সংবাদ টাকা নিয়ে নম্বর দিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা শিক্ষক

0
87

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির আবশ্যিক ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষায় টাকার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের ৬০-৬৫ নম্বর পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ফেঁসে গেছেন যশোরের এক শিক্ষক। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেপ্তার করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

গ্রেপ্তার হওয়া ওই শিক্ষকের নাম আকবর আহমেদ। তিনি যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক। তাঁকে সহযোগিতা করার অভিযোগে একই কলেজের পিয়ন রউজুল ইসলামকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের (এম এম) উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ১১ শিক্ষার্থী ইংরেজিতে মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিয়েছেন। ওই পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে জীবনবৃত্তান্তের (সিভি) নমুনা লিখতে বলা হয়েছিল। এই ১১ শিক্ষার্থী সিভিতে তাঁদের আসল মোবাইল নম্বর দিয়েছিলেন।
ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক আকবর আহমেদের কাছে এই খাতা আসে। খাতায় মোবাইল নম্বর দেখে আকবর আহমেদ ছাত্রদের ফোন করে পাঁচ-ছয় হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি তাঁদের বলেন, টাকা না দিলে তাঁরা ফেল করবেন। টাকা দিলে ৬০ থেকে ৬৫ নম্বর পাবেন। আকবর সাতজনকে ফোন করে এমন কথা বলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগকারী সাত শিক্ষার্থী আকবর হোসেনের ফোন পেয়ে এম এম কলেজের অধ্যক্ষকে বিষয়টি জানান। অধ্যক্ষ জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে বিষয়টি অবহিত করেন। ওই শিক্ষার্থীরা আকবর আহমেদের সঙ্গে টাকা লেনদেনের যে কথোপকথন হয়েছে তাঁর অডিও সিডি জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দেন। জেলা প্রশাসকের পরামর্শে ছাত্ররা এ ঘটনায় বুধবার থানায় জিডি করেন।
এ প্রতারক চক্রকে ধরার জন্য দুজন বিচারিক হাকিম ছাত্র সেজে আকবর আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। টাকা লেনদেনের কথা পাকা হওয়ার পরই ছাত্র সেজে আজ সন্ধ্যা সাতটার দিকে ওই শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করতে যান তাঁরা। এ সময় দুটি পরীক্ষার খাতাও দেখান ওই শিক্ষক। পরে শিক্ষকসহ ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। খাতা দুটি উদ্ধার করা হয়েছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী হাকিম আবদুস সালাম। প্রতারক শিক্ষককে ধরার বর্ণনা দিয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষক প্রতারণা করে ছাত্রদের কাছ থেকে টাকা দাবি করেছে। মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
এদিকে গ্রেপ্তারের পর অভিযুক্ত শিক্ষক আকবর আহমেদকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রদের একজন লিখেছেন তাঁর ক্যানসার হয়েছে। সে অনুনয় বিনয় করে লিখেছে, তাঁকে যেন পাস করিয়ে দেওয়া হয়। সে কারণেই কয়েকজন ছাত্রকে ফোন করা হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
আপনি একজন শিক্ষক, এভাবে ফোন করতে পারেন কি না, এর উত্তরে আকবর আহমেদ বলেন, ‘আমার মাথায় শয়তান চেপেছিল।’