ফিঞ্চ-ওয়ার্নার দেখালেন ব্যাটিং প্রদর্শনী

0
140

ফিঞ্চ-ওয়ার্নার দেখালেন ব্যাটিং প্রদর্শনী । বল হাতে ক্রিজে ঝড় তুললেন স্টার্ক-বেরেনডর্ফ। আর ম্যাচ শেষে জয় নিয়ে বাজিমাত অস্ট্রেলিয়ার। এবারের বিশ্বকাপে প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো অস্ট্রেলিয়া। গতকাল বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৬৪ রানে হারায় অজিরা। এতে আশা বাড়লো বাংলাদেশেরও। অন্যদিকে শঙ্কায় পড়লো স্বাগতিক ইংল্যান্ড। আসরে সাত ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চতুর্থ স্থানেই রয়েছে ইংলিশরা।
তবে সমান ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে ইংলিশদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে টাইগাররা। পয়েন্ট তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে পঞ্চম স্থানে। ৭ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে শিরোপাধারী অস্ট্রেলিয়া।
১৯৯২’র বিশ্বকাপের পর ক্রিকেটের এ মহাযজ্ঞে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এখনো জয়হীন ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপে অজিদের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের এটি টানা চতুর্থ হার। এর আগে ২০০৩, ২০০৭ ও ২০১৫ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হার দেখে ইংল্যান্ড। ইংলিশদের শেষ দুই ম্যাচ ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। বিশ্বকাপে এ দুই দলের বিপক্ষে শেষ ৮ ম্যাচে একবারও জয়ের দেখা পায়নি ইংলিশরা।
গতকাল লর্ডসে টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠান ইংল্যান্ড অধিনায়ক এউইন মরগান। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের সেঞ্চুরি ও অপর ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের অর্ধশতকে ভর করে ইংল্যান্ড ২৮৬ রানের চ্যালেঞ্জিং টার্গেট দেয় অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ৩২ বল বাকি রেখে ২২১ রানে গুঁড়িয়ে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। একমাত্র অর্ধশতকে ৮৯ রানের ইনিংস খেলেন পাঁচ নম্বর ব্যাটসম্যান বেন স্টোকস। অস্ট্রেলিয়ার বল হাতে ১০ ওভারের স্পেলে ৪৪ রানে পাঁচ উইকেট নেন পেসার জেসন বেরেনডর্ফ। অপর পেসার মিচেল স্টার্ক চার ও মার্কাস স্টইনিস নেন এক উইকেট। আসরে ১৯ উইকেট নিয়ে সবচেয়ে বেশি শিকার স্টার্কেরই। ইংলিশ পেসার জফরা আর্চারের শিকার দ্বিতীয় সর্বাধিক ১৬ উইকেট।
ব্যাট হাতে ২৮৬ রানের টার্গেটে শুরুতেই ধাক্কা খায় ইংলিশরা। ইনিংসের মাত্র দ্বিতীয় বলে বেরেনডর্ফের ইনসুইংগারে উইকেট খোয়ান জেমস ভিন্স। জেসন রয়ের ইনজুরিতে একাদশে সুযোগ পাওয়া ভিন্সের তিন ইনিংসে সংগ্রহ ২৬, ১৪ ও ০। আসরে ইংল্যান্ডের ব্যাট হাতে জোড়া সেঞ্চুরি পাওয়া জো রুটও সাজঘরে ফিরেন তড়িঘড়ি। দলীয় ১৫ রানে রুট এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন স্টার্কের ইনসুইংগারে। ৫.৫তম ওভারে দলীয় ২৬ রানে স্টার্কের বলে কামিন্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে দলকে শঙ্কায় ফেলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক এউইন মরগান। আর ১৩.৫তম ওভারে বেরেনডর্ফকে উইকেট দিয়ে জনি বেয়ারস্টো সাজঘরে ফিরলে ঘাঢ় হয় ইংলিশদের শঙ্কা। ১৪ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫৪/৪-এ। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ইনিংস সামাল দেন বেন স্টোকস ও জস বাটলার। এ দুজন গড়েন ৮১ রানের জুটি। তবে অজিদের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই এ জুটি ভাঙেন অস্ট্রেলিয়ার পঞ্চম বোলার স্টইনিস। ব্যক্তিগত ২৫ রানে উসমান খাজার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন বাটলার। তবে ব্যাটে ইংলিশদের আশা ধরে রেখেছিলেন বেন স্টোকস। কিন্তু আসরের সেরা এক ডেলিভারিতে উইকেট খোয়ান এ মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান। এতে ম্যাচে ইংল্যান্ডের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। মিচেল স্টার্কের ভয়ঙ্কর এক ইয়র্কার উপড়ে নেয় স্টোকসের উইকেট। পরে নিচের দিকের দুই ব্যাটসম্যান ক্রিস ওকস (২৬) ও আদিল রশিদ (২৫) লড়াই করলেও বড় হারই দেখে ইংল্যান্ড।
এর আগে দুই ওপেনার ফিঞ্চ-ওয়ার্নারের নৈপুণ্যে লড়াইয়ের পুজি পাঁয় অস্ট্রেলিয়া। অ্যারন ফিঞ্চ সেঞ্চুরি ও ডেভিড ওয়ার্নার হাঁকান হাফসেঞ্চুরি। লর্ডস মাঠে ইনিংসের ৩২ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ১৭৩/১। তখন মনে হচ্ছিল ৩০০ পার করা স্কোরের দিকেই এগোচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ইনিংসের দ্বিতীয় ভাগে ইংলিশ বোলাররা ম্যাচে ফেরেন দারুণভাবে। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে অস্ট্রেলিয়াকে ৭ উইকেটে ২৮৫ রানে বেঁধে ফেলে ইংল্যান্ড। ৪০ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ২১৫/৪। তবে শেষ ১০ ওভারে তিন উইকেট খুইয়ে স্কোর বোর্ডে ৭০ রান যোগ করে অজিরা। শেষ দুই ওভারে ২২ রানের সুবাদে শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ের পুঁজি পায় অস্ট্রেলিয়া। শেষ দিকে উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারি করেন ২৭ বলে ৩৮ রান। ইংল্যান্ডের বল হাতে ১০ ওভারের স্পেলে ৪৬ রানে দুই উইকেট নেন পেসার ক্রিস ওকস। আর্চার, মার্ক উড, স্টোকস ও অফিস্পনার মঈন আলী নেন একটি করে উইকেট।