বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তার উননেছা শিউলী। তিনি বলেন, আবেদন পেয়ে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রদানের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে এ ব্যাপারে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিউল আজমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদত্ত তদন্ত করার বিষয়টি তিনি পেয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আবদুল্লাহ আল মাহমুদকে ফোন করেছেন। অধ্যক্ষ ঢাকাস্থ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে অবস্থান করছেন বলে তাকে জানিয়েছেন। অধ্যক্ষ ৫ শিক্ষার্থীর প্রবেশ পত্র সংগ্রহ করতে মাদ্রাসার শিক্ষা বোর্ডে প্রচেষ্ঠা চালাচ্ছে বলেও তাকে জানান।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ’র মুঠোফোনে যোগাযোগে করা হলেও তিনি ভুল হয়ে গেছে বলে স্বীকার করে ভুলের জন্য অফিস সহকারীকে দায়ী করেন। এবং অধ্যক্ষ ৫ শিক্ষার্থীর প্রবেশ পত্র সংগ্রহ করতে মাদ্রাসার শিক্ষা বোর্ডে প্রচেষ্ঠা চালাচ্ছেন,  বর্তমানে তিনি অধ্যক্ষ ঢাকাস্থ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে অবস্থান করছেন।

৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের মো. আরিফ জানিয়েছেন, বেশ কিছু দিন থেকে তারা বাইরে থেকে শুনে আসছে তাদের ৫ জনের ফরম পূরণ যথাযথ হয়নি। বিষয়টি অধ্যক্ষ ও অফিস সহকারী জানার পর তাদের ফরম পূরণের ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় সে ক্ষোভ প্রকাশ করে। এ বিষয়ে কতৃর্পক্ষ তাদের কিছু তা বলে কাল ক্ষ্যপন করেছেন।

সবারই একটি প্রশ্ন মাদ্রাসার ভুলে ওদের একটি বছর কি শেষ হয়ে যাবে?