‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ অবিচ্ছেদ্য সত্য’

0
65

ঠাঁই নাইজাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাৎ দিবস ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর চেতনাদীপ্ত বাংলায়, জঙ্গীবাদের ঠাঁই নাই’-শীর্ষক আলোচনায় মূল প্রবন্ধে বঙ্গবন্ধু স্মারক গ্রন্থের সম্পাদক তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা লেখক-সাংবাদিক শওকত বাঙালি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ অবিচ্ছেদ্য সত্য। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন বিশ্লেষণ করলে বারংবার শুধু একই সত্য প্রমাণিত হয়-তিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সৃষ্টি ও সৃজনশীলতার কারিগর, সে কারণেই বঙ্গবন্ধু অনন্য ও অতুলনীয় উচ্চারণ, অবহেলিত জনগণের মুক্তি প্রতিষ্ঠার অবিস্মরণীয় এক অবলম্বন। তাঁকে হত্যা করে ঘাতকরা একটি জাতিকে দিশেহারা করলো, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ভূলুণ্ঠিত করলো, আমাদেরকে আলো থেকে অন্ধকারের পথে ঠেলে দিলো। একই সঙ্গে আমরা আলোহীন হলাম, আমাদের সংবিধান কলুষিত হলো, মুক্তিযুদ্ধের অর্জিত রাষ্ট্রীয় ভাবনাগুলোয় হস্তক্ষেপ হলো অযাচিতভাবে। তিনি অপরিহার্য ছিলেন বাঙালির জন্য, রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠার জন্য, আমাদের ভূ-খন্ডের মুক্তির জন্য।
তিনি আরো বলেন, সে কারণেই দীর্ঘ ৪১ বছর পরও বঙ্গবন্ধু আরো বেশি অমর, আরো বেশি সজীব বাঙালির মেধা ও মননে। তাই জঙ্গীবাদসহ মানবসৃষ্ট যে কোন সঙ্কট মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে আমাদের অবলম্বন হিসেবে ধরে নিতে হবে। বাঙালির চরম সঙ্কট মুহূর্তে এই মহামানবের চেতনাতেই আমাদের মুক্তির পথরেখা নির্মিত হবে।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় দৈনিক আজাদীর ৪র্থ তলায় পরিষদ সভাপতি মুহাম্মদ ওসমান গণি চৌধুরীর সভাপতিত্বে শওকত বাঙালি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন।
আয়োজনে প্রধান আলোচক ছিলেন সংসদ সদস্য সাবিহা মূসা। প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার। পরিষদের কার্যকরী সভাপতি ফেরদৌস খান আলমগীরের সূচনা বক্তব্যের পর অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন-চসিক কাউন্সিলর আনজুমান আরা বেগম, আওয়ামী লীগ নেতা দীপংকর চৌধুরী কাজল, মুহাম্মদ মহসীন চৌধুরী, অধ্যাপক মুহাম্মদ মাসুম চৌধুরী, শিল্পী শওকত জাহান, হাসান মুরাদ চৌধুরী, এ.টি.এম শহীদুল্লাহ, আসাদুজ্জামান খান, মোস্তফা আনোয়ারুল ইসলাম, মোহাম্মদ জহির, জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী, মো. আমিনুল হক বাবু, জাহেদুর রহমান সোহেল, মো. আলী তালুকদার, মো. সাইদুল হুদা বাবু, মোহাম্মদ জোবায়ের, খালেদ হোসেন খান মাসুক, নেছার আহমদ, রেয়াজ মোহাম্মদ, অ্যাডভোকেট জুবাইদা ছরওয়ার চৌধুরী নিপা, অ্যাডভোকেট প্রকৃতি চৌধুরী ছোটন, পলটন দাশ, মানস বড়–য়া কাব্য, শোভন দেবনাথ, তারেক আজিজ, মো. খোরশেদুল আলম সোহান, মো. মিনহাজ উদ্দিন তানভীর, মো. মাসুদুর হাসান রানা, বাপ্পু দত্ত, নোবেল দে টিটুল প্রমুখ।
সভায় শোক সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী অনামিকা তালুকদার। কবিতায় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শিক্ষকনেতা ও আবৃত্তিশিল্পী অঞ্চল চৌধুরী।
প্রধান আলোচক সাবিহা মূসা বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষের ভালোবাসায় বেড়ে ওঠা প্রকৃত দুর্লভ নেতা, যে কারণেই তাঁকে স্বপরিবারে হত্যা করা কোন সাধারণ স্বাভাবিক ঘটনা ছিলনা। এটি ছিল পরিকল্পিত হত্যাকান্ড, উদ্দেশ্যমূলক প্রতিশোধ এবং রাষ্ট্রীয় আদর্শ বিলীন করে দেয়ার গভীর ষড়যন্ত্র।
প্রধান বক্তা ড. শিরীণ আখতার বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের আধুনিক জাতীয়তাবাদের একজন প্রবক্তা-ই নন বরং প্রতিষ্ঠাতা। তিনি নিজ শক্তি আত্মবিশ্বাস ও প্রবল দেশপ্রেমে সঞ্জাত নেতৃত্ব দিয়ে আধুনিক জাতীয়তাবাদের নতুন ইতিহাস গড়লেন, নিজেই সৃষ্টি করলেন নবতর ইতিহাস।
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ ওসমান গণি চৌধুরী বলেন, মুখ্যত বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন খাঁটি ফেডারেল পলিটিশিয়ান। সে কারণেই তাঁর রাজনৈতিক কর্মসূচি ও ধ্যান-ধারণা তাত্ত্বিক কাঠামোর সঙ্গে নিবিড় মাত্রায় সামঞ্জস্যপূর্ণ।
সভার শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন পরিষদ সহ-সভাপতি সৈয়দ মোরশেদ হোসেন।
শেষে ১৫ আগস্ট শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন পরিষদ সহ-সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ সিরাজুদ্দৌলা।