ফিরে দেখা ২০১৪ : আলোচিত দশম সংসদ নির্বাচন

0
113

রাজনৈতিক মতানৈক্য এবং বিরোধীদলের হরতাল-অবরোধের মধ্যে দেশে দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৫ জানুয়ারি ২০১৪। এই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ আখ্যায়িত করে তা প্রতিহত করার হুমকি দিয়েছিল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দল। ভোট ঠেকাতে সারাদেশে হরতালের মধ্যে শতাধিক কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ হয়েছিল; পোড়ানো হয়েছিল ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জামও। অন্যদিকে গণতন্ত্র ‘সমুন্নত’ রাখতে ভোট দেয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।
ফলশ্রুতিতে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালী ও সীতাকুন্ড সহ বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি-জামায়াতের সাথে পুলিশ-আ. লীগের সংঘর্ষ হয়েছিল। হামলায় উভয় পক্ষের বহু আহত হয়েছিল।

বছরজুড়েই বেশ আলোচনা-সমালোচনায় ছিল ৫জানুয়ারির ইলেকশান।

এ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত যাঁরা
চট্টগ্রামের ৭টি সংসদীয় আসনের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে এই আসনের ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। এই ৭ আসন হল-চট্টগ্রাম-১ মিরসরাই, চট্টগ্রাম-৫ হাটহাজারী, চট্টগ্রাম-৬ রাউজান, চট্টগ্রাম-৭ রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম-৮ চান্দগাঁও-বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম-১০ ডবলমুরিং-পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম-১৪ চন্দনাইশ।
চট্টগ্রাম-১ মিরসরাই আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, চট্টগ্রাম-৫ হাটহাজারী আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নির্বাচনকালীন সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, চট্টগ্রাম-৬ রাউজান আসন থেকে আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, চট্টগ্রাম-৭ আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ,চট্টগ্রাম-৮ চান্দগাঁও-বোয়ালখালী আসন থেকে জাসদের মাঈন উদ্দিন খান বাদল এমপি,চট্টগ্রাম-১০ ডবলমুরিং-পাহাড়তলী আসন থেকে নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা.আফছারুল আমীন এমপি এবং চট্টগ্রাম-১৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম চৌধুরী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

একনজরে চট্টগ্রামে নির্বাচন
চট্টগ্রামে আসন ১৬টি। ৭ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। নির্বাচন হয়েছিল ৯ আসনে। প্রার্থী সংখ্যা ২৩। এ নয় আসনে ভোটার ২৮ লাখ ২৮ হাজার ৩২ জন। ভোটকেন্দ্র ১ হাজার ৪৪ টি, বুথ ৫ হাজার ৫৮৩টি। ভোট গ্রহণের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন ১৮ হাজার ৬৮১জন কর্মকর্তা। মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৫ হাজার সদস্য। ফটিকছড়ি আসনে ভোটার তিন লাখ ২৬ হাজার ১১৪ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন দুইজন।
যে ৯ আসনে নির্বাচন হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে সন্দ্বীপ আসনে ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৭৬ হাজার ৮৭২। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৭৯ এবং ভোট কক্ষের সংখ্যা ৩৬০। এই আসনে তিন প্রার্থীর মধ্যে জাসদের প্রার্থী নির্বাচন বয়কট করেছিলেন।
সীতাকুণ্ড আসনে ভোটার তিন লাখ ৫০ লাখ ৮৯। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১০৩, ভোট কক্ষের সংখ্যা ৬৭৪। প্রার্থী সংখ্যা ৪ জন।
কোতোয়ালি আসনে ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৬২ হাজার ৪৯৭। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৪৩টি এবং ভোট কক্ষের সংখ্যা ৬৮০টি। প্রার্থী ৪ জন।
বন্দর-পতেঙ্গা আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৯। ভোট কেন্দ্র ১৪২টি এবং ভোট কক্ষের সংখ্যা নয়শ। প্রার্থী তিন জনের মধ্যে জাসদের প্রার্থী নির্বাচনী মাঠ থেকে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সরে দাঁড়িয়েছিল।

পটিয়া আসনে ভোটার দুই লাখ ৫০ হাজার ৫। ভোট কেন্দ্র ৯৯টি এবং ভোট কক্ষ ৫২৬টি। প্রার্থী দুইজন।
আনোয়ারা আসনে ভোটার দুই লাখ ৭২ হাজার ৭৮৭। ভোট কেন্দ্র ৯৭টি এবং ভোট কক্ষ ৫৭৫টি। মোট প্রার্থী তিনজন।
সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনে ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৩৬ হাজার ১২২ জন। ভোট কেন্দ্র ১৩৯টি এবং ভোট কক্ষ ৭১৬টি। প্রার্থী ২ জন।
বাঁশখালী আসনে ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৬৮ হাজার ৫৬৭। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১১০টি এবং ভোট কক্ষের সংখ্যা ৫৫৫টি। প্রার্থী ছিল দুইজন।