প্রতিবন্ধী শিক্ষার নিশ্চিত করার দাবী

0
262

প্রতিবন্ধী ১২০১০ সালে শিক্ষানীতি অনুযায়ী একীভূত শিক্ষা বাস্তবায়নে সকল ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বাধামুক্ত অংশগ্রহণের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত নতুন শিক্ষা ভবন নির্মাণকালে অনুসরণীয় বিষয়াদি শীর্ষক এক পরিপত্রে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীবান্ধব ব্যবস্থাপনার উল্লেখ না থাকায় ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংগঠনগুলোর মাঝে।

তাদের অভিযোগ সরকারের আন্তরিক সদিচ্ছা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব আইন প্রণীত হওয়া সত্বেও একীভূত নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যাপক অনীহা প্রকাশ পেয়েছে এই পরিপত্রে।

শিক্ষামন্ত্রণালয়ের এ নির্দেশনা প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবান্ধব করতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংগঠনের পরিষদ (পিএনএসপি) এবং বাংলাদেশ সোসাইটি ফর দ্যা চেঞ্জ অ্যাডভোকেসি নেক্সাস (বি-স্ক্যান) এর যৌথ উদ্যোগে আজ ২২ আগস্ট, ২০১৫ পিএনএসপি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘নতুন শিক্ষা ভবন নির্মাণে একীভূত নির্দেশনা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এই অভিযোগগুলো উঠে আসে।

আজ ডিপিও নেটওয়ার্ক পিএনএসপি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, সিআরপিডি শরীক রাষ্ট্র হিসেবে একীভূত সমাজ বিনির্মানে সংগতিপূর্ণ বন্দোবস্তসহ (রিজেন্যাবল একমোডেশন), সার্বজনীন পরিকল্পনার (ইউনিভার্সাল ডিজাইন) ভিত্তিতে সকল ভবন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব বা তাদের প্রবেশগমন উপযোগি করে তোলা সরকারের দায়িত্ব এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তি অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ ও প্রস্তাবিত জাতীয় ইমারত নিমার্ণ বিধিমালা-আইন ২০১৫ অনুযায়ী সকল ভবন ও স্থাপনা নির্মাণে সকল মানুষের প্রবেশগম্যতা ও ব্যবহার উপযোগীতা নিশ্চিতে কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা নেয়া না হলে এমন অবহেলাই প্রকাশ পাবে ভবিষ্যতেও।

সভার প্রধান অতিথি বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ জাতীয় ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০১৫ কনসালটেন্ট ড. জেবুন নাসরীন আহমেদ গণস্থাপনার নকশা অনুমোদন প্রদানকারী সংস্থাগুলোতে প্রবেশগম্যতা অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে ফোকাল পারসন হিসেবে নিয়োগ দেয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, রাজউক এবং সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান যারা স্থাপনার নকশা নিয়ে কাজ করেন এবং অনুমোদন দেন তারাই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব চাহিদা পূরণের বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। এছাড়াও প্রবেশগম্যতার আইন না মানার কারণে তিনি বেশ কিছু স্থাপনা এবং ভবনের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্যও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠনগুলোকে আহবান জানান।

শিক্ষা ভবনে প্রবেশগম্যতা শুধুমাত্র শারীরিক প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য নয় উল্লেখ করে পিএনএসপি এর সভাপতি এম ওসমান খালেদ বাংলা ইশারা ভাষায় তার বক্তব্য প্রদানকালে বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষ এবং শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী মানুষের জন্যেও ভবনে প্রবেশগম্যতা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। বিশেষত শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী মানুষের প্রবেশগম্যতা বিষয়টি অবহেলিত থেকে যায় সবক্ষেত্রেই।

বিশেষ অতিথি সুইড বাংলাদেশ এর সভাপতি জওহেরুল ইসলাম মামুন বলেন, শুধুমাত্র শিক্ষা মন্ত্রাণালয় নয়, অন্যান্য মন্ত্রাণালয়ের শিক্ষা সংক্রান্ত ভবনেও প্রবেশগম্যতার বিষয়ে পরিপত্র জারি করতে হবে। এছাড়াও সমাজকল্যাণ মন্ত্রাণলয়ের অধীন স্থাপনাগুলোতেও প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করার বিষয়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে। যেমন সমাজকল্যাণ মন্ত্রাণালয়ের অধীন ক্রীড়া কমপ্লেক্স।
এদিকে মতবিনিময়কালে স্থপতি সাঈদা সুলতানা এ্যানি জানান তিনি দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব প্রবেশগম্যতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ করছেন। অতীতে বাধাগ্রস্ত হয়েও থেমে পড়েন নি ভবিষ্যতেও চালিয়ে যাবেন। নতুন শিক্ষা ভবনগুলোকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীবান্ধব করার পিএনএসপি এর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি।

পিএনএসপি এর পরিচালক রফিক জামান তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ সংবিধানের শিক্ষার অধিকার ও বৈষম্য বিরোধী অবস্থান থেকে প্রতিবন্ধী মানুষের শিক্ষার সুযোগ এবং এই অবকাঠামোগত অবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।